মালিকানা নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে একপক্ষের আবেদনে বেসরকারি এই টেলিভিশন স্টেশন সাত দিনের জন্য বন্ধের নির্দেশ দেয় হাই কোর্ট।
Published : 21 Aug 2024, 08:09 PM
বেসরকারি টেলিভিশন স্টেশন সময় টিভির সম্প্রচার এক সপ্তাহ বন্ধের আদেশ স্থগিত চেয়ে আবেদনের শুনানির জন্য আগামী রোববার দিন ধার্য করেছে চেম্বার আদালত।
বুধবার আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম এই আদেশ দেন।
সময় টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহমেদ জোবায়েরের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন; সঙ্গে ছিলেন অ্যাডভোকেট সাকিব মাহবুব।
সময় মিডিয়া লিমিটেডের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট আহসানুল করিম, জয়নুল আবেদীন ও রুহুল কুদ্দুস কাজল; সঙ্গে ছিলেন অ্যাডভোকেট ফারজানা খান নীলা।
পরে অ্যাডভোকেট আহসানুল করিম সাংবাদিকদের বলেন, “সময় টিভি এক সপ্তাহ বন্ধে হাই কোর্ট যে আদেশ দিয়েছিলেন, চেম্বার আদালত তা স্থগিত করেননি। আগামী ২৫ অগাস্ট আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে এর শুনানি হবে। এ কারণে সময় টিভি আপাতত বন্ধই থাকবে।”
সময় টিভি বন্ধ চেয়ে সিটি গ্রুপের পক্ষে সময় মিডিয়া লিমিটেড এবং এর পরিচালক শম্পা রহমানের একটি রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত সোমবার বেসরকারি এই টেলিভিশন স্টেশন সাত দিনের জন্য বন্ধের নির্দেশ দেয় হাই কোর্ট।
মঙ্গলবার হাই কোর্টের এই আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে আবেদন করেন সময় টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহমেদ জোবায়ের।
বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি শশাঙ্ক শেখর সরকারের হাই কোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।
গত ১০ অগাস্ট গুলশানের সিটি হাউজে সময় মিডিয়া লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদের সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে সময় টিভির নতুন ব্যবস্থাপনা পরিচালক নির্ধারণ করা হয়।
সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সময় টেলিভিশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহীর পদ থেকে আহমেদ জোবায়েরকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি পরিচালক শম্পা রহমানকে ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সময় মিডিয়া লিমিটেডের সব কার্যক্রম এখন থেকে নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালকের নির্দেশনায় পরিচালিত হবে।
এ অব্যাহতির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে গত ১৪ আগস্ট হাই কোর্টের কোম্পানি বেঞ্চে রিট আবেদন করেন আহমেদ জোবায়ের; যার শুনানি আগামী বৃহস্পতিবার (২২ অগাস্ট) হওয়ার কথা রয়েছে।
গণ আন্দোলনে গত ৫ অগাস্ট সরকার পতনের দিন সময় টিভিসহ বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এতে সাময়িক সময়ের জন্য সময় টিভি বন্ধ হয়ে যায়। পরে আবারও সম্প্রচারে আসে সময় টেলিভিশন। এরপরই সামনে আসে মালিকানা সংক্রান্ত দ্বন্দ্ব। শেষ পর্যন্ত তা আদালতে গড়ায়।
২০০৯ সালে লাইসেন্সের জন্য আবেদন করা সময় টেলিভিশন পরীক্ষামূলক সম্প্রচার শেষে ২০১১ সালের ১৭ এপ্রিল বাণিজ্যিক সম্প্রচারে আসে।
লাইসেন্স নেওয়ার সময় তৎকালীন মন্ত্রী কামরুল ইসলামের ভাগ্নে আহমেদ জোবায়েরের নামে ৯৩ শতাংশ শেয়ার ছিল। ব্যবসায়িক ও পারিবারিক সূত্রের তথ্য, এর মধ্যে ৯০ শতাংশ শেয়ার কামরুল ইসলামের হলেও কাগজে কলমে তা ছিল আহমেদ জোবায়েরের নামে।
অন্য অংশীদারদের মধ্যে কামরুল ইসলামের ভাই মোরশেদুল ইসলামের ৩ শতাংশ এবং নিয়াজ মোরশেদ ও তুষার আবদুল্লাহর ২ শতাংশ করে শেয়ার ছিল।
এরপর দেশের অন্যতম শীর্ষ ব্যবসায়ী গোষ্ঠী সিটি গ্রুপ সময় টেলিভিশনে ৬৫ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে। তাদের কাছে ৭৫ শতাংশ শেয়ার ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে ব্যবস্থাপনার নিয়ন্ত্রণ জোবায়েরের মাধ্যমে মন্ত্রী কামরুলের পরিবারের কাছে থেকে যায়। পরে তুষার আবদুল্লাহ সময় টিভি ছেড়ে যান।
সময় টিভির সম্প্রচার এক সপ্তাহ বন্ধের নির্দেশ