বৃষ্টিপাতে নদ-নদীর পানি বাড়লেও এখন পর্যন্ত সব জায়গায় বিপৎসীমার নিচ দিয়েই প্রবাহিত হচ্ছে।
Published : 27 Sep 2024, 06:15 PM
আশ্বিনের দ্বিতীয় সপ্তাহে টানা তিন দিনের বৃষ্টিতে নদ-নদীর পানি বাড়লেও রোববার থেকেই তা কমে আসতে পারে বলে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে।
বৃষ্টিপাতে নদ-নদীর পানি বাড়লেও এখন পর্যন্ত সব জায়গায় বিপৎসীমার নিচ দিয়েই প্রবাহিত হচ্ছে।
বন্যা তথ্য কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান শুক্রবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “রংপুর ও সিলেটে নদীর পানি বাড়ছে; পরবর্তী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত বাড়বে। এরপর ২৪ ঘণ্টা পানি স্থিতিশীল থাকবে, তারপর থেকে পানি কমতে থাকবে।”
বন্যা তথ্যকেন্দ্র নিয়মিত বুলেটিনে বলেছে, “রংপুর বিভাগের তিস্তা ও ধরলা নদীর পানি বাড়ছে, অন্যদিকে দুধকুমার নদীর পানি স্থিতিশীল আছে এবং বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।”
আবহাওয়া সংস্থাগুলোর বরাত দিয়ে বুলেটিনে বলা হয়, “আগামী ২৪ ঘণ্টায় রংপুর বিভাগ ও এর সংলগ্ন উজানে অতি ভারি বৃষ্টি হতে পারে। পরের দুই দিন এই প্রবণতা কমে আসতে পারে। ফলে তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদীর পানি আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত দ্রুত বাড়তে পারে। পরবর্তী এক দিন পর্যন্ত স্থিতিশীল এবং এর পরের এক দিনে কমতে পারে।”
তবে আগামী ২৪ ঘণ্টায় লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর ও কুড়িগ্রাম জেলার তিস্তা নদীর পানি সতর্কসীমায় প্রবাহিত হয়ে সংশ্লিষ্ট চরাঞ্চল এবং কিছু নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে। সেইসঙ্গে আগামী তিন দিন ধরলা ও দুধকুমার নদীর পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে।
বন্যা তথ্য কেন্দ্র বলছে, রংপুর বিভাগের আপার করতোয়া, আপার আত্রাই, টাঙ্গন, পুনর্ভবা, ইছামতি-যমুনা ও যমুনেশ্বরী নদীর পানি বাড়ছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় এসব নদীর পানি বাড়তে পারে, যা পরবর্তী এক দিন স্থিতিশীল থাকতে পারে। এর পরের একদিনে পানি কমতে পারে।
বর্তমানে রংপুর বিভাগে ব্রহ্মপুত্র ও তার ভাটিতে যমুনা নদীর পানিও বাড়ছে। আগামী পাঁচ দিন ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদীর পানি স্থিতিশীল থাকতে পারে।
বুলেটিনে বলা হয়, রাজশাহী বিভাগের গঙ্গার নদীর পানি কমছে ও তার ভাটিতে পদ্মা নদীর পানি স্থিতিশীল রয়েছে। আগামী দুই দিন গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানি ধীর গতিতে কমতে পারে, পরবর্তী এক দিন স্থিতিশীল এবং এর পরের দুই দিন বাড়লেও বিপৎসীমার নিচে থাকতে পারে।
সিলেটে সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর পানি বাড়ছে। পরবর্তী তিন দিনে তা কমতে পারে। মনু, খোয়াই, ধলাই নদীর পানি কমছে।
অন্যদিকে সোমেশ্বরী, ভুগাই নদীর পানি বাড়ছে এবং সারিগোয়াইন ও কংস নদীর পানি স্থিতিশীল রয়েছে। পরবর্তী তিন দিনে এসব নদীর পানি কমতে পারে।
বর্তমানে চট্টগ্রাম বিভাগের মুহুরী, ফেনী, সাঙ্গু, মাতামুহুরী, গোমতী নদীর পানি কমছে, তবে হালদা নদীর পানি স্থিতিশীল আছে। আগামী তিন দিন চট্টগ্রাম বিভাগ ও এর সংলগ্ন উজানে ভারি বৃষ্টির কম প্রবণতা রয়েছে, ফলে চট্টগ্রাম বিভাগের নদীর পানি কমতে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় রংপুর বিভাগের অনেক জায়গায়; ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের দুয়েক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি বৃষ্টি হতে পারে।
শুক্রবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১৯৭ মিলিমিটার বৃষ্টি ঝরেছে দিনাজপুরে।
এছাড়া নীলফামারীর সৈয়দপুরে ১৮৩, পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ১৭৪, নীলফামারীর ডিমলায় ১৪১, রংপুরে ১৩১ ও নওগাঁর বদলগাছীতে ১০২ মিলিমিটারসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় কম-বেশি বৃষ্টি হয়েছে।
সাধারণত ২৪ ঘণ্টায় ১ থেকে ১০ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে তাকে হালকা, ১১ থেকে ২২ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে তাকে মাঝারি, ২৩ থেকে ৪৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে তাকে মাঝারি ধরনের ভারি, ৪৪ থেকে ৮৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে তাকে ভারি এবং ৮৮ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি রেকর্ড হলে তাকে বলা হয় অতিভারি বৃষ্টিপাত।
পুরনো খবর