মামলার নথি অনুযায়ী, গত ১৯ জুলাই ভাটারা থানা এলাকায় সোহাগ মিয়া (১৬) নামে এক কিশোর পুলিশের গুলিতে নিহত হয়।
Published : 31 Aug 2024, 08:47 PM
ঢাকার ভাটারা থানার সোহাগ মিয়া হত্যা মামলায় সাত দিনের রিমান্ড শেষে জাতীয় সংসদের সাবেক চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজকে আরও তিন দিনের জন্য পুলিশি হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দিয়েছে আদালত।
শনিবার ঢাকার মহানগর হাকিম সাইফুল ইসলামের আদালত শুনানি শেষে এই আদেশ দেয়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ভাটারা থানার উপ-পরিদর্শক মাসুদুর রহমান আ স ম ফিরোজকে আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন বলে তথ্য দিয়েছেন প্রসিকিউশনের আদালত পরিদর্শক মো. আসাদুজ্জামান।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডকটমকে তিনি বলেন, ফিরোজের পক্ষে তার আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদন করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, গত ১৯ জুলাই ভাটারা থানা এলাকায় সোহাগ মিয়া (১৬) নামের এক কিশোর পুলিশের গুলিতে নিহত হয়।
নিহতের বাবা শাফায়েত হোসেন ২০ অগাস্ট ভাটারা থানায় একটি হত্যা মামলা করেন, যেখানে আ স ম ফিরোজসহ ৯১ জনকে আসামি করা হয়।
অভিযোগে বলা হয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় পুলিশের গুলিতে সোহাগের মৃত্যু হয়, যা সরকারি নির্দেশনায় সংঘটিত হয়েছিল।
ভাটারা থানার এই মামলায় ঢাকার বনানী এলাকা পটুয়াখালী-২ আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক এ সংসদ সদস্যকে ২৩ অগাস্ট গ্রেপ্তার করার তথ্য দেয় ঢাকা মহানগর পুলিশ-ডিএমপি।
পরদিন শনিবার ঢাকার মহানগর হাকিম মো. জসিমের আদলতে তুলে তার বিরুদ্ধে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হলে সাত দিনের জন্য তা মঞ্জুর করা হয়, যার মেয়াদ শেষ হয় শনিবার।
আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এ দিন দ্বিতীয় দফায় হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আ স ম ফিরোজকে মহানগর হাকিম আদালতে তোলা হলে আদালত তিন দিনের জন্য তা মঞ্জুর করে।
ফিরোজ দশম জাতীয় সংসদে চিফ হুইপ ছিলেন। তিনি আটবার জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। সবশেষ দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনেও জয় পান।
১৯৭৯ সালে দ্বিতীয় সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসাবে পটুয়াখালী-৬ আসন থেকে প্রথমবার সংসদ সদস্য হন তিনি।
ফিরোজ ছাত্র জীবন থেকেই রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিলেন। ১৯৬৯-১৯৭০ সালে বিএম কলেজের ছাত্র সংসদের (বাকসু) ভিপি নির্বাচিত হন। ১৯৭১ সালে তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।
গত ৫ অগাস্ট প্রবল গণআন্দোলনের মধ্যে পতন ঘটা আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী, সংসদ সদস্য ও বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে একের পর হত্যা মামলা দায়ের করা হচ্ছে সারা দেশে।
সরকার পতনের পর শেখ হাসিনার বেসরকারি বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলকসহ অনেকে গ্রেপ্তারও হয়েছেন। রিমান্ডে নিয়ে তাদের জিজ্ঞাসাবাদও করছে পুলিশ।