ষাটের দশকে ‘হারান মাঝির বিধবা বৌ এর মড়া’ অথবা 'সোনার গান্ধীমূর্তি’ ছোটগল্প লিখে সাড়া ফেলে দিয়েছিলেন তিনি।
Published : 08 Feb 2023, 04:11 PM
পশ্চিমবঙ্গের আলোচিত ছোটগল্পকার ও ঔপন্যাসিক সুবিমল মিশ্র আর নেই।
হৃদরোগসহ বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগে বুধবার ভোরে ৫টার দিকে তার মৃত্যু হয়। তার বয়স হয়েছিল ৮০ বছর।
ভারতীয় বাংলা সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, ১৯৬৭ সালে প্রকাশিত ‘হারান মাঝির বিধবা বৌ এর মড়া’ অথবা 'সোনার গান্ধীমূর্তি’ ছোটগল্প লিখে বাংলা সাহিত্যজগতে আলোড়ন ফেলে দেওয়া এ সাহিত্যিক সবসময় নিজের মত করেই পথ চলেছেন।
পাঁচ দশকের বেশি সাহিত্য জীবনে নামি-দামি সংবাদপত্র বা সাহিত্যপাতায় লেখেননি। তার সাহিত্যকর্ম দুই বাংলার মননশীল লিটল ম্যাগাজিনে প্রকাশিত ও সমাদৃত হয়েছে।
নিজের লেখা গল্প, উপন্যাসকে ‘অ্যান্টি-গল্প’ ও ‘অ্যান্টি-উপন্যাস’ বলতেন সুবিমল মিশ্র। ‘প্রতিষ্ঠানবিরোধী’ সাহিত্যিক হিসেবে আলাদাভাবে তাকে মূল্যায়ন করা হয়।
নিজের প্রথম বইসংগ্রহের ভূমিকায় সুবিমল লিখেছিলেন, “তোমার লেখা যেন কোনওভাবেই মহৎ না হয়ে যায়।” এ বক্তব্যের যে নিহিতার্থ, সেই দর্শনেই সারা জীবন অটল থেকেছেন এ সাহিত্যিক।
তার লেখা উপন্যাসের মধ্যে রয়েছে- ‘তেজস্ক্রিয় আবর্জনা’, ‘আসলে এটি রামায়ণ চামারের গল্প হয়ে উঠতে পারতো’, ‘নাঙা হাড় জেগে উঠেছে’, ‘রঙ যখন সতর্কীকরণের চিহ্ন’, ‘কণ্ঠ পালক ওড়া’, ‘হাড়মটমটি’, ‘ওয়ান পাইস ফাদার মাদার’ ও ‘চেটে চুষে চিবিয়ে গিলে’।
অনেক ছোটগল্প ও প্রবন্ধ লিখেছেন সুবিমল মিশ্র, যেগুলো প্রকাশিত হয়েছে বই আকারে। বেশিরভাগ বই নিজেই সম্পাদনা, প্রকাশ ও বিক্রয়ের কাজ করেছেন।
দক্ষিণ কলকাতার শম্পা মির্জানগরের বাসিন্দা সুবিমল মিশ্র প্রথম জীবনে শিক্ষকতা করেছেন। স্ত্রী ও এক মেয়ে রয়েছে তার।
সাহিত্য অঙ্গনে পথচলার মধ্যেই দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগের সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। সেইসঙ্গে বার্ধক্যজনিত নানা সমস্যায় তিনি চিরবিদায় নিলেন।