“সেবা পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতাগুলো দূর করা এবং নতুন কিছু করার উদ্দেশ্যে ডাক বিভাগে বেশ কিছু কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে।”
Published : 15 Apr 2025, 09:08 PM
ডাক বিভাগের কাজে গতি আনতে বিলি-বন্টনের দায়িত্বে থাকা ডাক পিয়ন বা পোস্টম্যানদের ই-বাইক দেওয়া শুরু করেছে সংস্থাটি।
মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিকভাবে ৫০টি ই-বাইক হস্তান্তর করেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমেদ তৈয়্যব।
ঢাকা জিপিওতে আনুষ্ঠানিকভাবে লাল রঙের এই বিদ্যুৎ চালিত মোটরসাইকেল বা ই-বাইক হস্তান্তর করা হয়।
বাইকগুলোর পেছনে মালামাল বহনের জন্য বিশেষ বাক্স সংযুক্ত করা রয়েছে।
আনুষ্ঠানিকভাবে বাইক হস্তান্তরের পর প্রধান অতিথির বক্তব্যে ফয়েজ আহমেদ তৈয়্যব বলেন, “ডাকের সেবাগুলো, সেগুলো মানুষের কাছে আরও কীভাবে সহজভাবে পৌঁছে দেওয়া যায়, পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতাগুলো দূর করা এবং নতুন কিছু করার উদ্দেশ্যে ডাক বিভাগে বেশ কিছু কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে।”
অনুষ্ঠানে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মুশফিকুর রহমান, ডাক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) এস এম শাহাব উদ্দীন উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে গত ১৩ এপ্রিল ডাক বিভাগের সংস্কার নিয়ে নিজের মতামত ফেইসবুক পোস্টে তুলে ধরেন ফয়েজ আহমেদ। সেখানে তিনি লিখেছেন, “বাংলাদেশ ডাক বিভাগের সেবার মান বাড়ানোর জন্য কয়েকটি পদক্ষেপ শুরু করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে, রানার বা পোস্টম্যানদের সময় বাঁচানোর জন্য ই-বাইক বরাদ্দ দেওয়া। পোস্টাল অ্যাড্রেস ডিজিটাইজেশন এবং অ্যাড্রেস এর বিপরীতে জিও লোকেশন ম্যাপিং করা। ডাক বিভাগের সাথে বেসরকারি কুরিয়ার এবং পারসেল সার্ভিস দেওয়া কোম্পানিগুলোর এমওইউ সাইন করে আরবান পারসেল ডিস্ট্রিবিউশনের সাথে সাথে রুরাল ডিস্ট্রিবিউশন নেটওয়ার্ক তৈরি করা।
“ডাক বিভাগ গ্রামীণ অঞ্চলে পার্সেল ডিস্ট্রিবিউশনে শক্তিশালী, অন্যদিকে বেসরকারি পার্সেল সার্ভিস প্রোভাইডার কোম্পানিগুলো শহরে শক্তিশালী। এ দুয়ের কম্বিনেশন দেশের পার্সেল ডেলিভারি নেটওয়ার্ক কে শক্তিশালী করবে বলে আশা করি।”
প্রধান উপদেষ্টার এই বিশেষ সহকারী লিখেছেন, “বিকাশমান ই-কমার্সকে সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে শহর ও গ্রামের ঘরে ঘরে অতি দ্রুত পৌঁছতে সক্ষম এমন একটি পার্সেল ডেলিভারি ব্যবস্থা দরকার। পাশাপাশি আসন্ন আমের মৌসুমে ডাক বিভাগকে কীভাবে কাজে লাগানো যায় তার জন্য আমরা পরিকল্পনা তৈরি করছি।”
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের ডাক ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক একাধিকবার ডাক বিভাগ, বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি লিমিটেড-বিটিসিএল ও টেলিফোন শিল্প সংস্থাকে বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেওয়ার কথা বলেছিলেন।
গত বছরের ৪ জুন ডাক বিভাগের একটি অনুষ্ঠানে গিয়ে পলক সেখানকার অচল গাড়ির হিসাব চান। তিনি বলেছিলেন, অদক্ষতা ও অব্যবস্থাপনায় ডাক বিভাগের কোটি কোটি টাকার সার্ভিস ডেলিভারি গাড়ি অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে আছে। স্মার্ট সার্ভিস পয়েন্ট কাজে লাগানো যায়নি। সারা দেশে থাকা ডাক বিভাগের মূল্যবান জমিও ব্যবহার করতে পারেনি ডাক বিভাগ। গাড়ি ও জমির সঠিক ব্যবহার করতে না পারায় ডাক বিভাগ বছরে ৭০০ কোটি টাকা লোকসান গুনছে বলে তিনি দাবি করেছিলেন।
তিনি বলেছিলেন, লোকসান কমাতে প্রয়োজনে ডাক বিভাগের গাড়ি ও জমি বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেওয়া হবে।
অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত বছরের ২০ অগাস্ট ডাক বিভাগের সাবেক মহাপরিচালক সুধাংশু শেখর ভদ্রের বিরুদ্ধে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক। সে মামলায় একটি প্রকল্পের আওতায় ১৫ কোটি টাকার সার্ভার ও ইউপিএস কেনার অর্থ ‘নয় ছয়’ করার অভিযোগ আনা হয়েছে।
এ মামলায় তার সঙ্গে ডেপুটি পোস্ট মাস্টার জেনারেল মোস্তাক আহমেদকে আসামি করা হয়। দুর্নীতি ও শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে ২০২০ সালে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানো হয়েছিল সুধাংশু শেখর ভদ্রকে।