"জনগণকে সেবা প্রদানই পুলিশের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। সেবা দেওয়ার মাধ্যমেই জনগণের কাঙ্ক্ষিত পুলিশ বাহিনী হিসেবে গড়ে তুলতে হবে”, বলেন আইজিপি।
Published : 16 Nov 2024, 10:13 PM
রাজধানীতে একের পর এক ছিনতাই, ডাকাতি, খুনের মধ্যেও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ‘অনেক উন্নতির’ দাবি করেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার মো. মাইনুল ইসলাম।
পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মো. ময়নুল ইসলাম বলেছেন করেছেন, কোনো অপরাধ ঘটলে তা আড়াল না করে প্রকৃত অপরাধীদের গ্রেপ্তার করতে হবে।
শনিবার রাজারবাগে পুলিশ মিলনায়তনে ঢাকা মহানগর পুলিশের অক্টোবর মাসের মাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভায় তারা এসব দাবি করেন। এ সময় ‘অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে’ পুলিশকে ‘জনগণের বাহিনীতে’ পরিণত করার লক্ষ্যের কথাও বলেন আইজিপি।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা জানানো হয়।
নগর যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম) মো. ফারুক হোসেন সভায় অক্টোবর মাসে রাজধানীর অপরাধ পরিস্থিতির চিত্র তুলে ধরেন। এর মধ্যে ছিল ডাকাতি, দস্যুতা, চুরি, সিঁধেল চুরি, খুন, অপমৃত্যু, সড়ক দুর্ঘটনা, নারী ও শিশু নির্যাতন, ধর্ষণ, মাদকদ্রব্য ও অস্ত্র উদ্ধার এবং মামলা বিষয়ক তথ্য।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, “দায়িত্ব নেওয়ার সময় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির যে অবস্থা ছিল, সেই পরিস্থিতি থেকে অনেক উন্নত হয়েছে।”
সহকর্মীদের এই কৃতিত্ব দিয়ে তিনি বলেন, "আপনারা কাজ করছেন বলেই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির এই ‘উন্নতি’ হয়েছে।”
পুলিশ যে কাজগুলো করে তাতে চ্যালেঞ্জ রয়েছে মন্তব্য করে মাইনুল বলেন, “সামনের দিনগুলোতে যে চ্যালেঞ্জ আসবে, সেগুলো যাতে আমরা মোকাবেলা করতে পারি, সেই লক্ষ্যে কাজ করতে হবে।"
চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি, দস্যুতা ও চাঁদাবাজির ঘটনার বিষয়ে পুলিশি তৎপরতা বৃদ্ধির বিষয়ে জোর দেন ঢাকার পুলিশ প্রধান। ‘অপরাধপ্রবণ স্থানগুলো’ চিহ্নিত করে চেকপোস্ট ও টহল বাড়ানোর পাশাপাশি জনগণের সম্পৃক্ততার ওপরও গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
‘অপরাধ আড়াল করা যাবে না’
বক্তব্যের শুরুতে আইজিপি ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে নিহতদের আত্মার শান্তি কামনা এবং তাদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করেন। স্মরণ করেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় প্রাণ উৎসর্গকারী ও আহত পুলিশ সদস্যদেরকেও।
পুলিশ রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ একটি সংস্থা উল্লেখ করে তিনি বলেন, "জনগণকে সেবা প্রদানই পুলিশের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। সেবা দেওয়ার মাধ্যমেই জনগণের কাঙ্ক্ষিত পুলিশ বাহিনী হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। সকল পুলিশ সদস্যকে একটি টিম হিসেবে কাজ করতে হবে।"
অপরাধের হটস্পটগুলো চিহ্নিত করে সেখানকার নাগরিক কমিটিকে শক্তিশালী করা এবং তাদের সঙ্গে সমন্বয় করে অপরাধ প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার তাগিদও দেন পুলিশ প্রধান।
কোনো অপরাধ আড়াল না করার নির্দেশ দিয়ে তিনি বলেন, "অপরাধী যেই হোক তাকে ছাড় দেওয়া যাবে না। তবে কোনো মামলায় নিরীহ ও নির্দোষ ব্যক্তি যাতে হয়রানির শিকার না হয়, সে ব্যাপারে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে।"
গোয়েন্দা নির্ভর পুলিশিংয়ের ওপর গুরুত্বারোপ করে আইজিপি বলেন, “চুরি, ছিনতাই, ‘কিশোর গ্যাং’সহ অন্যান্য সংঘবদ্ধ অপরাধের ব্যাপারে আগে থেকেই গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করে তা প্রতিরোধ করতে হবে। অপরাধ সংঘটনের পূর্বেই অপরাধ প্রতিরোধ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”
ওসিদের ভূমিকার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, " থানায় সেবা নিতে আসা মানুষের সাথে ভালো ব্যবহার করতে হবে। কারণ, যিনি থানায় এসেছেন, ধরে নিতে হবে তিনি কোনো না কোনো ভাবে বাদী, ভুক্তভোগী বা সাক্ষী। তাদের সাথে ভালো ব্যবহারের মাধ্যমে যথাযথ পুলিশি সেবা প্রদান করে পুলিশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে হবে।"
পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য পুলিশকে আধুনিক প্রশিক্ষণ দেওয়ার বিষয়েও আশ্বাস দেন আইজিপি। সেই সঙ্গে তিনি পুলিশ সদস্যদের বিভিন্ন সমস্যা ও চ্যালেঞ্জের কথা শুনে এবং পর্যায়ক্রমে তা সমাধানের আশ্বাস দেন।
সভায় অক্টোবর মাসে ‘ভালো কাজের’ স্বীকৃতি হিসেবে বিভিন্ন পদমর্যাদার কর্মকর্তাগণকে পুরস্কৃত করেন পুলিশ প্রধান।
সভায় ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অ্যাডমিন) ফারুক আহমেদ, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) মো. ইসরাইল হাওলাদার, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) রেজাউল করিম মল্লিক, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (সিটিটিসি) মো. মাসুদ করিম, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) খোন্দকার নজমুল হাসান পিপিএম-বার, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (লজিস্টিক্স, ফিন্যান্স অ্যান্ড প্রকিউরমেন্ট) হাসান মো. শওকত আলী, যুগ্ম পুলিশ কমিশনার, উপ-পুলিশ কমিশনার, সব থানার ওসিরাও সভায় উপস্থিত ছিলেন।
মালামালের সঙ্গে ফুটফুটে শিশুটিকেও নিয়ে গেছে ডাকাতরা
২৫ মিনিটে গৃহকর্ত্রীকে বেঁধে লুটপাট শেষে সন্তানকে নিয়ে যায় 'ডাকাতরা'
উদ্ধারের পর মায়ের কোলে ফিরল শিশু জাইফা
'সমন্বয়ক' পরিচয়ে ইডেন উপাধ্যক্ষের বাসায় ডাকাতি, দুজন গ্রেপ্তার
মধ্যবিত্তের মোহাম্মদপুর অপরাধীদের তীর্থক্ষেত্র হয়ে উঠল কেন?