Published : 24 May 2024, 04:03 PM
একথা জোর দিয়েই বলা হয় যে, নজরুল অসাম্প্রদায়িক, কম্যুনিজম দ্বারা প্রভাবিত এবং পাকিস্তান-আন্দোলনের বিরোধী ছিলেন। দৈনিক নবযুগ পত্রিকায় তিনি পাকিস্তান আন্দোলনের অন্তঃসারশূন্যতা প্রতিপন্ন করে সম্পাদকীয় লিখেছিলেন ‘পাকিস্তান না ফাঁকিস্তান'। এ দ্বারা একশ্রেণীর আলোচক বলতে চান নজরুল ইসলামের ‘পাকিস্তান না ফাঁকিস্তান' শীর্ষক রচনার বক্তব্য সঠিক ছিল না, কারণ এ কথা যখন ১৯৪২ সালে লেখা হয়, তাঁর পাঁচ বছরের মাথায় পাকিস্তান প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল (১৯৪৭ সালে)।
কিন্তু তাঁর বক্তব্য যে সঠিকই ছিল, তা আবার ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের অভ্যন্তর থেকে ‘স্বাধীন বাংলাদেশ' সৃষ্টি হওয়ায় প্রমাণিত হয়। অতএব ‘পাকিস্তান না ফাঁকিস্তান' যেসব যুক্তি দ্বারা তিনি রচনা করেছিলেন তাতে প্রাধান্য পেয়েছিল বাংলাদেশের স্বতন্ত্র রাষ্ট্রকাঠামোর প্রশ্ন। দুই সংস্কৃতি, ভিন্ন ভূ-প্রকৃতি বিশিষ্ট অঞ্চলসমূহের এক রাষ্ট্র হওয়ার বিরুদ্ধেই তিনি মতামত ব্যক্ত করেছিলেন সেদিন। তেমনি কমিউনিস্ট ভাবাপন্ন, অসাম্প্রদায়িক মানবতাবাদী কবি নজরুল ইসলামের রচনায় শিল্পীর স্বাধীনতায় আস্থা স্থাপন করে জাতির সুষম বিকাশের স্বার্থে দুর্বলপক্ষ মুসলমান সম্প্রদায়ের জাগরণকে গুরুত্ব দিয়েছিলেন, আর বাংলা সাহিত্যকে সহজ স্বাভাবিক শক্তি ও সৌন্দর্যদানের জন্য মুসলিম সভ্যতা ও সংস্কৃতির ভাব ও ভাষার শব্দ-সম্পদ সংযুক্ত করেছিলেন বাংলা ভাষায়। সেদিন বাংলা ভাষার সেরা লেখকগণ একদিকে যেমন মুসলমানি আরবি-ফারসি শব্দ আত্মীকরণের বিপক্ষে মতামত দিয়েছিলেন, তেমনি সংশয়ও প্রকাশ করা হয়েছিল বাংলা সাহিত্যে নজরুলের স্থায়িত্ব নিয়ে। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে আজ নজরুলের সাহিত্যের শাশ্বত মূল্যের প্রশ্নে কেউ-ই দ্বিরুক্তি করেন না।
তাই প্রশ্ন জাগা স্বাভাবিক, কী আছে নজরুল সাহিত্যে ?
