ফেইসবুকে মন্তব্য নিয়ে বিতর্কের জেরে চট্টগ্রাম বন্দর মহিলা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সেলিনা আক্তার শেলীকে সাময়িক বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে বিভিন্ন সংগঠন।
সোমবার এই দাবি জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম।
সেলিনা শেলী কবি হিসেবেও পরিচিত। ফেইসবুকে একটি ‘ফান পোস্টে’ ধর্ম নিয়ে তার এক মন্তব্যের পর চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ তাকে কলেজের পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করে।
বরখাস্তের আদেশে তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে বিভাগীয় মামলা করার কথাও বলা হয়।
বিবৃতিতে উদীচীর সভাপতি বদিউর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে বলেন, মঙ্গল শোভাযাত্রা নিয়ে সাম্প্রদায়িক, ধর্মান্ধ গোষ্ঠী যে বিতর্ক তৈরি করে, তার পরিপ্রেক্ষিতে সেলিনা শেলী ফেইসবুকে একটি হাস্যরসাত্মক পোস্ট দেন।
সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বরখাস্ত করার এই সিদ্ধান্ত ‘মতপ্রকাশের স্বাধীনতার জন্য হুমকিস্বরূপ’ বলা হয় উদীচীর বিবৃতিতে।
সেলিনা শেলীকে স্বপদে বহালের পাশাপাশি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবিও জানান উদীচীর নেতারা।
চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের বিবৃতিতে বলা হয়, “বন্দর কর্তৃপক্ষ কবি সেলিনা শেলীকে শুধু বরখাস্ত করেই ক্ষান্ত হননি, তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করারও হুমকি দেয়। এটি বন্দর কর্তৃপক্ষের চরম অগণতান্ত্রিক ও স্বৈরাচারী মনোভাবের প্রকাশ।”
চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সভাপতি নিখিল দাস ও সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেনও সেলিনা শেলীকে বন্দর মহিলা কলেজে তার পদে পুনর্বহালের দাবি জানান।
সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরামের সভাপতি শম্পা বসু ও সাধারণ সম্পাদক দিলরুবা নূরীর দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়, “সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের একটি ‘ফান পোস্ট’কে কেন্দ্র করে এহেন সিদ্ধান্ত কর্তৃপক্ষের স্বৈরাচারী ও অগণতান্ত্রিক চরিত্রের প্রকাশ। দেশে মানুষ মত প্রকাশের স্বাধীনতার জন্য আন্দোলন করছে, আর একজন কবি ও শিক্ষককে মতপ্রকাশের জন্য বরখাস্ত করা হচ্ছে।
“সরকারের স্বৈরাচারী মনোভাব এহেন সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে প্রভাব তৈরি করেছে। অবিলম্বে শিক্ষক সেলিনা আক্তার শেলীর বরখাস্তের সিদ্ধান্ত বাতিল করে তাকে স্বপদে বহাল করতে হবে।”