দলভিত্তিক স্থানীয় সরকারের প্রথম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে সমর্থক ভোটারদের স্বাক্ষরসহ তালিকা জমার শর্ত নিয়ে বিভক্তি তৈরি হয়েছে নির্বাচন কমিশনে।
Published : 15 Aug 2016, 02:09 PM
কমিশনারদের একটি পক্ষ প্রার্থী হতে নির্দিষ্ট সংখ্যক সমর্থক ভোটারের স্বাক্ষর জমার শর্তটি বাদ দিতে চাইলেও আরেক পক্ষ চাইছে ‘ন্যূনতম সংখ্যায়’ হলেও স্বাক্ষর জমার বাধ্যবাধকতা রাখতে।
রোববার কমিশন সভায় স্থানীয় সরকার সিটি করপোরেশন আইনের আলোকে বিধি সংশোধনের খসড়া প্রস্তাব পর্যালোচনা করা হয়। নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ের পক্ষ থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে অন্তত ১০০০ ভোটারের সমর্থনসূচক স্বাক্ষর জমার প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয় সভায়।
ইসির আইন শাখার যুগ্ম সচিব মো. শাহজাহান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা ১০০০ সমর্থক ভোটারের তালিকা রাখার প্রস্তাব দিয়েছি। কেউ কেউ চাইছেন- ৫০০ বা ২০০ রাখতে; কেউ কেউ আবার শর্তটি বাদ দেওয়ার পক্ষে। বিষয়গুলো নিয়ে পরবর্তী কমিশন সভায় পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যাবে।”
তিনি জানান, দলীয় ভোট হওয়ায় দলের প্রতীকের পাশাপাশি স্বতন্ত্র প্রার্থীর নতুন প্রতীক রাখা ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ‘সমালোচিত’ কিছু প্রতীক বাদ দিয়ে নতুন প্রতীক রাখার বিষয়ে ঐক্যমত রয়েছে। প্রার্থীর সঙ্গে দলের ব্যয়সীমাও নির্ধারণ করা হবে।
স্থানীয় সরকারের সিটি, উপজেলা, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) ভোট দলীয়ভাবে করতে গত বছরের নভেম্বরে বিল পাস হয়। এরপর ডিসেম্বরে পৌরসভা ও চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি-জুন দলীয়ভাবে ইউপিতে ভোট হয়।
এ বছরই অন্তত দুই সিটিতে প্রথমবারের মতো দলীয় এই ভোট করতে চাইছে ইসি। এ লক্ষ্যে নির্বাচন বিধিমালা ও আচরণবিধিতে সংশোধনী লাগবে।
সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে বিধি সংশোধন শেষ করে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি শেষে নারায়ণগঞ্জ ও কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে হাত দিতে চায় ইসি।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষা শেষে তফসিল করে ডিসেম্বরের দ্বিতীয়ার্ধকে এই ভোটের উপযুক্ত সময় বিবেচনা করা হচ্ছে। সে লক্ষ্যে কাজ এগিয়েও নিচ্ছে নির্বাচন আয়োজনকারী সংস্থাটি।
ঢাকা উত্তর, দক্ষিণ, চট্টগ্রাম, গাজীপুরসহ অধিকাংশ সিটি করপোরেশনই ভোটার ও আয়তন বিবেচনায় কয়েকটি সংসদীয় আসনের সমান। এজন্য স্বতন্ত্র প্রার্থিতায় সামঞ্জস্য রাখার বিষয়টি বিবেচনায় নিতে হচ্ছে কমিশনকে।
দলভিত্তিক স্থানীয় সরকারের প্রথম এই নির্বাচনে পৌরসভায় মেয়র পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে ১০০ জনের সমর্থনসূচক স্বাক্ষর জমার শর্ত থাকলেও ইউপি চেয়ারম্যান পদে তা বাদ দেওয়া হয়।
আসন্ন সিটি নির্বাচনে এ শর্ত রাখা- না রাখা নিয়ে ইসি এখনও একমত হতে পারেনি বলে জানিয়েছেন একজন কমিশনার।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইসির ওই সদস্য বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা দুই জন বলেছি স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে শর্ত না দিলেই ভালো। আর দুই জন বলেছেন- ১০০০ নয়, ২০০-২৫০ জনের স্বাক্ষর রাখলেও চলে।
“সংসদে ১ শতাংশ থাকলেও স্থানীয় ভোটে তা করা যাবে না; আবার শর্ত বাদ দিলেও প্রার্থীর ছড়াছড়ি হবে।”
মঙ্গলবার বা তার পরের কমিশন সভায় এ নিয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্তে আসা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন তিনি।