কয়েক দফা পেছানোর পর অবশেষে ঢাকার বিমানবন্দর এলাকা থেকে কুতুবখালী পর্যন্ত প্রায় ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের (উড়াল সড়ক) নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে।
Published : 16 Aug 2015, 01:54 PM
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের রোববার সকালে বিমানবন্দর সড়কের কাওলা এলাকায় এ কাজের উদ্বোধন করেন।
পরে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “২০১৮ সালে মাননীয় প্র্রধানমন্ত্রী পদ্মা সেতু উদ্বোধন করবেন। একই সময়ে এই এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজও শেষ হবে। আশা করি, একসঙ্গে এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়েরও উদ্বোধন করতে পারব।”
সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে (পিপিপি) এই উড়াল সড়ক নির্মাণে ব্যায় ধরা হয়েছে ৮ হাজার ৯৪০ কোটি ১৮ লাখ টাকা। নির্মাণের দায়িত্বে রয়েছে থাইল্যান্ডের প্রতিষ্ঠান ইতাল-থাই ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড।
সেতু কর্তৃপক্ষের অধীনে বাস্তবায়নাধীন এই প্রকল্পে ভূমি অধিগ্রহণ ও ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনসহ অন্যান্য খাতে ব্যয় হবে ২ হাজার ৪১৩ কোটি ৮৪ লাখ টাকা।
সেতু বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে কুড়িল, মহাখালী, তেজগাঁও হয়ে ঢাকা– চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী পর্যন্ত এই এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের দৈর্ঘ হবে ১৯.৭৩ কিলোমিটার। তবে ৩১টি র্যাম্প ও সংযোগ সড়কসহ এর মোট দৈর্ঘ্য ৪৬.৭৩ কিলোমিটার হবে।
২০১১ সালের ১৯ জানুয়ারি এ প্রকল্পের প্রথম চুক্তি হয়। একই বছর ৪ এপ্রিল করা হয় ভিত্তিস্থাপন। এরপর ৩০ এপ্রিলে প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তবে নকশা পরিবর্তন ও মূল্যস্ফীতির কারণে প্রকল্প ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় ২০১৩ সালের ১৫ ডিসেম্বর ইতাল-থাইয়ের সঙ্গে নতুন করে চুক্তি করে সেতু বিভাগ।
নতুন চুক্তির পর গত বছর ৩০ অক্টোবর নির্মাণ কাজ পুনরায় উদ্বোধন করেন মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। নির্মাণ কাজ শুরুর জন্য দুই দফা সময় রাখা হলেও অগাস্টের মাঝামাঝি এসে শেষ পর্যন্ত সেই কাজ শুরু হল।
কাজ শুরু করতে দেরি এবং ব্যয় বৃদ্ধি প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের উত্তরে সংবাদ সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের বলেন, “জমি অধিগ্রহণ সংক্রান্ত জটিলতায় দেরি হয়েছে। এ কারণে ব্যয়ও বৃদ্ধি পেয়েছে। এখন থেকে কাজ দ্রুতই সম্পন্ন হবে।”
ওবায়দুল কাদের জানান, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের জন্য এরই মধ্যে ২০৫ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ব্যক্তিমালিকানাধীন জমির পরিমাণ ২৯ একর। বাকি ১৭৬ একর সরকারি জমি।
“সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে প্রকল্পের প্রথম ধাপের ইউটিলিটি লাইন ও স্থাপনা অপসারণের কাজ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধাপের কাজ চলমান আছে, যা আগামী জুনের মধ্যে সম্পন্ন হবে।”
প্রথম ধাপে প্রকল্প এলাকায় ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কাজও ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে বলে জানান মন্ত্রী।
তিনি বলেন, “পুরো প্রকল্পে ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের জন্য উত্তরা তৃতীয় ফেজ সংলগ্ন এলাকায় ৪০ একর জমির উন্নয়ন কাজ চলছে। সেখানে বহুতল ভবন নির্মাণ করে প্রাপ্যতা অনুযায়ী ক্ষতিগ্রস্তদের অ্যাপার্টমেন্ট বরাদ্দ দেওয়া হবে।”
অন্যদের মধ্যে সেতু বিভাগের সচিব খন্দকার আনওয়ারুল ইসলাম, ইতাল-থাই ডেভেলপমেন্ট কোম্পানির প্রেসিডেন্ট প্রেমচাই কর্নসুতা-সহ সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয় এবং সেতু বিভাগের কর্মকর্তারা উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।