তদন্তকারীদের সঙ্গে কথা ছাড়া প্রতিবেদন না করার অনুরোধ পুলিশের

গুলশানে জঙ্গি হামলার ঘটনা নিয়ে তদন্ত সংস্থার সঙ্গে কথা না বলে ‘কথিত অনুসন্ধানী প্রতিবেদন’ প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 August 2016, 10:45 AM
Updated : 7 August 2016, 03:44 PM

তিনি বলেছেন, এ ধরনের প্রতিবেদনে ভুল বোঝাবুঝি সৃষ্টির সুযোগ সৃষ্টি হতে পারে।

রোববার মহানগর পুলিশের গণমাধ্যম কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মনিরুল বলেন, এতে তদন্তকারী কর্মকর্তা স্বাধীন তদন্ত কাজে চাপ অনুভব করতে পারেন। ফলে তদন্ত বিঘ্নিত হতে পারে।

“কাজেই আমি অনুরোধ করব, তদন্তকারী কর্মকর্তা অথবা তদন্ত সংস্থার সঙ্গে আলোচনা না করে এই ধরনের কথিত অনুসন্ধানী রিপোর্ট প্রকাশ থেকে বিরত থাকবেন। তাদের শুভবুদ্ধির উদয় হোক, এটা আমরা আশা করব।”

গুলশান হামলার পর ২ জুলাই ভোরে গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারির ছাদে হাসনাত করিম ও তাহমিদ হাসিব খানের নতুন কয়েকটি ছবি সংবাদমাধ্যমে এসেছে, যেখানে আরেকজনকে দেখা যাচ্ছে, যাকে রোহান ইমতিয়াজ বলা হচ্ছে পত্রিকাগুলোতে। পরে কমান্ডো অভিযানে আরও পাঁচজনের সঙ্গে নিহত হন রোহান।  

ওই ঘটনায় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক হাসনাত এবং কানাডার বিশ্ববিদ‌্যালয় ছাত্র তাহমিদের ভূমিকা নিয়ে সূত্রের বরাত দিয়ে বিভিন্ন তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে এসব প্রতিবেদনে।

এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মনিরুল ইসলাম বলেন, হাসনাত করিম ও তাহমিদকে পুলিশ ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। রিমান্ড শেষ না হলে পূর্ণাঙ্গ তথ্য দেওয়া যাচ্ছে না।

তিনি বলেন, “হলি আর্টিজানের ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারিনি। এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।”

হাসনাত ও তাহমিদ ছাড়া আর কাউকে হলি অর্টিজানের ঘটনায় ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার করা হয়নি বলেও জানান মনিরুল।

হাসনাত ও অস্ত্র হাতে তাহমিদের যে ছবি গণমাধ্যমে এসেছে, সে বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন,  “তারা রিমান্ডে আছে, জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আপনাদের স্পষ্টভাবে এই বিষয়গুলো জানাব। কী পরিস্থিতিতে তাদের হাতে অস্ত্র উঠল... এগুলো জানার জন্যই জিজ্ঞাসাবাদ করা।

“জিজ্ঞাসাবাদ শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাদের সম্পৃক্ততার বিষয়টি নিশ্চিত করা যাবে না।”

তদন্ত সংস্থার কাছে যদি তাদের এ মামলায় জড়িত বলে মনে হয়, সেক্ষেত্রে তাদের এ মামলায়ও গ্রেপ্তার দেখানো হবে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।

“যে সমস্ত পুলিশ সদস্য সেখানে প্রথমেই হাজির হয়েছিল তাদেরকেও আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। ইন্টারভিউ হচ্ছে, অসংখ্য মানুষের ইন্টারভিউ হচ্ছে। সুনির্দিষ্টভাবে বলাটা এই মুহূর্তে সম্ভব নয় যে ঠিক কত মানুষকে আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করেছি।”

প্রকাশিত ছবির সত্যতা কতটুকু- এ প্রশ্নের জবাবে মনিরুল জানান, “প্রযুক্তির যুগে অনেক কিছুই করা সম্ভব। তবে এ ধরনের ছবি যদি আর কারও কাছে থাকে, তাহলে সেগুলো তদন্ত সংস্থার কাছে সরবরাহ করার জন্য অনুরোধ রইল। আমরা অনেক ছবি পেয়েছি যেগুলো পর্যালোচনা করা হচ্ছে।”

তদন্তে ‘অনেক দূর’ এগিয়েছেন দাবি করে মনিরুল বলেন, “এখন কারা জড়িত, কারা জড়িত নয়, কার কোন ধরনের ভূমিকা- এসংক্রান্ত অনেক তথ্যই আমাদের হাতে এসে পৌঁছেছে। তদন্ত শেষ হয়নি, গ্রেপ্তার অভিযানও শেষ হয়নি। অভিযান চলছে আর কিছু ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা গেলে পূর্ণাঙ্গ তথ্য প্রকাশ করতে পারব।” 

তিনি বলেন, হলি আর্টিজানের ঘটনায় অর্থের জোগানদাতা, অস্ত্রের সম্ভাব্য সরবরাহকারী এবং প্রশিক্ষণদাতা সংক্রান্ত অনেক তথ্যই তাদের হাতে এসেছে।