বাল্যবিয়ে নিরোধ আইনের ‘বিশেষ শর্ত’ বাতিল চেয়ে মানববন্ধন

বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন ২০১৬ -এর খসড়ায় ‘বিশেষ প্রেক্ষাপটে’ মেয়েদের বিয়ের বয়স ১৮ বছরের কম করার বিশেষ ধারা বাতিলের দাবিতে রাজধানীতে মানববন্ধন ও সমাবেশ হয়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 Nov 2016, 05:23 PM
Updated : 29 Nov 2016, 05:23 PM

মঙ্গলবার বিকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনের এই সমাবেশে ব্র্যাক, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন, নারীপক্ষ, অ্যাকশন এইডসহ বিভিন্ন উন্নয়ন ও মানবাধিকার সংগঠনের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

সেখানে বক্তারা মন্ত্রিপরিষদ অনুমোদিত খসড়া বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন ২০১৬-এ সংযুক্ত বিশেষ ধারা বাতিল করে মেয়েদের বিয়ের বয়স শর্তহীনভাবে ১৮ রাখার দাবি জানান।

‘কোনোভাবেই’ মেয়েদের বিয়ের ন্যূনতম বয়স না কমানোর দাবির মধ‌্যে গত ২৪ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন- ২০১৬’ এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়।

এতে বিয়ের জন্য আগের মতই মেয়েদের ক্ষেত্রে কমপক্ষে ১৮ বছর এবং ছেলেদের ২১ বছর বয়স হওয়ার শর্ত রাখা হলেও ‘বিশেষ প্রেক্ষাপটে’ আদালতের নির্দেশনা নিয়ে এবং বাবা-মায়ের সমর্থনে অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েদেরও বিয়ের সুযোগ রাখা হয়।

আইনের ১৯ ধারায় বলা হয়, ‘এই আইনের অন্যান্য বিধানে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কোনো বিশেষ প্রেক্ষাপটে অপ্রাপ্তবয়স্ক কোনো নারীর সর্বোত্তম স্বার্থে, আদালতের নির্দেশনাক্রমে এবং মাতা-পিতার সম্মতিক্রমে বিধি দ্বারা নির্ধারিত প্রক্রিয়া অনুসরণক্রমে, বিবাহ সম্পাদিত হইলে উহা এই আইনের অধীন বলিয়া গণ্য হইবে না।’

এই ধারার ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করে সমাবেশে বক্তারা বলেন, তার মানে ‘আদালতের নির্দেশে এবং মা-বাবার সম্মতিতে’ কোনো শিশুরও বিয়ে হলে তা অনুমোদন পাবে।

বর্তমানে মেয়েদের বিয়ের বয়স ন্যূনতম ১৮ বছর নির্ধারিত থাকার পরও নানা কৌশলে কম বয়সী মেয়েদের বিয়ে দেওয়া হচ্ছে অভিযোগ করেএই খসড়া আইনের সুযোগ নিয়ে অপরিণত বয়সে বিয়ের হার আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করেন মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা।

তাদের ভাষ্য, একজন ১১-১২ বছরের কিশোরী গর্ভবতী হলে তাকে এই আইনের মাধ্যমে তথাকথিত সুরক্ষা দেওয়া হবে বলে নীতিনির্ধারকদের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে। এর মাধ্যমে শিশু-কিশোরীর প্রতি সংঘটিত যৌন নিপীড়নকে আইনসিদ্ধ করা হবে।

বক্তারা আরও বলেন, কোনো কিশোরী প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ দ্বারা গর্ভবতী হওয়া মানে সে ধর্ষণের শিকার। সে ক্ষেত্রে ধর্ষকের সঙ্গেই কিশোরীকে বিয়ে দেওয়া অগ্রহণযোগ্য।

বক্তা হিসেবে সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন ব্র্যাকের পরিচালক আন্না মিনজ, চিররঞ্জন সরকার, উইমেন ফর উইমেন-এর প্রেসিডেন্ট জাকিয়া হাসান এবং মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের পরিচালক রীনা খান।