“পুলিশ ভেরিফিকেশন থাকবে, তবে সেখানে প্রার্থী বা তার আত্মীয়-স্বজনের রাজনৈতিক বিবেচনা আমলযোগ্য হবে না,” বলেন তিনি।
Published : 18 Nov 2024, 10:05 PM
সরকারি চাকরিতে পুলিশ ভেরিফিকেশনের ক্ষেত্রে কারও রাজনৈতিক পরিচয় ‘বিবেচনা করা হবে না’ বলে মন্তব্য করেছেন পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রধান সফর রাজ হোসেন।
সোমবার স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর সঙ্গে মতবিনিময়ের পর সচিবালয়ে তিনি বলেন, “ব্যাংকসহ বিভিন্ন সরকারি চাকরির জন্য পুলিশ ভেরিফিকেশন করতে হয়। ১৯২৮ সাল থেকে এ পদ্ধতি চলে আসছে। পুলিশ ভেরিফিকেশনের ক্ষেত্রে দলীয় বা রাজনৈতিক বিবেচনাকে প্রাধান্য দেওয়া হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।
“পুলিশ ভেরিফিকেশন থাকবে, তবে সেখানে প্রার্থী বা তার আত্মীয়-স্বজনের রাজনৈতিক বিবেচনা আমলযোগ্য হবে না। আর এক্ষেত্রে এক নম্বর ডকুমেন্ট হিসেবে জাতীয় পরিচয়পত্রকে বিবেচনায় নেওয়া হবে।”
জুলাই-অগাস্টের গণআন্দোলনের পর গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার গত ১১ সেপ্টেম্বর পুলিশ সংস্কার কমিশন গঠন করে। এ কমিশন গত ৬ অক্টোবর থেকে কাজ শুরু করেছে এবং আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে কমিশন রিপোর্ট জমা দেবে বলে জানান সফর রাজ হোসেন।
পুলিশ সংস্কার কমিশনের সুপারিশের মধ্যে কিছু ‘স্বল্প সময়ে বাস্তবায়ন সম্ভব’ বলে জানান কমিশন প্রধান।
তার ভাষ্য, “কিছু সুপারিশ বাস্তবায়ন করতে দীর্ঘ সময় ও কিছু সুপারিশ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে অর্থের প্রয়োজন রয়েছে। আর কিছু সুপারিশ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সরকারি আইন ও বিধিবিধান পাল্টাতে হবে। আমাদের দায়িত্ব শুধু সুপারিশ করার এবং বাস্তবায়নের দায়িত্ব সরকারের।”
সংস্কার কমিশনের বৈঠকে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনার কথা জানিয়ে সফর রাজ হোসেন বলেন, “১৮৯৮ সালের ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারা অনুযায়ী পুলিশকে ওয়ারেন্ট ছাড়া গ্রেপ্তার করার ক্ষেত্রে হাই কোর্টের নির্দেশনা মানতে হবে। কার্যবিধির ১৬৭ ধারায় যেখানে পুলিশ রিমান্ডে নেয়, সেটির ক্ষেত্রেও হাই কোর্টের নির্দেশনা মানতে হবে। ওয়ারেন্ট ছাড়া কাউকে গ্রেপ্তারের ক্ষেত্রে তার পরিবারকে ফোনে জানাতে হবে।”
তিনি বলেন, “দুর্নীতি আমাদের এক নম্বর শত্রু। পুলিশসহ সরকারের সব বিভাগকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখার চেষ্টা করতে হবে। আমরা গত ১৫ বছরসহ নিকট অতীতে দেখেছি পুলিশসহ অন্যান্য বিভাগগুলোতে কীভাবে রাজনৈতিক বিবেচনায় কাজ হয়েছে। অনেকে দুর্নীতি করেছে এবং পদোন্নতি নেওয়ার চেষ্টা করেছে৷ এসব বন্ধে সুপারিশের কাজ চলছে।”
সোমবারের বৈঠকে পুলিশ সংস্কার কমিশনের সদস্য সাবেক অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ ইকবাল, সাবেক যুগ্মসচিব মোহাম্মদ হারুন চৌধুরী, সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক শেখ মো. সাজ্জাত আলী, লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের যুগ্মসচিব (ড্রাফটিং) মো. রফিকুল হাসান, পুলিশের ডিআইজি মো. গোলাম রসুল, পুলিশ ট্রেনিং সেন্টার (পিটিসি) টাঙ্গাইলের কমান্ডেন্ট (ডিআইজি) মোহাম্মদ আশফাকুল আলম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক শাহনাজ হুদা, মানবাধিকার কর্মী এ এস এম নাসিরউদ্দিন এলান ও শিক্ষার্থী প্রতিনিধি মো. জারিফ রহমান উপস্থিত ছিলেন।