বাংলাদেশকে আসিয়ানের ‘সেক্টরাল ডায়ালগ পার্টনার’ নির্বাচিত করতে ফিলিপিন্সের সমর্থন চান মো. সাহাবুদ্দিন।
Published : 31 Dec 2024, 07:12 PM
প্রায় আট বছর আগে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে চুরি হওয়া অর্থ দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনতে ফিলিপিন্সের সহযোগিতা চেয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।
বাংলাদেশে ফিলিপিন্সের নতুন রাষ্ট্রদূত নিনা পাদিলা কেইংলেট মঙ্গলবার পরিচয়পত্র পেশ করতে গেলে রাষ্ট্রপতি এই সহযোগিতা চান বলে বঙ্গভবনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের চুরি হওয়া ৮১ মিলিয়ন ডলারের মধ্যে ১৫ মিলিয়ন ডলার উদ্ধার গেছে; এখনও বাকি রয়েছে ৬৬ মিলিয়ন ডলার।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সকালে বঙ্গভবনে পৌঁছালে প্রেসিডেন্ট গার্ড রেজিমেন্টের একটি চৌকস দল নতুন রাষ্ট্রদূতকে গার্ড অব অনার দেয়।
পাদিলা কেইংলেটকে স্বাগত জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, “ফিলিপিন্সের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নকে গুরুত্ব দেয় বাংলাদেশ।
“রাষ্ট্রপতি ফিলিপিন্সের রিজল কমার্শিয়াল ব্যাংক করপোরেশনের মাধ্যমে ১৫ মিলিয়ন ডলার উদ্ধারে সহযোগিতার জন্য ফিলিপিন্স সরকারকে ধন্যবাদ জানান। সঙ্গে আশা প্রকাশ করেন, বাকি ৬৬ মিলিয়ন ডলার দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনতে তাদের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।”
বাংলাদেশকে আসিয়ানের ‘সেক্টরাল ডায়ালগ পার্টনার’ নির্বাচিত করতে ফিলিপিন্সের সমর্থন কামনা করেন রাষ্ট্রপতি।
বাংলাদেশ ও ফিলিপিন্সের মধ্যে বাণিজ্য-বিনিয়োগ বৃদ্ধির যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে মন্তব্য করে সাহাবুদ্দিন বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক, হিমায়িত খাদ্য, ওষুধ, মাঝারি আকারের সমুদ্রগামী জাহাজসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানের পণ্য আমদানি করতে ফিলিপিন্সের প্রতি আহ্বান জানান।
রোহিঙ্গাদের দ্রুত স্বদেশ প্রত্যাবাসনে ফিলিপিন্সের সহযোগিতাও প্রত্যাশা করেন রাষ্ট্রপতি।
রাষ্ট্রদূত বলেন, তিনি দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নয়নের পাশাপাশি বাণিজ্য-বিনিয়োগ বাড়াতে কাজ করবেন।
সাক্ষাতের সময় রাষ্ট্রপতির সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আদিল চৌধুরী, প্রেস সচিব সরওয়ার আলম এবং পররাষ্ট্র সচিব জসিম উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।
২০১৬ সালে ফেব্রুয়ারিতে রিজার্ভ চুরির ঘটনা ঘটলেও বাংলাদেশের মানুষ জানতে পারে এক মাস পর, ফিলিপিন্সের সংবাদমাধ্যমের খবরে। তখন বিশ্বজুড়ে ঘটনাটি আলোড়ন তুলেছিল।
ওই বছর ফেব্রুয়ারিতে সুইফট সিস্টেম ব্যবহার করে ৩৫টি ভুয়া বার্তা পাঠিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউ ইয়র্কে (ফেড) রাখা বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব থেকে ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি হয়।
এর মধ্যে একটি মেসেজের মাধ্যমে শ্রীলঙ্কায় একটি ‘ভুয়া’ এনজিওর নামে ২০ মিলিয়ন ডলার সরিয়ে নেওয়া হলেও বানান ভুলের কারণে সন্দেহ হওয়ায় শেষ মুহূর্তে তা আটকে যায়।
বাকি চারটি মেসেজের মাধ্যমে ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার সরিয়ে নেওয়া হয় ফিলিপিন্সের মাকাতি শহরে রিজল কমার্সিয়াল ব্যাংকের (আরসিবিসি) জুপিটার স্ট্রিট শাখায় ‘ভুয়া তথ্য’ দিয়ে খোলা চারটি অ্যাকাউন্টে।
অল্প সময়ের মধ্যে ওই অর্থ ব্যাংক থেকে তুলে নেওয়া হয়, ফিলরেম মানি রেমিটেন্স কোম্পানির মাধ্যমে স্থানীয় মুদ্রা পেসোর আকারে সেই অর্থ চলে যায় তিনটি ক্যাসিনোর কাছে।