অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার পেলেন আফরোজা পারভীন

“অনেক নারী আছেন- তাদের প্রতিভা থাকলেও আমার মত পরিবেশ ও পরিবার পায় না; লেখার খাতা পায় না," বলেন তিনি।

এবার ‘অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার’ পেলেন কথাসাহিত্যিক আফরোজা পারভীন। গল্প, উপন্যাস ও শিশুসাহিত্যে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে তিনি ওই পুরস্কার পান।

শুক্রবার শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে তার হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।

অনুষ্ঠানে আফরোজা পারভীনকে সম্মাননা ক্রেস্ট, শুভেচ্ছাপত্র এবং এক লাখ টাকার চেক দেওয়া হয়। পাক্ষিক অনন্যা এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

আফরোজা পারভীন বলেন, “আমি ভাগ্যবান যে আমার পরিবার সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক পরিবার। বাবা-মা আমাকে কখনোই মেয়ে হিসেবে আলাদা করেননি। আমার স্বামী আমাকে লেখার শুধু উৎসাহই দেননি, নিজের সাধ্য মত লেখার উপকরণ কিনে দিয়ে সহযোগিতা করেছেন।

“আমার সন্তানরা সব সময় উৎসাহ দিয়েছে। কিন্তু অনেক নারী আছেন তাদের প্রতিভা থাকলেও আমার মতো পরিবেশ ও পরিবার পায় না; লেখার খাতা পায় না।"

কথাসাহিত্যিক আন্দালিব রাশদী বলেন, “আফরোজা পারভীন তার লেখার মধ্য দিয়ে দৃশ্যপট আঁকতে পারেন। এটা তার লেখার বড় দিক। যখন তার লেখা পড়ি, তখন মনে হয়- দৃশ্য আর চরিত্রগুলো চোখের সামনে ভেসে উঠছে। সব ক্ষেত্রের মতো নারীর সাহিত্যে দাপটের সঙ্গে বিচরণ করছে।"

সাহিত্যিক হামীম কামরুল হক বলেন, “আফরোজা পারভীন একজন গোছানো ধ্রুপদী লেখক। তার লেখা পড়লেই বোঝা যাবে মুক্তিযুদ্ধ তাকে বিশেষভাবে প্রভাবিত করে।"

অনন্যা ও ইত্তেফাক সম্পাদক তাসমিমা হোসেন বলেন, “আমরা এমন একসময় অনন্যা শীর্ষ দশ ও অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার প্রদান শুরু করি, যখন সমাজে নারীকে মূল্যায়ন করা হতো না।"

অনুষ্ঠানের শুরুতে শিশুশিল্পী ইচ্ছে ‘নারী' শিরোনামে একটি কবিতা আবৃত্তি করেন; প্রদর্শন করা হয় সম্মাননাপ্রাপ্ত লেখককে নিয়ে তাপস কুমার দত্ত পরিচালিত প্রামাণ্যচিত্র। লেখক আফরোজা পারভীনকে বরণ করে নেওয়া হয় উত্তরীয় দিয়ে।

নড়াইলে ১৯৫৭ সালে ৪ ফেব্রুয়ারি জন্ম নেওয়া আফরোজা পারভীন পড়াশোনা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। সাহিত্যে অবদান রাখায় বেগম রোকেয়া পদকসহ ৩০টিরও বেশি পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।

আফরোজা সাহিত্যচর্চার পাশাপাশি ‘রক্তবীজ’ নামে একটি পোর্টালের প্রকাশক ও সম্পাদক।