“আমার সফরের লক্ষ্য হল, চীন ও বাংলাদেশের সম্পর্ক আরও দৃঢ় করা”, বলেন ইউনান প্রদেশের গভর্নর ওয়াং ইউবো।
Published : 21 Apr 2025, 09:05 PM
বাংলাদেশ ও চীনের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও গভীর ও কার্যকর করার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
সোমবার চীনের ইউনান প্রদেশের গভর্নর ওয়াং ইউবোর সঙ্গে বৈঠকে তিনি বলেন, “এটা কেবল শুরু। আমরা কাছাকাছি হয়েও যেন অনেক দূরে। এ দূরত্ব ঘুচিয়ে আরও ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী হতে চাই। আশা করি, আপনি আবার বাংলাদেশে আসবেন।”
ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এ বৈঠক হয় বলে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।
নিজের সাম্প্রতিক চীন সফরের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “সফরটি দুই দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে এক মোড় ঘোরানো মুহূর্ত ছিল।”
তিনি চীনের উষ্ণ আতিথেয়তার প্রশংসা করেন এবং প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের আন্তরিক সহযোগিতার আশ্বাসের জন্য কৃতজ্ঞতা জানান।
গভর্নর ওয়াং ইউবো বলেন, “আমার সফরের লক্ষ্য হলো চীন ও বাংলাদেশ সম্পর্ক আরও দৃঢ় করা। ইউনান প্রদেশ দক্ষিণ এশিয়ার জন্য চীনের উন্মুক্ত প্রবেশদ্বার হিসেবে কাজ করতে প্রস্তুত।”
বৈঠকে স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা ও বাণিজ্যসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতা জোরদার করার বিষয়ে আলোচনা হয়।
গভর্নর বলেন, ইউনানে একটি ব্যাংক ইতোমধ্যে অধ্যাপক ইউনূসের প্রবর্তিত মাইক্রোক্রেডিট মডেল গ্রহণ করেছে এবং অনেক মানুষ এর উপকার পাচ্ছে। তিনি দুই দেশের মধ্যে সামাজিক লক্ষ্য অর্জনে আরও ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার আহ্বান জানান।
তিনি কারিগরি প্রশিক্ষণ, ডিজিটাল ও ভাষা শিক্ষা, সামুদ্রিক খাবার, আম ও কৃষিপণ্যের বাণিজ্য সম্প্রসারণে যৌথ উদ্যোগ নেওয়ার প্রস্তাব দেন।
তাতে সমর্থন জানিয়ে মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, “আপনার প্রস্তাবিত প্রতিটি বিষয়ের সঙ্গে আমরা একমত। স্বাস্থ্য, শিক্ষা, বাণিজ্য কিংবা প্রশিক্ষণের এসব উদ্যোগ দ্রুত বাস্তবায়ন হোক। আমরা ঘনিষ্ঠ অংশীদার ও প্রকৃত বন্ধু হতে চাই।”
অধ্যাপক ইউনুস বলেন, বাংলাদেশের রোগীদের জন্য কুনমিং শহরের চারটি হাসপাতাল নির্ধারণ করে চীন মেডিকেল ট্যুরিজম চালু করতে সহায়তা করছে।
“এ উদ্যোগ আমাদের অংশীদারত্বের একটি নতুন অধ্যায়।”
বর্তমানে চীনে প্রায় ৪০০ বাংলাদেশি শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছেন।
মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, তিনি এ সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ানোর উদ্যোগ নেবেন।
“আমরা আমাদের তরুণদের চীনে পাঠাতে এবং চীনা ভাষা শেখাতে উৎসাহিত করব।”
দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তিতে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “বাংলাদেশ চীনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করে পারস্পরিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে এবং নতুন সুযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে উভয় দেশের সমৃদ্ধি নিশ্চিত করতে চায়।”
বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরের সিনিয়র সচিব ও এসডিজি সমন্বয়কারী লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।