এ ঘটনায় আহত তিনজনের মধ্যে একজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
Published : 21 Oct 2024, 09:14 PM
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে এক পরিচালকসহ কয়েকজন কর্মকর্তার নিয়োগকে কেন্দ্র করে বিএনপি ও জামায়াতপন্থি চিকিৎসকদের দুটি পক্ষ দ্বন্দ্বে জড়িয়েছে। এ ঘটনায় মারামারিতেও জড়িয়েছেন এ দুই পক্ষের সমর্থক চিকিৎসকরা।
সোমবার ঢাকার মহাখালীতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে বিএনপিপন্থি ও জামাতপন্থি হিসেবে পরিচিত এ দুই সংগঠনের চিকিৎসকদের মধ্যে মারামারির এ ঘটনা ঘটে; যাতে আহত হয়েছেন তিনজন। এদের মধ্যে একজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক, লাইন ডিরেক্টরসহ নিয়োগ পাওয়া কয়েকজন কর্মকর্তাকে ‘ফ্যাসিবাদের দোসর‘ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে বিএনপি সমর্থিত চিকিৎসকদের সংগঠন ড্যাব। এসব কর্মকর্তার নিয়োগ বাতিলের দাবিতে সোমবার সকাল থেকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রবেশপথের সামনে মিছিল-সমাবেশ করে এ সংগঠনের চিকিৎসকরা। তাদের বাধায় আগের দিনও ওই চিকিৎসকরা অধিদপ্তরে আসতে পারেননি।
অপরদিকে এসব কর্মকর্তাকে অধিদপ্তরে প্রবেশে সহায়তা করতে সকাল থেকেই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সামনে অবস্থান নেন জামায়াতে ইসলামী সমর্থিত ন্যাশনাল ডক্টরস ফোরামের (এনডিএফ) চিকিৎসকরা।
এ অবস্থায় সকাল ১০টার দিকে ড্যাবের চিকিৎসকরা এনডিএফের চিকিৎসকদের ওপর হামলা করে বলে অভিযোগ করা হয়।
হামলায় ইমরান, জোবায়ের ও শাহরিয়ার নামে তিন চিকিৎসক আহত হয়েছেন। ইমরানের বুকের পাঁজর ভেঙে যাওয়ায় তাকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এনডিএফের আইন বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল কাদির নোমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ডা. আবু হানিফকে প্রশাসন শাখার পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হলেও ড্যাবের একটা অংশ তাকে অফিসে আসতে দিচ্ছে না।
“তিনি এক মাস ধরে অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে পরিচালকের পদে আছেন। তারা বলছে তিনি ‘ফ্যাসিবাদের’ সঙ্গে জড়িত। কিন্তু ছাত্র জীবনে আমাদের একজন কর্মী ছিলেন। কিন্তু যেহেতু তিনি প্রশাসনিক লাইনে গিয়েছেন এজন্য সরাসরি কোনো দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। ড্যাবের একটা অংশ তাদের স্বাস্থ্যসংশ্লিষ্ট কাউকে এখানে বসানোর চেষ্টা করছে। এজন্যই বাধা দিচ্ছে।”
ড্যাবপন্থি চিকিৎসক কাজী লুৎফর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সকালে ঘটনার শুরুর দিকে সেখানে তিনি ছিলেন না। তিনি ১১টার দিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে গিয়েছিলেন।
“আমি সেখানে গিয়ে জেনেছি সকাল ৮টা থেকে এনডিএফের চিকিৎসকরা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সামনে জড়ো হয়। সেখানে আগে থেকেই ড্যাব প্রোগ্রাম নির্ধারিত ছিল। এনডিএফের চিকিৎসকরা ড্যাবের ব্যানার, ফেস্টুন ছিঁড়ে ফেলেছে। ১০টার দিকে ড্যাবের চিকিৎসকরা সেখানে গিয়ে তাদের জায়গা ছেড়ে দিতে বলে। এ নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়েছে, মারামারি হয়নি।”
সোমবার বিকেলেও সেখানে এনডিএফের চিকিৎসকরা অবস্থান করছিলেন।
সাদ্দাম হোসেন নামে একজন চিকিৎসক বলেন, “হামলার ঘটনায় বনানী থানায় মামলা করবে এনডিএফ।”
গত ৫ অগাস্ট ছাত্র-জনতার তীব্র আন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা।
ক্ষমতার পালাবদলের প্রভাব পড়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরেও। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক, অতিরিক্ত মহাপরিচালকসহ বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তাদের বদলি করা হয়, কাউকে ওএসডি করা হয়।
অধ্যাপক ডা. মো. রোবেদ আমিনকে মহাপরিচালক করার পর তিনি একদিনও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে যেতে পারেননি। পরে তাকে সরিয়ে নতুন মহাপরিচালককে দায়িত্ব দেওয়া হয়।