‘ন্যায়’ হওয়ায় সেসব দাবি’ মেনে নেওয়ায় এরইমধ্যে অনেকগুলো আন্দোলন থেমে গেছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
Published : 25 Nov 2024, 07:16 PM
রাজধানীর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঘিরে গত কয়েকদিন থেকে একের পর এক আন্দোলন, সংঘাত ও নৈরাজ্যের পাশাপাশি দাবি আদায়ের আন্দোলন নিয়ে বিভিন্ন গোষ্ঠীর অবরোধের মত বিক্ষোভ কর্মসূচির সমাধান কীভাবে হবে তা নিয়ে অসহায়ত্ব প্রকাশ করেছেন শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।
তিনি বলেন, “এগুলোর সমাধান কী করে হবে…আমি তো একলা এগুলোর সমাধান করতে পারছি না।”
নগরীতে বিভিন্ন ধরনের আন্দোলন ঘিরে ‘আতঙ্কজনক পরিস্থিতি তৈরি’ হওয়ার কথা তুলে ধরে এ নিয়ে সরকারের পদক্ষেপের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
সোমবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে পরিকল্পনা কমিশনের এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক সভা শেষে ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের সামনে আসেন পরিকল্পনা ও শিক্ষা উপদেষ্টা।
এ বিষয়ক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “অনেকবার বলা হয়েছে যে শুধু শিক্ষার্থী না, শ্রমিকরা, শিক্ষার্থীরা, শিক্ষকদের নানা প্রতিষ্ঠান, সংগঠন ঢাকা শহরে তো শুধু শিক্ষার্থীদের না, অনেক সংগঠন, বহু বহু ধরনের সংগঠনগুলো আন্দোলন চালাচ্ছে, রাস্তার পাশে দেখা যাচ্ছে। কখনও রাস্তা অবরোধ করছে।
“এগুলোর সমাধান কী করে হবে…আমি তো একলা এগুলোর সমাধান করতে পারছি না। তবে নীতিগতভাবে যেগুলো ন্যায্য দাবি সেগুলো আমার পক্ষ থেকে ছাত্রদের কাছে আহ্বান করেছি, তোমরা তোমাদের দাবি নিয়ে আসো। যেগুলো ন্যায্য দাবি সেগুলো পূরণ করা হবে, রাস্তায় নামতে হবে না।”
‘ন্যায়’ হওয়ায় সেসব দাবি’ মেনে নেওয়ায় এরইমধ্যে অনেকগুলো আন্দোলন থেমে গেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এর ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, “কারণ আমি বলেছি ওগুলো ন্যায্য দাবি এবং এগুলোর আন্দোলন ন্যায্য।”
সাংবাদিকদের সঙ্গে উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ যখন এ নিয়ে কথা বলছিলেন, তখন ঢাকার ডেমরায় বেসরকারি মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজে গিয়ে হামলা চালিয়েছে সোহরাওয়ার্দী ও নজরুল কলেজের শিক্ষার্থীরা। প্রায় দুই ঘণ্টা সংঘর্ষের পর মোল্লা কলেজের পরিস্থিতি শান্ত হয়।
সোমবার বেলা ১২টা থেকে মোল্লা কলেজ ক্যাম্পাসে ও সামনের সড়কে প্রায় দুই ঘণ্টার এ সংঘর্ষে শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। তাদেরকে নেওয়া হয়েছে ঢাকা মেডিকেল, ন্যাশনাল মেডিকেলসহ বিভিন্ন হাসপাতালে।
আগের দিন রোববার মাহাবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থী অভিজিৎ হাওলাদারের মৃত্যুর ঘটনায় ডেমরা থেকে এসে এ কলেজের শিক্ষার্থীরা পুরান ঢাকার ন্যাশনাল মেডিকেলে ঘেরাও কর্মসূচি পালন করে। পূর্বঘোষিত সেই ‘সুপার সানডে' কর্মসূচির মধ্যে ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল ও পাশের সোহরাওয়ার্দী কলেজে ব্যাপক ভাঙচুর চালায় মোল্লা কলেজসহ কয়েকটি কলেজের শিক্ষার্থীরা।
ওই হামলা ও লুটপাটের প্রতিবাদে সোমবার ‘মেগা মানডে’ কর্মসূচির ডাক দেন সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও কবি নজরুল সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা।
রাতে তেজগাঁও এলাকায় ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ও বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব টেক্সটাইল-বুটেক্সের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এর আগে গত সপ্তাহে ঢাকা কলেজ ও ঢাকা সিটি কলেজের শিক্ষার্থীদের ঘটনা ঘটে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবি আদায়ের আন্দোলনে নেমে সড়ক ও রেল অবরোধ করে তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা।
এমন সব ঘটনার প্রেক্ষাপটে ‘ন্যায্য দাবি’ না হলে কোনোভাবেই সেসব মানা হবে না বলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অবস্থান ব্যক্ত করেন উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন।
তিনি বলেন, “কিছু কিছু আছে ন্যায্য দাবি না, এগুলো আমরা কিছুতেই মানব না। এবং সেখানে রাস্তায় বিশৃঙ্খলা করলে তাদের, রেললাইন অবরোধ করলে, রেল যাত্রীদের আক্রমণ করলে সেগুলোতে জনগণই তাদের বিরুদ্ধে চলে যাচ্ছে।
“কাজেই সেদিক থেকে আমরা সুবিধায়ই আছি কারণ কিছুদিন পর মানুষজনই তাদেরকে প্রতিরোধ করবেন। এবং করা শুরু করেছেন।”