সাহিত্য যেসব কারণে স্থায়িত্ব লাভ করে, ক্লাসিক হয়, তার মধ্যে ‘কালের দাবি মেটানো' বড় গুণ। নজরুল ইসলাম ছিলেন কেজো সাহিত্যের লেখক। তাই তাঁর রচনায় কালিক চাহিদা যথার্থরূপেই প্রতিফলিত হয়েছিল। তাঁর সাহিত্যকর্মে সেদিন পরাধীন ভারতবাসীর স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষা ও মুক্তির স্পৃহা বিস্ময়কর সুরে ও ভাষায় স্ফূর্তি লাভ করেছিল। তাঁর সাহিত্য রচিত হয়েছিল মুক্তিকামী নির্যাতিত নিপীড়িত মানুষের পক্ষে তাদেরই হয়ে নিজেকে তাঁদের একজন মনে করে। তাঁর কবিতা ও গানে, উপন্যাস আর প্রবন্ধে জীবন ও যৌবনের জয়গান আছে। তাতে অধর্মের রাজত্ব উৎখাত করে ধর্মের প্রতিষ্ঠা কামনা করা হয়েছে। মুসলমান হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান সবার কাছেই নজরুল প্রচারিত মানব ধর্মের সমান আবেদন আছে। জীবনের দাবিকে তিনি ধর্ম আইন রাষ্ট্র ও সমাজ ব্যবস্থা সবকিছুর ওপরে স্থান দিয়েছেন।
ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখা যায় উপর্যুক্ত বিষয়বস্তু অবলম্বনে বাংলা ভাষার প্রধান লেখকদের কেউ কেউ লিখেছেন, যেমন বঙ্কিমচন্দ্রের 'সাম্য' ও বাঙালির ইতিহাস সংক্রান্ত প্রবন্ধ। শরৎচন্দ্রের রচনাবলিতেও স্বাধীনতার স্পৃহা বিশেষ করে নির্যাতিত মানুষের এবং নারীর মুক্তির আর্তি ভাষারূপ লাভ করেছে। রবীন্দ্রনাথের লেখায়ও বিশ্বপ্রকৃতির সৌন্দর্য ও মানবমহিমা কীর্তিত হয়েছে। বাংলা ভাষার অপ্রধান লেখকদেরও কারো কারো লেখায় নজরুল সাহিত্যের এসব বিষয়ের ওপরে মর্মস্পর্শী আলোচনার সাক্ষাৎ পাওয়া যায়। কিন্তু নবযুগ, ধূমকেতু, গণবাণী, লাঙল, প্রভৃতি পত্রিকায় প্রকাশিত নজরুলের প্রবন্ধাবলিতে যে জীবনদায়ী শক্তি ও বীর্যবত্তার পরিচয় পাওয়া যায়, তা কেবল বাংলা সাহিত্যেই নয়, পৃথিবীর সব ভাষার সাহিত্যের মধ্যেই এক অনন্য দৃষ্টান্ত।
একথা সবারই জানা যে, ১৯৩২ সালে কাজী নজরুলের বয়স যখন মাত্র চৌত্রিশ বছর, তখন ‘বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য সমিতি'র এক অধিবেশন উদ্বোধনের দ্বায়িত্ব তাঁকে পালন করতে হয়। এই অধিবেশনের সভাপতি ছিলেন মহাকবি কায়কোবাদ। বেগম রোকেয়া, কাজী ইমদাদুল হক, ডাক্তার লুৎফর রহমান, ইসমাইল হোসেন সিরাজী প্রমুখ লেখক এবং নবনূর আল্ এছলাম সাম্যবাদী বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য পত্রিকা শিখা সওগাত মোহাম্মদী জয়তী মোয়াজ্জিন প্রভৃতি পত্রিকাতে মুসলিম জীবন-ভাবনা ও সংস্কৃতি এমন অভূতপূর্ব অভিব্যক্তি লাভ করে যে, তা মুসলমানদেরকে সজীব ও চঞ্চল করে তোলে। মুসলমান কবি সাহিত্যিক ও পণ্ডিতদের গ্রহণযোগ্যতা হিন্দু সম্প্রদায়েও সম্প্রসারিত হয়েছে। স্কুলের পাঠ্য বইয়ে মুসলমান লেখকদের রচনাও ঠাঁই পেয়েছে।
