ঢাকায় মানহানির মামলায় হাই কোর্টে খালেদার জামিন

মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখ্যা নিয়ে ‘বিভ্রান্তিকর’ তথ্য এবং বঙ্গবন্ধুর অবদান নিয়ে ‘বিতর্কিত মন্তব্যের’ অভিযোগে ঢাকার একটি মানহানির মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে ছয় মাসের জামিন দিয়েছে হাই কোর্ট।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 August 2018, 08:04 AM
Updated : 14 August 2018, 08:04 AM

খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনের শুনানি করে বিচারপতি মুহাম্মদ আবদুল হাফিজ ও বিচারপতি কাশেফা হোসেনের হাই কোর্ট বেঞ্চ মঙ্গলবার এ আদেশ দেয়।

আদালতে খালেদার পক্ষে শুনানি করেন এ জে মোহাম্মদ আলী। তার সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী জয়নুল আবেদীন ও কায়সার কামাল। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এম এ কামরুল হাসান খান আসলাম।

আইনজীবী কায়সার কামাল পরে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত গত ৭ অগাস্ট এ মামলায় জামিন নামঞ্জুর করলে সোমবার হাই কোর্টে জামিন আবেদন করা হয়েছিল। আজ শুনানি নিয়ে আদালত ছয় মাসের জামিন দিয়েছে।”

২০১৫ সালের ডিসেম্বরে খালেদা জিয়ার এক মন্তব্যের সূত্র ধরে ২০১৬ সালের ৫ জানুয়ারি ঢাকার হাকিম আদালতে এ মামলা দায়ের করেন জননেত্রী পরিষদের সভাপতি এ বি সিদ্দিকী।

রাজধানীর রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের এক আলোচনা সভায় ওই বক্তব্যে মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছিলেন খালেদা জিয়া।

তিনি সেদিন বলেন, “আজকে বলা হয়, এতো লক্ষ লোক শহীদ হয়েছেন। এটা নিয়েও অনেক বিতর্ক আছে যে আসলে কত লক্ষ লোক মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হয়েছেন। নানা বই-কিতাবে নানারকম তথ্য আছে।”

একাত্তরে আওয়ামী লীগ ‘স্বাধীনতা’ নয়, ‘ক্ষমতা’ চেয়েছিল দাবি করে ওই সভায় বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, “তিনি (জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান) পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে চেয়েছিলেন, স্বাধীন বাংলাদেশ চাননি।”

মামলায় আর্জিতে এ বি সিদ্দিকী অভিযোগ করেন, “যেহেতু ওই বক্তব্যে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের নিয়ে কটাক্ষ করা হয়েছে, স্বাধীনতা যুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর অবদান এবং ভূমিকাকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছে। তাই এ ধরনের বক্তব্যে বিএনপির চেয়ারপরসন খালেদা জিয়া দণ্ডবিধির ৫০০ ধারা অনুযায়ী অপরাধ করেছেন।”

বিচারিক আদালত গত ৭ অগাস্ট খালেদা জিয়ার আবেদন নামঞ্জুর করে আদেশে বলেছিল, “আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা পেন্ডিং আছে। তিনি এখনও এ মামলায় গ্রেপ্তার হননি। এ অবস্থায় আসামিপক্ষের জামিন শুনানির আবেদনটি রক্ষণীয় নয় বিধায় নামঞ্জুর করা হল।”

এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় পাঁচ বছরের সাজার রায়ের পর গত ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে কারাগারে আছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। ওই মামলায় তিনি জামিন পেলেও অন্য মামলায় গ্রেপ্তার থাকায় তার মুক্তি হচ্ছে না।

খালেদা জিয়ার অন্যতম আইনজীবী এ কে এম এহসানুর রহমান বলেন, এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা ছাড়াও বিএনপি চেয়ারপারসনের বিরুদ্ধে আরও ৩৪টি মামলার তথ্য আছে তাদের কাছে। এর মধ্যে ৩২টিতে তিনি জামিন পেয়েছেন, বাকি আছে দুটি।