তাহলে একাই ডুবি
মনে কোনো ইরেজার, ডিটারজেন্ট নাই
মধুকোষে স্মৃতি জমা তিক্ত ও মধুর
কেউ আলতো স্পর্শ দ্যায়
কেউ দ্যায় নিঠুর ছোবল
মধ্যিখানে পড়ে বড্ড বিপদেই আছি।
শান্তি স্বস্তি ন্যূনতম কপালে জোটে না
অনুভূতি সংবেদেরও লাজলজ্জা নাই
তারাও সুযোগমত আচ্ছাসে ঠোকরায়
বিপদসঙ্কুল এই গহিনে বিষাদমগ্ন
দিন যাত রাত যায় আসলে কি যায়?
নাকি আরো দীর্ঘতর দুর্বহ বোঝার মত
শক্তিমান ঘুণপোকা কুরে কুরে খায়
ভেবেছি একাই আমি ডুবে মরবো
দ্বন্দ্বে ক্ষরণে দীঘলা প্রেম যমুনায়
গুপ্ত পরাজয়
খরচা হলো অনেক আবেগ। ফল কিন্তু মেলেনি কিছুই
শূন্যতাও এক রকম প্রাপ্তি বলে ধরে নিতে পারি
পূর্ণতার দেখা পাব খুলে যাবে রহস্যের গোপন দরোজা
এইমত ভরসা আশাকে বলি দুঃস্বপ্নেরই নামান্তর
ভাটিদেশে নদীরা ভরাট হয় উর্বরতা নাব্য কমে যায়
মানুষের দগ্ধ মন খাঁ খাঁ শূন্যে ওড়ে একা এতিমপ্রতিম
মানুষের ডানা নাই, থাকলে হয়তো গ্রহান্তরে চলে যেতো ঠিক
অস্ফুট আকাঙ্ক্ষা নিয়ে নৈরাশাপীড়িত হয়ে মনুষ্যমণ্ডল
ক্ষুদ্রতারই চর্চা করে, এগোনোর কথা বলে সভয়ে পেছোয়
অমৃতপুত্রের এই বালখিল্য পরাজয় কতটা শোভন সিদ্ধ
এই প্রশ্ন চরাচরে দোল খায় রাত্রিদিন পাথারে পর্বতে
প্রেতায়িত প্রতিধ্বনি মূর্ত হয় প্রত্যাশিত উত্তর মেলে না
প্রতীক্ষা ও দীঘল দূরন্ত
প্রজাপতি ডানা মেলে উড়িতেছে প্রেম
সোপ্রানোর কণ্ঠে মুক্তি ভালোবাসা ফ্রেম
এই আমি না বুঝেই
আষ্টেপৃষ্ঠে তাতে জড়ালেম
প্রেম পোড়ে, অগ্নিই আরাধ্য তার
পুড়ে টুড়ে একাকার
ভস্ম থেকে হয়তো কোনোদিন
জন্ম নেবে সাহসী অঙ্কুর
সে ভরসা আঁকড়ে আজো বেঁচে আছি
ক্ষত চাটছে নীল ডুমো মাছি
অঙ্কুরের উদগম
আছো কী আদৌ কাছাকাছি?
নাকি বহু দূর?
প্রত্যাবর্তন
তাচ্ছিল্য করেছো যারে
কোন্ মুখে ফিরে আসা
তার কাছে পুনর্বার
শরম শংকার সবই কেন যে গায়েব
সুপ্ত বাসনার তোড়ে
আবেগের প্রবল তাড়নে
সে যদি গ্রহণ করে পুনরায়
উদারতা নিবেদন
নানা দিক বিবেচনা করে
তাহলে পাপের ঘড়া পূর্ণ ও গর্ভিণী হয়
প্রায়শ্চিত্ত করবার পুণ্য কাজে
সর্বহারা এই মন সঁপে দিতে
সুতরাং চলে এসো হে চতুরা নারী
যতটা সম্ভব সব কাজ ফেলে
এই মগ্ন অধমের কাছে তাড়াতাড়ি
শিউলি ফুলে ভুল নিবেদন
অভিমানের শীতল আঁচে
পোড়াতে চাই দুঃখ কষ্ট ভুল
তুমি কেন পুড়ছো বলে
দূরের কষ্টে বিরহ মঞ্জুল
অভিমানকে আঁকড়ে ধরি
যৎসামান্য জড়াজড়ি
ভোরের শিউলি ফুল
কুড়িয়ে মালা গাঁথছো কেন
নিজকে নিজেই করে তুলছো
ব্যথিত উন্মুল
প্রতিকার ন্যূনতম নাই
চিরচেনা যে মানুষ তারই অভ্যন্তরে
পাকাপোক্ত বসতি গেড়েছে
অদেখা অচিন কেউ
লতাগুল্ম বাড়িয়েছে মায়া
কোনোদিনই জানি নাই তারে
মনকে সে মওকামত চোখ ঠারে
সন্তর্পণে চাপাকণ্ঠে হুমকিও দেয়
‘গুম’ করবে, বর্তমানে যেমন চলেছে
অচিনা শত্রুর বড্ড বাড় বাড়ছে
নিয়ন্ত্রণে নাগালে সে নাই
ন্যূনতম প্রতিকার কোথা গেলে পাই
হারাই চেতনা দিশা
কবে লুপ্ত অমানিশা
তার কোনো আলামতও এক্ষণে দেখি না
বিপাকে পড়েছি সাঁই
কিছুটা সুলুক দাও যাবো কোন্ ঠাঁই
আভাস ইঙ্গিত কিছু দৃশ্যমান আপাতত নাই
আঁধারে বিপদে পড়ে সূত্র হাতড়াই...
অমীমাংসা
ধোঁয়া উড়ছে ছাই উড়ছে
এক সময় নিভেছেও নীলাভা
ক্ষত কিন্তু শুকায়নি
কারণ সে ক্ষুধিত আগুনে
একমাত্র আমিই পুড়েছি
সর্বভুক আগুনের মায়া দয়া নাই
কও শুনি আছে কি তোমার?
মেটালে আক্রোশ
বিনিময়ে তোমার সন্তোষ
কতটা সে পেল
জানতে ইচ্ছে করলেও ঠিক
কারো কিন্তু সদুত্তর নাই।