তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান চালাচ্ছে দাবি করে তিনি আরও বলেছেন, এক্ষেত্রে অপরাধী কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।
মাদক নির্মূলে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের পর গত চার দিনে দেশজুড়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে গুলিবিদ্ধ হয়ে অন্তত ২৫ জনের মৃত্যু ঘটে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দাবি, অভিযানের সময় গুলির মুখে পড়ে তারা পাল্টা গুলি চালানোয় হতাহতের ঘটনা ঘটছে।
তবে বাহিনীগুলোর এই বক্তব্য নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামাল সোমবার এক অনুষ্ঠানে বলেন, রাষ্ট্রীয় বাহিনীকে দেওয়া বন্দুকের অপব্যবহার হচ্ছে কি না, তার তদন্ত হওয়া দরকার।
মঙ্গলবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তার অধীনস্ত বাহিনীর পক্ষে দাঁড়িয়ে বলেন, “আমাদের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যখনই হাই-প্রোফাইল মাদক ব্যবসায়ীদের ধরতে গেছেন, তারা হয় পালিয়েছেন, বা যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছেন।
“এই যুদ্ধে যখন লিপ্ত হয়েছে....পুলিশের উপর অ্যাটাক করলে কাউন্টার অ্যাটাক করার আইন আমাদের দেশে আত্মরক্ষার্থে রয়েছে। সেই ঘটনাটি ঘটে। কয়েকদিনে কয়েকটি এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে।”
তিনি বলেন, “আপনারা (সাংবাদিক) জানেন, মাদক যারা নিয়ন্ত্রণ করে তারা প্রভাবশালী, শক্তিশালী এবং তাদের কাছে আগ্নেয়াস্ত্র থেকে শুরু করে অবৈধ অস্ত্র সবই আছে।”
বন্দুকের ব্যবহার অপ্রয়োজনে হচ্ছে না বলে দাবি করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
“যারা আগ্নেয়াস্ত্র প্রদর্শন করছে বা গোলাগুলিতে লিপ্ত হচ্ছে, তারাই নিহত বা আহত হচ্ছে। আমরা তো দুই হাজারের বেশি মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করে কারাগারেও পাঠিয়েছি।”
পরিসংখ্যান তুলে ধরে তিনি বলেন, চলমান অভিযানে দুই হাজারের বেশি ‘মাদক বাহক ও ছোট ছোট মাদক বিক্রেতাকে’ ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অন্তত ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে বিভিন্ন সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিরুদ্ধে বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ দেশি-বিদেশি মানবাধিকার সংগঠনগুলো করলেও সেসব ক্ষেত্রেও বাহিনীগুলোর পক্ষেই ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
মাদকের বিরুদ্ধে চলমান অভিযানে দেশবাসীর সমর্থন চেয়ে তিনি বলেন, “২০২১ আর ২০৪১ সালের যে স্বপ্ন আমরা দেখছি। যদি মাদক নিয়ন্ত্রণে না আনতে পারি, তাহলে স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যাবে। সেজন্য সবাইকে মাদকের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছি, যুদ্ধ ঘোষণা করেছি।”
বেসরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী বাংলাদেশে মাদকসেবীদের অর্ধেকের বেশি ইয়াবায় আসক্ত।
ইয়াবার বিস্তারের জন্য মিয়ানমারের অসহযোগিতাকে দায়ী করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
তিনি বলেন, “ইয়াবা নামে মাদকটি কিছুতেই নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছিলাম না। মিয়ানমারও বলে যাচ্ছে, কিন্তু প্র্যাকটিক্যাল সহযোগিতা যেটা, সেটা তারা করছিল না। সেজন্য ইয়াবার বিস্তৃতি এভাবে ঘটেছে।”