কারা হেফাজতে মারা যাওয়া আবুল বাশারের মৃত্যুর তদন্ত চেয়েছেন তার স্ত্রী।
Published : 21 Aug 2023, 07:52 PM
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি অবস্থায় এক বিএনপি নেতার মৃত্যু নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে তার পরিবার।
আবুল বাশার (৩৬) নামে ওই ব্যক্তি রমনা থানার ১৯ নং ওয়ার্ড বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক ছিলেন। ঢাকায় বিএনপির সমাবেশের দুদিন আগে গত ২৬ জুলাই তাকে গ্রেপ্তার করেছিল রমনা থানা পুলিশ। পরে তাকে কারাগারে পাঠান হয়।
বাশারের ‘স্ট্রোক হয়েছিল’ বলে কারা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। তাতে সন্দেহ প্রকাশ করে তার স্ত্রী বলছেন, তার স্বামী ছিলেন নিরোগ।
এদিকে রমনা থানা পুলিশ বলছে, গ্রেপ্তারের পর কাউকে নির্যাতন করা হয় না।
গত ২৮ ও ২৯ জুলাই বিএনপির সমাবেশ ও অবস্থান কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সারাদেশে ৪ শতাধিক ব্যক্তিকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে বলে দলটি জানায়। তার মধ্যে একজন বাশার।
সোমবার দুপুর সোয়া ২টায় কেরানীগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে বাশারকে অসুস্থ অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
কেরানীগঞ্জের জেল সুপার সুভাষ কুমার ঘোষ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “স্ট্রোক হওয়ার পর আবুল বাশারকে দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান হয়।”
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক মো, বাচ্চু মিয়া বলেন, হাজতি আবুল বাশারের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে রাখা হয়েছে।
আবুল বাশার কিশোরগঞ্জ কটিয়াদী উপজেলার অষ্ট গড়িয়া নয়া পাড়া গ্রামের আবু বক্কর সিদ্দিকের ছেলে। ঢাকার মালিবাগে চায়ের দোকান ছিল তার। ওই এলাকায় একটি বাসায় পরিবার নিয়ে ভাড়া থাকতেন তিনি। তার এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে।
বাশারের স্ত্রী সোমা বেগম হাসপাতালে সাংবাদিকদের বলেন, গত ২৬ জুলাই সন্ধ্যায় পশ্চিম মালিবাগের সাফেনা হাসপাতালের পাশ থেকে পুলিশ তাকে আটক করে।
“আমার স্বামী বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল। বিএনপির প্রোগ্রাম ছিল। এজন্য আগের দিন আরও অনেকের সঙ্গে তারেও ধরছিল পুলিশ।”
দুপুরে কারাগারে স্বামী অসুস্থ হয়ে পড়েন বলে খবর পান সোমা। তিনি বলেন, “দুপুরে তাকে কারাগার থেকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসে তারা (কারা কর্তৃপক্ষ)। তার নাকি ব্রেন স্ট্রোক করছে। পরে আমরা এইখানে আইসা আর জীবিত পাইনি।”
বাশারের মৃত্যু নিয়ে সন্দেহ পোষণ করে সোমা বলেন, “আমার স্বামী সুস্থ আছিল, তার তেমন কোনো অসুখ ছিল না। তাহলে কীভাবে মারা গেল সে? আমি এর সুষ্ঠু তদন্ত চাই, বিচার চাই।”
বাশারের মৃত্যুর খবর শুনে রমনা থানার পশ্চিম মালিবাগ ইউনিট বিএনপির সভাপতি লিটন হোসেন ঢাকা মেডিকেলে উপস্থিত হন।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, বাশার ১৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক এবং পশ্চিম মালিবাগ ইউনিটের সম্পাদক ছিলেন।
বাশারকে রমনা থানা পুলিশ ধরে নিয়েছিল বলে জানান লিটন।
বাশারকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে জানতে চাইলে রমনা থানার ওসি আবুল হাসান এই নামে কাউকে গ্রেপ্তারের বিষয় তাৎক্ষণিকভাবে কিছু বলতে পারেননি।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের জিজ্ঞাসায় তিনি বলেন, “আটক করা কোনো আসামিকে মারধর করা হয় না।”