রোকেয়া আক্তার নামে একজন গ্রাহক ব্যাংকটির চট্টগ্রামের চকবাজার শাখার লকার থেকে অলংকার গায়েবের অভিযোগ করেছেন।
Published : 02 Jun 2024, 11:38 PM
চট্টগ্রামে একটি লকার থেকে একজন গ্রাহকের স্বর্ণালংকার গায়েবের অভিযোগ নিয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছে ইসলামী ব্যাংক। তারা বলছে, গ্রাহকের চাবি ছাড়া লকার খোলার কোনো সুযোগ নেই। লকার বন্ধও করতে হয় গ্রাহকের নিজের।
স্বর্ণালংকারের পরিমাণ নিয়ে সেই গ্রাহক একেকবার একেক তথ্য দিচ্ছেন বলেও দাবি করেছে ব্যাংকটি।
শনিবার সেই রোকেয়া আক্তার নামে সেই গ্রাহকের স্বর্ণ খোয়া যাওয়ার অভিযোগটি সামনে আসার পর রোববার এই ব্যাখ্যা দেওয়া হয় ব্যাংকটি।
একই দিন সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন রোকেয়া। তিনি জানান, ইসলামী ব্যাংকের চকবাজার শাখার লকারে তিনি সাত থেকে আটটি বক্সে প্রায় দেড়শ ভরি স্বর্ণালংকার রেখেছিলেন। গত ২৯ মে ব্যাংকে গিয়ে দেখতে পান, ৯/১০ ভরি ছাড়া অন্য স্বর্ণালংকার উধাও।
লকারের পেছন থেকে দুইটি বক্সে কিছু অলংকার পেলেও অন্য বাক্সে কোনো অলংকার ছিল না বলে ভাষ্য তার।
সেদিন ব্যাংকে যাওয়ার পর যা হয়েছিল, তার বর্ণনা দিয়ে রোকেয়া বলেন, “নিয়ম অনুযায়ী লকার ইনচার্জ মূল ফটক খুলে দেন। ওই দিন তিনি মূল দরজা খুলে দিয়ে আমার কাছে লকার নম্বর কত জানতে চান। আমি নম্বর বলার পর জানান, আমার লকার খোলা।”
গ্রাহক রোকেয়া আক্তার বারী ও তাঁর কন্যা নাসিয়া মারজুকা যৌথ নামে ২০০৬ সাল থেকে ব্যাংকের একটি লকার ব্যবহার করে আসছেন।
এই অভিযোগ নিয়ে তোলপাড় হওয়ার পর ইসলামী ব্যাংকের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট নজরুল ইসলাম সাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “প্রতিটি লকার খোলার জন্য দুটি চাবির প্রয়োজন হয়। যার একটি গ্রাহক ও অপরটি ব্যাংকের নিকট থাকে। গ্রাহকের চাবি ব্যতীত শুধুমাত্র ব্যাংকে রক্ষিত চাবি দিয়ে কোনোভাবেই লকার খোলা সম্ভব নয়।”
ব্যাংকিং নিয়ম অনুযায়ী গ্রাহককে তার লকারের মূল চাবি বুঝিয়ে দেওয়া হয় জানিয়ে এতে বলা হয়, “লকারে রক্ষিত মালামাল ও তার পরিমাণ সম্পর্কে গ্রাহক ব্যতীত ব্যাংকার বা অন্য কোনো ব্যক্তির জানার সুযোগ নেই।”
ইসলামী ব্যাংক জানায়, গত ৮ এপ্রিল গ্রাহক গ্রাহক রোকেয়া আক্তার লকার ব্যবহারের জন্য ব্যাংকে এসে ব্যাংক কর্মকর্তা গ্রাহকের উপস্থিতিতে মাস্টার কি (চাবি) দিয়ে লকার আনলক করেন।
“পরবর্তীতে গ্রাহক যথারীতি তার নিকট রক্ষিত চাবি ব্যবহার করে পরিপূর্ণভাবে লকার খুলে তার কাজ শেষে লকার বন্ধ করে ব্যাংকারকে অবহিত করে চলে যান।”
নিয়ম অনুযায়ী লকার বন্ধ করার সময় ব্যাংকের কারো উপস্থিত থাকার সুযোগ নেই জানিয়ে ব্যাংকের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “একমাত্র তিনিই (গ্রাহক) তার লকার বন্ধ করতে পারেন। গ্রাহক যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যাংক কর্মকর্তা লকার রুমের মূল ফটক নিয়ম মাফিক তাৎক্ষণিক বন্ধ করে দেন।”
গত ২৯ মে রোকেয়া লকার ব্যবহার করতে এসে তার গহনা খোয়া গেছে বলে ব্যাংককে জানান।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “লকার হোল্ডার একবার বলেন তার ৩০০ ভরি স্বর্ণ নাই, কিছুক্ষণ পর আবার জানান ১৫০ ভরি স্বর্ণ নাই এবং কিছুক্ষণ পর আবার জানান ১৫০ ভরির মধ্যে অর্ধেক পেয়েছেন, বাকি অর্ধেক পান নাই।”
চট্টগ্রামের চকবাজার থানার পুলিশ লকার রুম পরিদর্শন করেছে এবং গ্রাহকের অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ে ৩ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে জানিয়ে ইসলামী ব্যাংক বলে, “এ কমিটির প্রদত্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ব্যাংক পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।”
এ বিষয়ে ব্যাংকের পক্ষ থেকে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলেও জানানো হয় বিজ্ঞপ্তিতে।
আরও পড়ুন
ইসলামী ব্যাংকের লকারে রাখা ১৪০ ভরি স্বর্ণ ‘গায়েব’, তদন্তে কমিটি