“আমরা যদি বাকী সময়টা বাংলাদেশকে গড়ে তোলার জন্য এই রকমই থাকতে পারি, অসুবিধাটা কোথায়,” বলেন তিনি।
Published : 13 Mar 2025, 09:19 PM
রাজনৈতিক ঐক্যে ‘কৃত্রিমভাবে বিভেদ’ সৃষ্টি করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস।
বৃহস্পতিবার গণঅধিকার পরিষদ আয়োজিত ইফতারে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের এক সঙ্গে বসার চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, বাংলাদেশকে গড়ে তোলার জন্য এই রকম থাকতে অসুবিধাটা কোথায়?
বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ দাবি করেন। এর আগে তিনি চলতি মার্চ মাসের মধ্যে নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার করার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছিলেন।
গত ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সংস্কার উদ্যোগের মধ্যে দ্রুত নির্বাচন দাবি করে আসছে বিএনপি। জামায়াত ও শিক্ষার্থীদের নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপির অবস্থান ভিন্ন।
এমন প্রেক্ষাপটে এদিনের ইফতার আয়োজনের মত এক সঙ্গে নির্বাচন থেকে সরকার গঠন পর্যন্ত সব কাজ করার প্রত্যাশা জানান মির্জা আব্বাস।
তিনি বলেন, “গত বছর, তার আগের বছর, তার আগের বছর আমরা যখন এসেছি রমজানের সময় ইফতার পার্টিতে, যে শঙ্কা নিয়ে আসতাম, এখন আসলে সেই শঙ্কাটা নাই। একেবারে নীরবে, নিশ্চিন্তে, কোনো উৎপীড়ন নাই, আরামের সঙ্গে এসেছি, আরামের সঙ্গে চলে যাব।
“এই অবস্থাটা আমরা ৫ অগাস্ট আন্দোলনে বিজয়ের মধ্য দিয়ে অর্জন করেছি। আজকে সেই অর্জনটা আমরা ভোগ করছি।”
বিএনপির এই নেতা বলেন, “এখানে এই টেবিলে (ইফতারের টেবিল) আমরা আটটি রাজনৈতিক দলের নেতারা বসেছি, অন্যান্য টেবিলেও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ বসেছেন। সবাই আমরা এনজয় করছি এক সঙ্গে।
“আমরা যদি বাকী সময়টা বাংলাদেশকে গড়ে তোলার জন্য এই রকমই থাকতে পারি, অসুবিধাটা কোথায়?”
এক সঙ্গে দেশ গড়তে তিনি কোনো অসুবিধা দেখছেন তুলে ধরে মির্জা আব্বাস বলেন, “কিন্তু কৃত্রিমভাবে অসুবিধা সৃষ্টি করা হচ্ছে, চেষ্টা করা হচ্ছে। বিভিন্ন দল একে অপরের বিরুদ্ধে কথা বলছে, কাঁদা ছুড়ছে, এই জিনিসটা ঠিক না। তাহলে ৫ অগাস্টে আমাদের আন্দোলনের যে বিজয়, এটা নিঃশেষ হয়ে যাবে।”
‘কারো ষড়যন্ত্রে অর্জন যেন বৃথা না যায়’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, “আজকে আমরা ইফতার পার্টিতে যেমনি বসেছি, আমরা আগামীতে সকল কার্য্ক্রমে নির্বাচন থেকে সরকার গঠন পর্যন্ত আমরা সব এক সঙ্গে করতে চাই। দেশটা সুন্দর করতে হবে। হিংসা-বিদ্বেষ-ঈর্ষা নিয়ে কিংবা পরশ্রীকাতর হয়ে কখনোই দেশকে ভালো করা যাবে না।
“আমরা সবাই যেন সবাইকে নিজের বিবেকের কাছে দায়ী রাখি যে, আমরা ৫ তারিখের (৫ আগস্ট) যে রক্তক্ষয়, যে আন্দোলনের বিনিময় যা অর্জন করেছি সেটা যেন বৃথা না যায়, কারো ষড়যন্ত্রের কারণে।”
‘শিগগির রোডম্যাপ চাই’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “সংস্কার, আলাপ-আলোচনা, প্রস্তাব গ্রহণ করা- এগুলো চলতে থাকবে। কিন্তু আমাদেরকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য একটি সিদ্ধান্ত নিতে হবে, সেজন্য আমরা রোডম্যাপ চাই। সেই রোডম্যাপের প্রত্যাশা আমি করেছি, বাংলাদেশের জনগণ করে।”
তিনি বলেন, “প্রধান উপদেষ্টার কাছে আমাদের সমস্ত আর্জি জানিয়েছি, আলাপ-আলোচনা করেছি। তিনি আমাদেরকে আশ্বস্ত করেছেন। শুধু একটি মাত্র বিষয় আমরা পরিস্কার হতে চাই, তাহল মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা খুব শিগগিরই জনগণের চাহিদা অনুযায়ী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য একটি রোডম্যাপ প্রদান করবেন।”
রাজধানীর মালিবাগে স্কাইসিটি হোটেলে রাজনৈতিক দলের নেতাদের সন্মানে এই ইফতার আয়োজনে সভাপতিত্ব করেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর।
সেখানে অংশ নেন জাতীয় পার্টি নেতা (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাইফুল হক, জামায়াতে ইসলামীর আবদুল হালিম, এনডিএমের ববি হাজ্জাজ।