তুরিনের ঘটনা তদন্তে ৩ বিচারপতির নেতৃত্বে কমিশন

যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর তুরিন আফরোজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সত্য কি না, তার তদন্তে তিন সদস্যের কমিশন গঠন করেছে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 May 2018, 12:46 PM
Updated : 12 May 2018, 03:13 PM

বেসরকারি এই তদন্ত কমিশনে থাকছেন বিচারপতি শামসুল হুদা, বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক ও বিচারপতি নিজামুল হক।

তুরিন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য। যুদ্ধাপরাধের আসামির সঙ্গে তার যোগাযোগের যে অভিযোগ উঠেছে, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে সংগঠনটির।

একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গত ২৪ এপ্রিল গ্রেপ্তার পাসপোর্ট অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক মুহাম্মদ ওয়াহিদুল হকের সঙ্গে গোপনে বৈঠক ও টেলিফোনে আলাপের অভিযোগ ওঠার পর তুরিনকে সব মামলা পরিচালনার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন প্রধান প্রসিকিউটর।

বিষয়টি নিয়ে আলোচনার মধ্যে শনিবার একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদ ও উপদেষ্টা পরিষদের এক যৌথসভায় তদন্ত কমিশন গঠনের সিদ্ধান্ত হয় বলে সংগঠনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, “অভিযোগের গুরুত্ব বিবেচনা করে এ বিষযে তদন্তের জন্য নির্মূল কমিটি সুপ্রিম কোর্টের তিনজন প্রাক্তন বিচারককে নিয়ে একটি তদন্ত কমিশন গঠন করেছে।”

তুরিন আফরোজ (ফাইল ছবি)

একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রশ্নবিদ্ধ করতে ইতোপূর্বে বিভিন্ন তৎপরতা চলার প্রেক্ষাপটে নির্মূল কমিটির নেতারা সন্দেহ করছে, তুরিনও ষড়যন্ত্রের শিকার হতে পারেন।

তাই তদন্ত শেষ হওয়ার আগে এ বিষয়ে আর কোনো সংবাদ যেন প্রকাশ বা প্রচার করা না হয়; সেজন্য ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির পক্ষ থেকে আহ্বান জানানো হয়েছে।

ওয়াহিদুল হকের সঙ্গে বৈঠকের খবর অস্বীকার না করলেও নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন তুরিন।

বর্তমানে কারাবন্দি ওয়াহিদুল হক (৬৯) জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) সাবেক মহাপরিচালক। একাত্তরে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সদস্য হিসেবে রংপুর ক্যান্টনমেন্টে চালানো গণহত্যায় সম্পৃক্ততার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। তুরিন আফরোজ এ মামলা পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছিলেন।

ওয়াহিদের সঙ্গে তুরিনের কথোপকথনের রেকর্ড ও বৈঠকের অডিওরেকর্ডসহ যাবতীয় তথ্য-প্রমাণ এরইমধ্যে আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে বলে একজন প্রসিকিউটর জানিয়েছেন।

তার কর্মকাণ্ড সম্পর্কে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ অবহিত ছিলেন বলে তুরিন দাবি করলেও ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার জ্যেষ্ঠ সমন্বয়ক সানাউল হক বলেছেন, এ বিষয়ে কিছু জানতেন না তারা।

প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুমও বলেছেন, বিষয়টি নিয়ে প্রসিকিউশনের কোনো ধারণা ছিল না।