এমতাবস্থায় বাংলা সাহিত্যে নতুন বিতর্ক দেখা যায় আরবি ফারসি শব্দ প্রয়োগ নিয়ে। নজরুলের ওপরই খড়গহস্ত তাঁরা । কারণ তাঁর সাহিত্য ছিল সবার পাঠ্য। প্রবাসী পত্রিকায় মাদ্রাসীশব্দ নিয়ে রবীন্দ্রনাথও চিঠি লিখেছেন উপদেশ দিয়ে, যাতে অকারণে বাহুল্য আরবি, ফারসি শব্দ বাংলা ভাষায় বেশি গ্রহণ না করা হয়। ‘খুন' শব্দটিকে রবীন্দ্রনাথ একদম পছন্দ করেননি। কিন্তু নজরুল ‘নীলসীয়া আসমান, আম্মাগো লাল তেরি খুন কিয়া খুনিয়া' বলে অনবদ্য পদ্য রচনা করেছেন। এক রচনায় নজরুল স্পষ্ট সাফাই গাইলেন--বাংলা ভাষায় হিন্দুর ভাবধারা এমন ওতপ্রোতভাবে জড়িত যে ও বাদ দিলে বাংলা ভাষার অর্ধেক ফোর্স নষ্ট হয়ে যাবে। তিনি বলেন,
“ইংরেজি ভাষা থেকে গ্রিক পুরাণের ভাব বাদ দেয়ার কথা কেউ ভাবতেও পারে না । বাংলা সাহিত্য হিন্দু ও মুসলমান উভয়েরই সাহিত্য। এতে হিন্দু দেবদেবীর নাম দেখলে মুসলমানের রাগ করা যেমন অন্যায়, হিন্দুরও তেমনি মুসলমানের...নিত্য প্রচলিত মুসলমানি শব্দ তাদের লিখিত সাহিত্যে দেখে ভুরু কোঁচকানো অন্যায়। আমি হিন্দু-মুসলমানের মিলনে পরিপূর্ণ বিশ্বাসী। তাই তাদের এ-সংস্কারে আঘাত হানার জন্যই মুসলমানি শব্দ ব্যবহার করি। বা হিন্দুর দেবদেবীর নাম নিই।” এই বিতর্কে অংশগ্রহণ করেন অনেকের সঙ্গে শ্রীঅন্নদাশঙ্কর রায়ও । তিনি বলেন, “মুশকিল বেঁধেছে মাদ্রাসার পাঠ্য-পুস্তক থেকে শেখা মুসলমানি শব্দ নিয়ে। ....আমাদের গায়ে লাগে যখন তারা বাংলা সাহিত্য নাম দিয়ে মূল্যবান আরবি কিতাব লেখেন।”
নজরুলের সাহিত্য বাঙালি মুসলমানকে গভীরভাবে উদ্বুদ্ধ করেছিল স্বতন্ত্র আবাসভূমি (মুসলিম রাষ্ট্র>পাকিস্তান) গঠনের সংগ্রামে, যদিও তিনি নিজে স্বাধীন অখণ্ড ভারতবর্ষের স্বপ্নই দেখেছিলেন। নজরুল ও তাঁর সমকালীন মেধাবী সাহিত্যিকদের রচনাসামগ্রী মুসলমানদেরকে স্বাবলম্বী ভাবতে শিখিয়েছিল। অন্যান্য ক্ষেত্রেও মুসলমানেরা সাফল্য দেখাচ্ছিলেন। অতএব মুসলমান সমাজের বিরাজমান হীনমন্যতাবোধ অপসারিত হতে আরম্ভ করে। তারা যে অযোগ্য, দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক বা অবহেলার পাত্র নন, সেকথা ভাবতে নজরুলই বৃহৎ ভূমিকা পালন করেন। তারা রবীন্দ্রনাথের পাশাপাশি নজরুল ইসলামকে দেখাতে ও দেখতে পেয়ে সন্তোষ অনুভব করেন। নজরুলের ইসলামিক গানে সারা বাংলার মুসলমান জনগণ অফুরন্ত প্রেরণা লাভ করেন। যেমন--
‘ও মোর রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ'
‘দিকে দিকে পুন: জ্বলিয়া উঠিছে দীন ইসলামী লাল মশাল'
