"কোটা সংস্করের আন্দোলনে একটি চক্র মিশে গিয়ে আন্দোলনকে সহিংসতার দিকে নিয়ে গেছে। তাদের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে," বলেন ঝুনা চৌধুরী।
Published : 24 Jul 2024, 09:20 PM
কোটা সংস্কার আন্দোলনের মধ্যে সহিংসতায় নিহতদের স্মরণে প্রদীপ প্রজ্জ্বালন করেছে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট।
সরকারি চাকরিতে কোটার বাস্তব সংস্কার, কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সংগঠিত হত্যাকান্ডের বিচার এবং বিশেষ মহলের সন্ত্রাস, অগ্নিসংযোগ ও নৈরাজ্য সৃষ্টির প্রতিবাদে দেশব্যাপী সাংস্কৃতিক সমাবেশ করারও ঘোষণা দিয়েছে তারা।
বুধবার সন্ধ্যায় শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরের সামনে প্রদীপ প্রজ্জ্বালন করা হয়।
সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতিমণ্ডলির সদস্য ঝুনা চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক আহকাম উল্লাহ, গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশানের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক চন্দন রেজা, একে আজাদ, মানজার চৌধুরী সুইট, সোহরাব হাসানসহ অনেকে কর্মসূচিতে অংশ নেন।
আহকাম বলেন, "মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষের কোনো অপশক্তি যাতে চলমান পরিস্থিতির সুযোগ নিতে না পারে, সেদিকেও সবাইকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে। যে কোনো অশুভ তৎপরতা রুখতে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।”
ঝুনা চৌধুরী বলেন, "কোটা সংস্করের আন্দোলনে একটি চক্র মিশে গিয়ে আন্দোলনকে সহিংসতার দিকে নিয়ে গেছে। তাদের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।"
সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছকে এই আয়োজনে দেখা যায়নি। ফোন করা হলে বিফিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, "আমি শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকার কারণে আজকে যেতে পারিনি। তবে জোটের কর্মসূচির সঙ্গে আমি যুক্ত আছি।"
কোটা সংস্কারের দাবির সঙ্গেও সমর্থন রয়েছে বলে জানিয়ে তিনি আশা প্রকাশ করেন, দ্রুত আলোচনার মাধ্যমে চলমান সংকটের সমাধান করা হবে। বিদ্যমান কোটা পদ্ধতির বাস্তবসম্মত সংস্কার চান তিনি।
দেশব্যাপী সাংস্কৃতিক সমাবেশের ঘোষণা দিয়ে আহকাম বলেন, "শুক্রবার থেকে ২৫ জুলাই বৃহস্পতিবার প্রতিদিন বিকেল ৫টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে প্রতিবাদী সাংস্কৃতিক সমাবেশ এবং ২৯ জুলাই দেশজুড়ে প্রদীপ প্রজ্বালন করা হবে।"
কোটা সংস্কারের দাবিতে জুলাইয়ের প্রথম দিন থেকেই আন্দোলন চালিয়ে আসছিল শিক্ষার্থীরা। তারা ‘বাংলা ব্লকেড’ নামে অবরোধের কর্মসূচির পর সারাদেশে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ ঘোষণা করলে আন্দোলন সহিংস রূপ নেয়। এক সপ্তাহে প্রাণ যায় প্রায় দুইশ মানুষের।
গত বৃহস্পতিবার থেকে পরের দুই দিনে সেতু ভবন, বিআরটিএ ভবন, দুর্যোগ ভবন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, মিরপুর ইনডোর স্টেডিয়াম, মেট্রোরেলের দুটি স্টেশন, বিটিভি, হানিফ ফ্লাইওভারের টোল প্লাজা, মেট্রোরেলের কাজীপাড়া ও মিরপুর স্টেশন, এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়ের মহাখালী অংশ, ফায়ার সার্ভিস স্টেশন, পুলিশ স্টেশন, বনশ্রী পিবিআই অফিস, উত্তর সিটি করপোরেশনের ময়লার গাড়ি, উত্তরা ও মোহাম্মদপুর কমিউনিটি, মহাখালীন ডিএনসিসি হাসপাতাল, নরসিংদী কারাগারসহ বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা, ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ করা হয়।
এ অবস্থায় শুক্রবার মধ্যরাত থেকে কারফিউ জারি করে সরকার। সেই সঙ্গে মোতায়েন করা হয় সেনাবাহিনী।
সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে বলা হচ্ছে, ছাত্রদের আন্দোলনের সুযোগ নিয়ে বিএনপি-জামায়াত এসব নাশকতা ঘটিয়েছে, তাদের উদ্দেশ্য ছিল সরকারের পতন ঘটানো।