‘ইন্ডিয়া বয়কট’ নিয়ে বিএনপির ‘হিপোক্রেসি’ দেখছেন হাছান

“আপনারা ভারত থেকে আসা পেয়াঁজ খাবেন, আপনাদের নেত্রী ভারত থেকে আসা শাড়ি পরিধান করবেন,” বলেন তিনি।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 March 2024, 01:10 PM
Updated : 23 March 2024, 01:10 PM

ভারতীয় পণ্য বর্জনে ‘ইন্ডিয়া বয়কট’ ডাক দিয়ে বিএনপি দেশের বাজার অস্থিতিশীল করতে চাইছে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।

তিনি বলেছেন, “কদিন আগে ওদের নেতা ভারতে চিকিৎসা নিতে গিয়েছিলেন, ভারতে চিকিৎসা নিতে যাবেন, আবার আপনারা ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দিবেন - এগুলো হিপোক্রেসি (ভণ্ডামি) ছাড়া অন্য কোনো কিছু নয়। বিএনপির আসল উদ্দেশ্য হচ্ছে দেশে বাজার অস্থিতিশীল করে পণ্যের মূল্য বাড়ানো।”

শনিবার দুপুরে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে উন্নয়ন সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ কথা বলেন।

বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে হাছান মাহমুদ বলেন, “আপনারা ভারত থেকে আসা পেয়াঁজ খাবেন, আপনাদের নেত্রী ভারত থেকে আসা শাড়ি পরিধান করবেন, আপনাদের নেত্রী- যেগুলো মাঠে গলা ফাটায়, তারাও আবার ভারতীয় শাড়ি পরবেন, ভারত থেকে আসা গরুর মাংস দিয়ে আপনারা ইফতার করবেন, সেহেরি খাবেন।”

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান বলেন, “ভারতীয় পণ্য বর্জনের যারা ডাক দিয়েছে, তাদের সাথে শামিল হয়ে রিজভী সাহেব নিজের পরনের শালটিও জ্বালিয়ে দিয়েছে। আসলে শালটি ভারত থেকে কিনেছিল নাকি বঙ্গবাজার থেকে কিনেছে আমি জানি না।”

চট্টগ্রামের উন্নয়ন সমন্বয় সভায় জলাবদ্ধতা প্রকল্প নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “জলাবদ্ধতা প্রকল্পের সমন্বয়ের ওপর আমরা গুরুত্ব দিয়েছি। প্রকল্প শেষ হতে আরো আড়াই বছর বাকি আছে। এই আড়াই বছর সময়ের মধ্যে জনগণের যাতে কোনো ভোগান্তি না হয়, সেটির ওপর গুরুত্ব দিয়ে আমরা আলোচনা করেছি।”

হাছান মাহমুদ বলেন, “আপনারা জেনে খুশি হবেন, আজকে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বে-টার্মিনালের জন্য ইতিমধ্যে পাঁচশ একর জায়গা প্রধানমন্ত্রী বিনামূল্যে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করেছেন। আরো ৩০০ একরের বেশি জায়গা তারা পাবে, সেটির জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষ আবেদন করেছে।

“ইতিমধ্যেই ডিপি ওয়ার্ল্ড এবং সিঙ্গাপুর পোর্ট অথরিটির সাথে চট্টগ্রাম বন্দর এমওইউ স্বাক্ষর করেছে। এখানে তিনটি ভাগে কাজ হবে। একটি চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ করবে। আরেকটি সিঙ্গাপুর বন্দর কর্তৃপক্ষ করবে এবং  অন্যটি ডিপি ওয়ার্ল্ড করবে। ওয়ার্ল্ড ব্যাংকসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক অর্থলগ্নিকারী প্রতিষ্ঠানও সেখানে যুক্ত হচ্ছে। এটা একটি বড় অগ্রগতি।”

পররাষ্ট্র মন্ত্রী বলেন, “বে-টার্মিনাল হলে সেটি চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ে আরো বড় একটি নতুন বন্দর হবে, যেটি সমগ্র বাংলাদেশের জন্য একটি নতুন সম্পদ হবে এবং একইসাথে এই বে-টার্মিনাল দিয়ে ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যসমূহের পণ্য সরবরাহ আমরা করতে পারব।

“এছাড়া চট্টগ্রামে পাহাড়কাটা বন্ধ ও যানজট নিরসনসহ সার্বিক অনেক বিষয় নিয়ে সমন্বয় সভায় আমরা আলোচনা করেছি। আমরা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি, প্রতি তিনমাস পরপর আমরা এরকম সমন্বয় সভা করব।”

চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মো. ফখরুজ্জামানের সঞ্চালনায় সমন্বয় সভায় উপস্থিত ছিলেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়েশা খান, শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী নজরুল ইসলাম চৌধুরী, সংসদ সদস্য মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী, মহিউদ্দিন বাচ্চু, আবদুচ ছালাম ও এম এ মোতালেব, বিভাগীয় কমিশনার তোফায়েল ইসলাম, ডিআইজি নুরে আলম মিনা, সিএমপি কমিশনার কৃষ্ণপদ রায়।