অথবা
‘কোথায় তখ্ত তাউস, কোথায় সে বাদশাহী
কাঁদিয়া জানায় মুসলিম ফরিয়াদ য়্যা এলাহী।'
প্রভৃতি গান যখন রেডিও-গ্রামোফোনে আব্বাসউদ্দীন, কে. মল্লিক প্রমুখের কণ্ঠে গীত হয়েছে (ত্রিশের দশকে) তখন মুসলমানেরা একই সঙ্গে পেয়েছেন ধর্মীয় শৈল্পিক সাহিত্যিক সাংস্কৃতিক ও মুসলিম জাতীয়তাবাদী দেশাত্মবোধক আস্বাদন। স্বাধীনতা সংগ্রাম তথা বৈপ্লবিক আন্দোলনের প্রেরণামূলক সাহিত্য-সঙ্গীতও তাদের রয়েছে,-- এই বোধ তাদের অনুভূতিতে বিচিত্র বিক্রিয়াপ্রতিক্রিয়া সংঘটিত করতো। তাদের মনে জেগে উঠত একসঙ্গে অনেক ছবি ও কথা।
অগ্নিবীণা-বিষের বাঁশী-সর্বহারা-ফণিমনসা প্রভৃতি কাব্যে এবং নজরুলের দেশাত্মবোধক সংগ্রামী গানে যে-চেতনা ভাষারূপ লাভ করেছে, তা বিশ্বসাহিত্যে বিশেষ গৌরবের স্থান ইতিমধ্যে লাভ করেছে, এবং ভবিষ্যতে আরও বৃদ্ধি পাবে। কারণ নজরুলের সঙ্গীতে রচনাবলিতে মানবীয় প্রেম মূর্ত হয়েছে অপূর্ব ভঙ্গিতে।
স্বাধীনতা ও পরাধীনতা, নির্যাতন ও মুক্তি, কুসংস্কার ও বুদ্ধির মুক্তি এবং মানবীয় আকর্ষণ-বিকর্ষণ ও প্রেম চিরন্তন সমস্যা। আর নজরুল সাহিত্যের এগুলোই অন্তর্গত বিষয়। ভাষা এবং রচনারীতির দিক দিয়েও নজরুলের রয়েছে অসামান্যতা। তার সমকালে বাংলা সাহিত্যে প্রতিষ্ঠা লাভ করেন বুদ্ধদেব বসু, সুধীন্দ্রনাথ দত্ত, জীবনানন্দ দাশ ; তাঁরা ইউরোপীয় সাহিত্যের অনুকরণে মডার্নিজম বা আধুনিকতাবাদের আদর্শ প্রচার করেন। অনেক প্রতিভাবান লেখককে এই আন্দোলন আকৃষ্ট করে। তবে শেষ পর্যন্ত মডার্নিজম ক্ষুদ্র গোষ্ঠীতে সীমাবদ্ধ থেকেছে। গুরুত্বপূর্ণ মর্যাদা লাভ করে এসেছে সবসময় গণসাহিত্য তথা মাটিলগ্ন মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার স্বরূপ শাণিত করা বস্তুবাদী সাহিত্য ও সংস্কৃতি। ইউরোপীয় আধুনিকতাবাদী লেখকেরা সাহিত্যের নতুন রূপরীতি সৃষ্টিতে অবদান রেখেছেন সন্দেহ নেই ; কিন্তু তাঁদের নৈরাজ্যবাদী জীবন-জগৎ দৃষ্টি সুস্থ স্বাভাবিক মানুষের সমর্থন লাভ করেনি। কিন্তু নজরুলের জীবন-জগৎ-দৃষ্টিতে ছিল জাতীয় উন্নতির সর্বমাত্রিক ভাবনা-পরিকল্পনা। তিনি জীবনজগতের এমন কোনো সমস্যা নেই, যা নিয়ে ভাবেননি এবং কর্মোদ্যম গ্রহণ করেননি।
ত্রিশের দশকে যখন আধুনিকতাবাদীরা কলকাতায় বাস্তববাদী সাহিত্যের নামে অশ্লীল উপন্যাস-গল্প-কবিতা লিখে চলেছিলেন, তখন নজরুল সারা বাঙলা পরিভ্রমণ করে বেড়িয়েছেন ঘুমন্ত জনগণকে জাগরণী মন্ত্র দিয়ে জাগিয়ে তোলার জন্যে। গান লিখেছেন সব ধরনের, মানুষের মনের জড়তা দূর করার লক্ষ্যে। প্রিন্সিপাল ইব্রাহীম খাঁকে এক পত্রে নজরুল লিখেছিলেন.....
