Published : 10 Nov 2023, 09:56 PM
ছুটির দিনে কথাসাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলন ও মাহবুব ময়ূখ রিশাদের হাতে তুলে দেওয়া হলো হুমায়ূন আহমেদ সাহিত্য পুরস্কার।
শুক্রবার সন্ধ্যায় বাংলা একাডেমির আব্দুল করিম সাহিত্য বিশারদ মিলনায়তনে আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।
সাহিত্যে সামগ্রিক অবদানের জন্য পুরস্কৃত হয়েছেন ইমদাদুল হক মিলন, পেয়েছেন পাঁচ লাখ টাকা। আর নবীন সাহিত্য শ্রেণিতে (অনূর্ধ্ব চল্লিশ বছর) মাহবুব ময়ূখ রিশাদ পেয়েছেন এক লাখ টাকা। দুজনই পেয়েছেন উত্তরীয় ও সনদপত্র।
পুরস্কার পাওয়ার অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে ইমদাদুল হক মিলন বলেন, “হুমায়ূন ভাই মারা যাওয়ার পর আমি আর নূহাশপল্লীতে বা দখিন হাওয়া বাড়িতে যাইনি। সেখানে হুমায়ূন ভাইয়ের স্মৃতি এমনভাবে জড়িয়ে আছে, আমার খুব কষ্ট হবে- এজন্য যাইনি।"
হুমায়ূন আহমেদ নামাঙ্কিত পুরস্কার পেয়ে আনন্দিত হয়েছেন বলেও জানান তিনি।
আর মাহবুব ময়ূখ রিশাদ বলেন, “লেখালেখিতে আমি ম্যাজিক ক্রিয়েট করতে চাই। এই পুরস্কার আমাকে সেই পথে প্রেরণা যোগাবে।"
হুমায়ূন আহমেদের কাঁধে চড়ে চট্টগ্রামের চন্দ্রনাথ পাহাড়ে ভ্রমণের স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, “তখন আমার ঠিক মনে নাই, বয়স কি ৪/৫ হবে হয়তো। একদিন রাত ১২টার দিকে নাকি হুমায়ূন আহমেদ আমাদের বাসায় এসে বলেছিলেন, চন্দ্রনাথ পাহাড়ে যাচ্ছেন।
“আমি যাওয়ার জন্য কান্নাকাটি করেছিলাম, পরে আমাকেও নেওয়া হয়েছিল। সেই গল্প বাবা-মায়ের কাছে শুনে শুনে বড় হয়েছি।"
পরে আরও অনেকবার হুমায়ূন আহমেদের সঙ্গে দেখা হওয়া, অটোগ্রাফ নেওয়ার স্মৃতিচারণও করেন রিশাদ।
অন্যদিন সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “প্রতি বছর ১২ নভেম্বর এই পুরস্কার অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হলেও এবার রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় ১০ নভেম্বর এই অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছে।"
অনুষ্ঠানে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, “বাংলাদেশ এখন নিজস্ব সাহিত্য, সংস্কৃতি নিয়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। প্রযুক্তিতে নেতৃত্ব দেওয়ার মতো অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে।"
হুমায়ূন আহমেদের ভাই মুহম্মদ জাফর ইকবাল বলেন, “আমাদের বাবা পুলিশ অফিসার ছিলেন, বান্দরবানের যে বাসাটায় থাকতাম, সেখানে ফুটবল খেলতে গিয়ে হাত ভেঙেছিলাম।
“কিছুদিন আগে আমি বান্দরবানের সেই বাসাটায় গিয়েছিলাম। দেখলাম- সেই বাসাটাকে সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছে যে এখানে হুমায়ূন আহমেদ থাকতেন।"
হুমায়ূন আহমেদের স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন বলেন, “প্রতি বছর এই অনুষ্ঠানটির জন্য আমি অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করি। কারণ এই অনুষ্ঠানে এসে আমি এমন অনেক মানুষকে পাই, যারা হুমায়ূন আহমেদকে ভীষণ ভালোবাসেন।"
২০১৫ সালে প্রথমবার এই পুরস্কার পেয়েছিলেন যথাক্রমে শওকত আলী ও সাদিয়া মাহ্জাবীন ইমাম। ২০১৬ সালে পুরস্কৃত হয়েছিলেন হাসান আজিজুল হক ও স্বকৃত নোমান।
২০১৭ সালে এই পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়েছিল জ্যোতিপ্রকাশ দত্ত ও মোজাফ্ফর হোসেনের হাতে। ২০১৮ সালে পুরস্কৃত হয়েছিলেন রিজিয়া রহমান ও ফাতিমা রুমি।
২০১৯ সালে পুরস্কার পেয়েছেন রাবেয়া খাতুন ও সাদাত হোসাইন। ২০২০ সালে পুরস্কৃত হয়েছেন হাসনাত আবদুল হাই ও নাহিদা নাহিদ। ২০২১ সালে পুরস্কার পেয়েছেন সেলিনা হোসেন ও ফাতেমা আবেদীন।
আর ২০২২ সালে পুরস্কৃত হয়েছিলেন আনোয়ারা সৈয়দ হক ও মৌরি মরিয়ম।