“বন বিভাগের যারা চাকরি করেন তাদের দুইটা-তিনটা করে সোনার দোকান”, বলেন তিনি।
Published : 29 Jun 2024, 11:17 PM
সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ৯০ শতাংশের দুর্নীতির ঝোঁক থাকার অভিযোগ এনে পদক্ষেপ নিতে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য হাফিজ উদ্দিন আহম্মেদ।
শনিবার সংসদে তিনি বলেছেন, “কাস্টমসে যারা চাকরি করে তাদের প্রত্যেকের ঢাকা শহরে দুইটা-তিনটা বাড়ি। বন বিভাগের যারা চাকরি করেন তাদের দুইটা-তিনটা করে সোনার দোকান।
“প্রধানমন্ত্রী যদি পদক্ষেপ নেন তাহলে দুর্নীতি রোধ করতে পারব। না হলে যে হারে লাগামহীনভাবে বড় বড় কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দুর্নীতি করছেন, আমরা কী করব? আমরা অসহায়। অনেক সরকারি কর্মকর্তা আছেন তারা অসহায়। কারণ এখানে ৯০ শতাংশ লোকই ‘ওইদিকে’ (দুর্নীতি), ১০-১৫ শতাংশ লোক ভালো থেকে কী করবে?”
অর্থবিল ২০২৪ এর সংশোধনী প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় ঠাকুরগাঁও-৩ আসনের সংসদ সদস্য বলেন, “নির্বাচনের সময় আমার কী সম্পদ আছে তা হলফনামায় দিয়ে থাকি। তারপর পাঁচ বছর পরে নির্বাচনে আবার হলফনামা দেই। সেখানে সম্পত্তি কত বাড়ল, একশ গুণ না পাঁচশ গুণ বাড়ল, তা পত্রিকায় নিউজ হয়। আমাদের আমলনামা চলে আসে।
“কিন্তু সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী যারা প্রথমে চাকরিতে ঢুকেন, তারা যদি হলফনামা দিতেন, তারপর পাঁচ বছর-১০ বছর হলফনামা দিতেন এবং তাদের আলোচনা-সমালোচনা হত, তাহলে দুর্নীতির চাবিটা বন্ধ হত, না হলে বন্ধ হবে না।”
দুর্নীতি বন্ধ করতে পারলে ‘সোনার অক্ষরে’ যেভাবে ইতিহাসে বঙ্গবন্ধুর নাম রয়েছে, শেখ হাসিনার নামও সেভাবে লেখা থাকবে বলেও মন্তব্য করেন জাতীয় পার্টির নেতা।
প্রতিটি নির্বাচনি এলাকায় সংসদ সদস্যদের কার্যালয় করে দেওয়ার দাবিও জানান জাতীয় পার্টির নেতা। বলেন, “আমার বাড়ি যে উপজেলায়, সেখানে বাড়িকে অফিস হিসাবে ব্যবহার করি। কিন্তু আরেক উপজেলায় বসার জায়গাও নেই। ইউএনও সাহেবের পাশে টেবিল নিয়ে বসতে হয়।
“নির্বাচনী এলাকায় অনেক সালিশ-বিচার করতে হয়। অনেক সমস্যার সমাধান দিতে হয়। এলজিইডিসহ বিভিন্ন বিভাগের সঙ্গে বসতে হয়। সে জন্য অফিস থাকলে ভালো হয়।”
অর্থবিলের জনমত যাচাইয়ের আলোচনায় অংশ নিয়ে কুড়িগ্রাম-২ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য হামিদুল হক খন্দকার বলেন, “কালোটাকা সাদা করা, এটা সরকারের দ্বৈতনীতি। একদিকে বলবেন দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারের ‘জিরো টলারেন্স’, অন্যদিকে দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেবেন, এটা কী সম্ভব?
“যারা বৈধ আয় করবে তাদের ৩০ শতাংশ কর দিতে হবে, যারা কালোটাকা সাদা করবে তাদের ১৫ শতাংশ ট্যাক্স দিতে হবে, এটা কার স্বার্থে? এটা কোন নীতি-নৈতিকতার মধ্যে পড়ে বলে মনে হয় না।”
একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও সাবেক অর্থমন্ত্রী কালো টাকা সাদা করেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, “এটা জাতির জন্য লজ্জাকর, এটা প্রত্যাশিত না।
“এই সুযোগে বেনজীর (সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ)-মতিউরদের (এনবিআর থেকে সরিয়ে দেওয়া মতিউর রহমান) মত দুর্নীতিবাজ আছে। তারা সরকারের চোখে আঙুল দিয়ে পার পেয়ে যায়। এটা জাতির জন্য কলঙ্ক।”
কালোটাকা সাদা করতে ৩০ শতাংশ কর ও পুরো টাকা উৎপাদনশীল খাতে বিনিয়োগের প্রস্তাব করেন হামিদুল হক খন্দকার।