“সকলকে জাগাবার কাজে আমায় আহবান করেছেন। আমার মনে হয়, আপনাদের আহবানের আগেই আমার ক্ষুদ্রশক্তির সবটুকু দিয়ে এদের জাগাবার চেষ্টা করেছি। শুধু যে লিখে তা নয়, আমার জীবনী ও কর্মশক্তি দিয়েও।
‘আমার শক্তি স্বল্প, তবু এই আট বছর ধরে আমি দেশে দেশে, গ্রামে গ্রামে ঘুরে কৃষক-শ্রমিক-তরুণদের সংঘবদ্ধ করার চেষ্টা করেছি--লিখেছি, বলেছি, চারণের মতো পথে পথে গান গেয়ে ফিরেছি। অর্থ আমার নাই, কিন্তু সামর্থ্য যেটুকু আছে তা ব্যয় করতে কুণ্ঠিত কোনো দিন হয়েছি--এ বদনাম আর যে-ই দিক, আপনি দেবেন না বোধ হয় । ... ”
‘আমার এই দেশ-সেবার, সমাজ-সেবার 'অপরাধের' জন্য শ্রীমৎ সরকার বাবাজির আমার ওপর দৃষ্টি অতিমাত্রায় তীক্ষ্ হয়ে উঠেছে। আমার সবচেয়ে চলতি বইগুলোই গেল বাজেয়াপ্ত হয়ে। এই সেদিনও পুলিশ আবার আমায় জানিয়ে দিয়েছে, আমার নবপ্রকাশিত ‘রুদ্র-মঙ্গল’ আর বিক্রি করলে আমাকে রাজদ্রোহ অপরাধে ধৃত করা হবে। আমি যদি পাশ্চাত্য ঋষি হুইটম্যানের সুরে সুর মিলিয়ে বলি--
Behold, I do not give a little charity.
When I give, I give myself..--তাহলে সেটাকে অহঙ্কার বলে ভুল করবেন না।’’
প্রিন্সিপাল ইব্রাহীম খাঁ জাতীয় দুর্দিনে ‘শ্রেষ্ঠতম দেশ হিতৈষী’, ‘মুক্তির অগ্রদূত’ হয়ে ‘মহাগৌরবের আসন দখল করতে’ নজরুল ইসলামকে উদাত্ত আহবান জানিয়েছিলেন ১৯২৫ সালে। ১৯৪২ সালে মুসলমান সমাজের ইব্রাহিম খাঁদের কী উচিত ছিল না শ্রেষ্ঠতম মানব হিতৈষীরূপে কবি নজরুলকে চিকিৎসা করে সুস্থ করে তোলা? তাঁর পাশে গিয়ে তাঁদের দাঁড়ানো? নজরুল কি ইব্রাহীম খাঁর আকাঙ্ক্ষা পূরণ করেননি? মহাপুরুষেরা বুঝি এভাবেই প্রতিভার স্বরূপ চিনতে পারেন। কিন্তু ১৯৪২ সালে তাঁদের পরিস্থিতি বিবেচনার জ্ঞান কি রহিত হয়ে গিয়েছিল?
নজরুল আজ বাঙালির মননরাজ্যের সবচেয়ে প্রিয়, মহা গৌরবের আসনটি দখল করে আছেন। তাঁদের স্বপ্ন-সাধ সার্থক হয়েছে। এ থেকে জাতির আগামী দিনের প্রজন্ম কি নতুন দিকনির্দেশনা কিছু লাভ করতে পারে না?