পাটজাত পলিথিন ‘সোনালী ব্যাগ’ এর মালিকানা স্বত্ব বাংলাদেশের করে রাখতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া এবং বাণিজ্যিকভাবে এটি বাজারজাত করার জন্য একটি টাস্কফোর্স গঠনের সুপারিশ করেছে সংসদীয় কমিটি।
Published : 14 May 2018, 09:52 PM
সোমবার সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এই সুপারিশ করা হয় বলে সংসদ সচিবালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
বৈঠকে জুট মিলস করপোরেশন জানায়, এখন প্রতিদিন প্রায় তিন হাজার পাটজাত পলিথিন ব্যাগ তৈরি হচ্ছে। এগুলো ১৫ কেজি ধারণ ক্ষমতার।
কাঁচামাল, যন্ত্রপাতির অবচয়মূল্য, বিদ্যুৎ, কর্মকর্তাদের বেতন-ভাতা মিলিয়ে প্রতিটি ব্যাগের উৎপাদন খরচ পড়ছে ১২ টাকা ৯৩ পয়সা।
বাণিজ্যিক ভিত্তিতে এই ব্যাগ উৎপাদনের লক্ষে প্রতিদিন প্রায় পাঁচ লাখ করে ব্যাগ উৎপাদনের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
বাণিজ্যিকভিত্তিতে উৎপাদনে যাওয়ার পর ব্যাগের উৎপাদন খরচ কমে আসবে। সে ক্ষেত্রে প্রতিটি ব্যাগ উৎপাদনেন খরচ ৭-৮ টাকায় নেমে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।
পাটের আঁশ থেকে পলিমার তৈরির পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছেন বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশনের (বিজেএমসি) প্রধান বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা অধ্যাপক মোবারক আহমদ খান।
দুই দশক ধরে পাটের বাণিজ্যিক ব্যবহার নিয়ে গবেষণা করা এই বিজ্ঞানীকে ২০১৫ সালে বাংলাদেশ বিজ্ঞান একাডেমি স্বর্ণপদক দেয়।
২০০৯ সালে এই বিজ্ঞানী পাটের সঙ্গে পলিমারের মিশ্রণ ঘটিয়ে সাশ্রয়ী ঢেউটিন ‘জুটিন’ উদ্ভাবন করেন।
সংসদীয় কমিটির বৈঠকে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, সোনালী ব্যাগ তৈরির মূল উপাদান পাট, বায়েন্ডার ও বিভিন্ন রাসায়নিক দ্রব্য। প্রতি তিন কেজি পাট থেকে এক কেজি সেলুলোজ পাওয়া যায়।
প্রতি কেজি সেলুলোজ দিয়ে রাসায়নিক দ্রব্য সংমিশ্রণ করে বিভিন্ন বিক্রিয়ার মাধ্যমে ৩ কেজি মডিফাইড সেলুলোজ তৈরি করা হয়। এর সঙ্গে বাইন্ডার মিশ্রণ যোগ করে নির্দিষ্ট তাপমাত্রা ও চাপে বিক্রিয়া করা হয়। সেখান থেকে তৈরি করা হয় পাতলা ফ্লিম, যা দিয়ে এই পলিথিন তৈরি করা হচ্ছে।
সংসদীয় কমিটির বৈঠকে পাট চাষিদের প্রত্যাশা অনুযায়ী সমগ্র দেশের পাটচাষিদের একটি পূর্ণাঙ্গ ডাটাবেইজ তৈরির কাজ দ্রুত শেষ করার এবং চাষিদের প্রত্যাশা সম্পর্কে একটি গবেষণা প্রতিবেদন তৈরি করতে পাট অধিদপ্তরের কাছে সুপারিশ করা হয়।
কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরীর সভাপতিত্বে কমিটির সদস্য বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম, ফাহমী গোলন্দাজ, কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা ও সাবিনা আক্তার তুহিন বৈঠকে অংশ নেন।