“রাইড শেয়ারিং কোম্পানিগুলো এ পর্যন্ত অন্তত ৩০ থেকে ৪০ হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।”
Published : 29 Sep 2024, 08:26 PM
বিদেশে টাকা পাচারের অভিযোগ কেন আনা হবে না তা জানতে চেয়ে রাইড শেয়ারিং সেবা ‘উবার’ ও ‘পাঠাওকে’ আইনি নোটিস পাঠানো হয়েছে।
রোববার কাওসার মেহমুদ নামের এক ব্যক্তির পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মাসুদ আহমেদ এ নোটিস পাঠিয়েছেন।
নোটিসে বলা হয়েছে, “রাইড শেয়ারিং বিধিমালা ২০১৭ এর লঙ্ঘন করে বিআরটিএর অসাধু কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগসাজশে রাইড শেয়ারিং কোম্পানিগুলো এ পর্যন্ত অন্তত ৩০ থেকে ৪০ হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।”
আইনজীবী মাসুদ আহমেদ বলেন, উবার একটি মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি, যা পরিচালনা ও তত্ত্বাবধান করা হয় ভারত থেকে। বাংলাদেশে এর কিছু অফিস রয়েছে, যার কাজ হলো মূলত অর্থ সংগ্রহ করা।
তিনি বলেন, প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, মোটরসাইকেলসহ অন্তত এক লাখ ৫০ হাজার পরিবহন অনলাইন অ্যাপসের মাধ্যমে উবার ও পাঠাওতে সংযুক্ত রয়েছে, যারা মূলত যাত্রী ও পণ্য পরিবহন, ফুড ডেলিভারি ইত্যাদি কাজ করে থাকে।
রাইড শেয়ারিং বিধিমালায় কোনো নির্দেশনা না থাকলেও কোম্পানিগুলো প্রতারণা করে পরিবহন ব্যবসায়ীদের আয়ের ওপর ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ কমিশন, অ্যাডভান্স প্ল্যাটফর্ম ফি, সার্ভিস চার্জ, বুকিং ফি ও ট্যাক্স ইত্যাদি নেয় বলে তার ভাষ্য।
মাসুদ আহমেদ বলেন, “বিধিমালা মোতাবেক, রাইড শেয়ারিং কোম্পানি এক লাখ টাকা দিয়ে বিআরটিএ থেকে এনলিস্টমেন্ট সার্টিফিকেট প্রাপ্তি সাপেক্ষে এক বছর ব্যবসা করতে পারবে। পরবর্তীতে প্রতি বছর ১০ হাজার টাকা করে দিতে হবে ব্যবসা করার জন্য।
“অন্য কারো কাছ থেকে কোনো টাকা-পয়সা তারা নিতে পারবে মর্মে বিধিমালায় উল্লেখ না থাকলেও কোম্পানিগুলো হাজার হাজার কোটি টাকা গ্রাহকদের কাছ থেকে গ্রহণ করছে, যা সম্পূর্ণ বেআইনি ও অবৈধ।”
তিনি আরও বলেন, “কিছু দেশীয় রাইডশেয়ারিং কোম্পানি আছে যারা একটি টাকাও কমিশন নেয় না। বাংলাদেশে গুগল, ইউটিউব, ফেইসবুক ব্যবহারকারীদের কোথাও কোনো টাকা-পয়সা দিতে হয় না। সর্বত্র এসব প্রতিষ্ঠানের হাজার হাজার কর্মচারী রয়েছে। গুগল-ফেইসবুকের মতো রাইড শেয়ারিং কোম্পানিগুলোও অনলাইন অ্যাপস পরিচালনা করে কার্যক্রম পরিচালনা করে।”
তার দাবি, বিগত আট বছর যাবৎ বাংলাদেশে তারা সরকারকে কত হাজার কোটি টাকা ট্যাক্স দিয়েছে, তাদের আয়ের হাজার হাজার কোটি টাকা কেন বেআইনি হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে নোটিসে।
“তাদের আয়-ব্যয়ের পরিপূর্ণ হিসাব এবং বিদেশে পাঠালে কোন প্রক্রিয়ায় কত টাকা পাঠিয়েছে, তাও লিগ্যাল নোটিসে জানতে চাওয়া হয়েছে।”
তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, একজন গাড়ির ড্রাইভার যদি তিন হাজার টাকা একদিনে আয় করেন, সেখান থেকে অন্তত এক হাজার টাকা তারা (উবার ও পাঠাও) বিভিন্ন খাত দেখিয়ে কেটে নিচ্ছে। এভাবে বিগত আট বছরে তারা হাজার হাজার কোটি টাকা নিয়ে গেছে।
রাইড শেয়ারিং কোম্পানিগুলোর এসব বেআইনি কর্মকাণ্ড সম্পর্কে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে জবাব দেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে। অন্যথায় তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে নোটিসে জানানো হয়েছে।