ইসি সচিব বলেন, নির্বাচনে হস্তক্ষেপ কোথা থেকে, কীভাবে হয় এবং আইনগত কর্তৃত্বের বাইরে নির্বাচনে কেউ হস্তক্ষেপ করে কি না, সেসব নিয়েও খোলামেলা আলোচনা হয়েছে।
Published : 20 Nov 2024, 06:48 PM
সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য বিদ্যমান আইন, বিধিবিধানের সীমাবদ্ধতা দূর করে আইনের প্রয়োগ ও কার্যকারিতা বাড়াতে উদ্যোগ নিতে হবে বলে মনে করেন নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন প্রধান বদিউল আলম মজুমদার।
বুধবার ধারাবাহিক আলোচনার অংশ হিসেবে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিব ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করে সংস্কার কমিশন।
পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখে হয়ে বদিউল আলম মজুমদার আলোচনার বিষয়ে বলেন, “ইসি সচিবের নেতৃত্বে কর্মকর্তাদের সঙ্গে আমরা মতবিনিময় করেছি। উনারা আগে নির্বাচন করেছেন, ভবিষ্যতেও করবেন। উনারা অনেক অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন। কী বিষয়ে আমাদের মনযোগ দেওয়া দরকার এবং অগ্রাধিকার দেওয়া দরকার, সে মতামত নিয়েছি আমরা।”
“অনেকগুলো বিষয়ে আলোকপাত করা হয়েছে, সুস্পষ্ট বিষয়ে তারা লিখিত দেবেন। আলোচনা ফলপ্রসু হয়েছে।”
তিনি বলেন, “নির্বাচনি আইন-কানুন, বিধিবিধান যেগুলো আরও শক্তিশালী করা দরকার, কমিশনের কার্যকারিতা কীভাবে বাড়ানো যায়, সে ব্যাপারে পরামর্শ ছিল। মাঠ প্রশাসন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীসহ যারাই নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করেন তারা যেন আরও সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারেন, সেসব বিষয় নিয়ে আলোচন হয়েছে।”
একটা বিষয় সুস্পষ্টভাবে আলোচনায় এসেছে উল্লেখ করে সংস্কার কমিশন প্রধান বলেন, “সেটা হলো আমাদের আইনকানুন, বিধিবিধানের কিছু সীমাবদ্ধতা আছে, সেগুলো দূরীভূত করা দরকার। কিন্তু সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো প্রয়োগ।
“নির্বাচন কমিশনকে সংবিধান ও আদালতের মাধ্যমে অগাধ ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। আপিল বিভাগের একটা রায়ে বলা হয়েছে, নির্বাচন কমিশনের অন্তর্নিহীত ক্ষমতা আছে। সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচনের খাতিরে তারা বিধিবিধানের সঙ্গে সংযোজনও করতে পারে৷ অগাধ ক্ষমতা দেওয়া ছিল। তবে এটা প্রয়োগের সমস্যা ছিল। এই সমস্যাটা দূরীভূত করতে হবে।”
পরে ইসি সচিব শফিউল আজিম বলেন, “কোন কোন ক্ষেত্রে দুর্বলতা আছে আমরা সেগুলো চিহ্নিত করার চেষ্টা করেছি। মাঠের অভিজ্ঞতা থেকে গণমাধ্যমসহ অংশীজনের কী অভিজ্ঞতা আছে, আমরা সেগুলো নিয়েও আলোচনা করেছি।”
তিনি জানান, নির্বাচনে হস্তক্ষেপ কোথা থেকে, কীভাবে হয়, এবং আইনগত কর্তৃত্বের বাইরে নির্বাচনে কেউ হস্তক্ষেপ করে, সেসব নিয়েও খোলামেলা আলোচনা হয়েছে।
“কোনো রাখঢাক করিনি, যাতে সংস্কার কার্যক্রম ফলপ্রসূ হয়। আলমেটলি মানুষের আশা যেটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং সর্বজন গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করার জন্য যা যা করা দরকার সে সমস্ত সুপারিশ আমরা করেছি। আমরা আশা করি কমিশন সদয় যদি হয়, আমরা আমাদের সুপারিশগুলো আরো কংক্রিট আকারে দিতে পারব।”
সচিবের মতে, আইন প্রয়োগ করার ক্ষেত্রে যাতে নির্বাচন কমিশন, নির্বাচন কমিশনার, কর্মকর্তারা কোনো কর্তৃপক্ষ দ্বারা বাধাগ্রস্ত না হন, অন্য কেউ যাতে এখানে হস্তক্ষেপ করতে না পারে, সেই সুপারিশ রয়েছে।
অন্তর্বর্তী সরকার গত ৩ অক্টোবর 'নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন' গঠন করে। ৯০ দিনের মধ্যে প্রধান উপদেষ্টার কাছে সুপারিশসহ প্রতিবেদন দেওয়ার কথা রয়েছে আট সদস্যের এই কমিশনের।
দেশে আগামীতে অবাধ, অংশগ্রহণমূলক এবং নিরপেক্ষ জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে বিদ্যমান নির্বাচনি ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে মতামত নিচ্ছে সংস্কার কমিশন।
বাংলাদেশে অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন দেখতে চায় কমনওয়েলথ: লুইস গ্যাব্রিয়েল