মোহাম্মদপুরে সেন্টার ফর ডেভেলপমেন্ট ইনোভেশন অ্যান্ড প্রাকটিসেস নামের একটি এনজিওতে চাকরি করতেন তারা।
Published : 25 Jan 2024, 06:12 PM
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে একটি এনজিওর নিরাপত্তাকর্মীকে পিটিয়ে হত্যা করেছেন তারই এক সহকর্মী।
এ ঘটনায় আখতার হোসেন নামের ২২ বছর বয়সী ওই নিরাপত্তাকর্মীকে বুধবার রাতে গ্রেপ্তার করেছে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ।
পুলিশ বলছে, ভাসমান যৌনকর্মীদের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে আখতারের। বিষয়টি জেনে ফেলায় গত সোমবার সহকর্মী জুয়েল মিয়াকে (১৯) ঘুমন্ত অবস্থায় পিটিয়ে হত্যা করেন তিনি।
আখতারকে গ্রেপ্তারের পর বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে ওই ঘটনা তুলে ধরেন ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার আজিমুল হক।
তিনি বলেন, জাতীয় জরুরি সেবার নম্বর ৯৯৯ থেকে পাওয়া তথ্যে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ জানতে পারে, বাবর রোডে সেন্টার ফর ডেভেলপমেন্ট ইনোভেশন অ্যান্ড প্রাকটিসেস (সিডিআইপি- সিদীপ) নামের একটি এনজিও কার্যালয়ের জেনারেটর রুমের ভেতর থেকে নিরাপত্তাকর্মী জুয়েলের হাত-পা বাঁধা লাশ রয়েছে। পরে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ।
ওই ঘটনায় জুয়েলের পরিবার থানায় মামলা করে। তদন্তে নেমে ভবনের সিসিটিভি ভিডিও বিশ্লেষণ করে পুলিশ জানতে পারে, জুয়েলকে খুন করেছেন তারই সহকর্মী আখতার।পরে পুরান ঢাকার নাজিরাবাজার এলাকার একটি কারখানা থেকে আখতারকে গ্রেপ্তার করা হয়।
উপ-কমিশনার আজিমুল হক বলেন, আখতার ও জুয়েল ছাড়াও আরো দুজন নিরাপত্তা কর্মী ওই এনজিওতে কাজ করেন। তবে ঘটনার সময় অন্য দুজন ঘুমিয়ে ছিলেন। জুয়েল কম্বল মুড়ি দিয়ে একটি চেয়ারে বসে ছিলেন। আখতার একটি লোহার পাইপ দিয়ে জুয়েলকে পিটিয়ে হত্যা করেন।
“লোহার পাইপ দিয়ে প্রথমে মাথায় মারার পর জুয়েল নিস্তেজ হয়ে যান। পরে ওই শরীরের উপর উপর্যুপরি আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করেন আখতার। ভিডিওতে আমরা দেখেছি, পরে জুয়েলের নিথর দেহটিকে বেশ কিছুদূর টেনে জেনারেটর রুমে নিয়ে হাত-পা বেঁধে ফেলেন, তারপর পালিয়ে যান।"
ওই ভবনের অন্য দুই নিরাপত্তাকর্মী পরে জেনারেটর রুমে জুয়েলের লাশ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেন। সেই খবর পেয়ে তদন্তে নামে পুলিশ।
আখতার সদরঘাট দিয়ে লঞ্চে করে ‘পালিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন’ জানিয়ে পুলিশ কর্মকর্তা আজিমুল হক বলেন, “আখতারের মোবাইলে ভাসমান যৌনকর্মীদের ছবি ও ফোন নাম্বার পাওয়া গেছে। তিনি নিয়মিত যৌনকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন এবং কর্মস্থলে নিয়ে আসতেন।
“এ বিষয়টি জেনে ফেলে জুয়েল প্রতিবাদ করেন। এরপর তাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন আখতার।"
ময়নাতদন্তের পর জুয়েলকে ময়মনসিংহে তার গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।