আত্মপক্ষ সমর্থনে আদালতে যাচ্ছেন ড. ইউনূস

আত্মপক্ষ সমর্থনে সশরীরে হাজির থাকার নিয়মের কারণে ড. ইউনূস আদালতে উপস্থিত হবেন বলে জানান তার আইনজীবী।

আদালত প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Nov 2023, 01:20 PM
Updated : 8 Nov 2023, 01:20 PM

শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থনে বৃহস্পতিবার ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে হাজির হবেন গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান, নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসসহ চারজন।

ইউনূসের আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুল্লাহ আল মামুন বুধবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এ মামলায় স্থায়ী জামিনে আছেন এই অর্থনীতিবিদ। তার ব্যক্তিগত হাজিরাও মওকুফ রয়েছে। তবে আত্মপক্ষ সমর্থনে সশরীরে হাজির হওয়ার নিয়মের কারণে তারা আদালতে যাবেন।”

মামুন বলেন, “অবরোধের মধ্যেই তিনি আদালতে যাবেন। এমনিতে তিনি আইনজীবীর মাধ্যমে ফৌজদারি কার্যবিধির ২০৫ ধারায় বাই এজেন্ট হাজিরা দিয়ে থাকেন।”

মামলায় ডা. ইউনূস কোনো সাফাই সাক্ষী হাজির করবেন কিনা, সেটি স্থির হয়নি বলে জানান এই আইনজীবী। তার ভাষ্য, “এ ব্যাপারে এজলাসে যেয়ে দেখে-শুনে-বুঝে আমরা সিদ্ধান্ত নেব।”

কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের শ্রম পরিদর্শক আরিফুজ্জামান ২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে এ মামলা করেন।

অপর আসামিরা হলেন- গ্রামীণ টেলিকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আশরাফুল হাসান এবং দুই পরিচালক নুরজাহান বেগম ও মো. শাহজাহান।

মামলাটিতে এরই মধ্যে চারজনের সাক্ষ্য ও জেরা শেষ হয়েছে। গত ১১ অক্টোবর মামলার বাদী এবং প্রথম সাক্ষীর সাক্ষ্য নেওয়া হয়। পর্যায়ক্রমে গত ৬ নভেম্বর চতুর্থ সাক্ষীর সাক্ষ্য নেওয়া শেষ হয়েছে বলে জানান ইউনূসের আইনজীবী মামুন।

এ মামলায় কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী সৈয়দ হায়দার আলী ও মো. খুরশীদ আলম খান। ড. ইউনূসসহ চারজনের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী আবদুল্লাহ আল মামুন ও ব্যারিস্টার খাজা তানভীর আহমেদ।

আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, “আমাদের বাদীপক্ষের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। ৯ নভেম্বর ড. ইউনূসসহ চারজন আসামির আত্মপক্ষ সমর্থনের দিন ঠিক করা হয়েছে। এদিন ইউনূসকে আদালতে আসতে হবে। কারণ, গত ৬ নভেম্বর থেকে তার জামিন অকার্যকর হয়ে গেছে।”

ইউনূসের বিরুদ্ধে এ মামলায় শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনে নির্দিষ্ট লভ্যাংশ জমা না দেওয়া, শ্রমিকদের চাকরি স্থায়ী না করা, গণছুটি নগদায়ন না করায় শ্রম আইনের ৪-এর ৭, ৮, ১১৭ ও ২৩৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়।

পরে ওই মামলার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টে আবেদন করা হয়। সেই আবেদনে ইউনূসের বিরুদ্ধে মামলার কার্যক্রম ছয় মাসের জন্য স্থগিত করে আদালত। একইসঙ্গে মামলা কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়।

এরপর রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে আপিল বিভাগ ২০২২ সালের ১৩ জুন দুই মাসের মধ্যে রুল নিষ্পত্তি করতে হাই কোর্টকে নির্দেশ দেয়।

বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান ও বিচারপতি ফাহমিদা কাদেরের হাই কোর্ট শুনানি করে ২০২২ সালের গত ১৭ অগাস্ট রুল খারিজ করে রায় দেয়। ফলে ইউনূসের মামলা বাতিলের আবেদন খারিজ হয়ে যায়।

হাই কোর্টের ওই রায় স্থগিত চেয়ে এরপর আপিল বিভাগে আবেদন করেন ইউনূস। গত ৩ এপ্রিল এ বিষয়ে শুনানি শেষে ৮ মে সিদ্ধান্ত দেয় সর্বোচ্চ আদালত।

আরও পড়ুন-

Also Read: ইউনূসের বিরুদ্ধে শ্রম আদালতে মামলা চলবে

Also Read: শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় ইউনূসের বিচার শুরু