ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয় দলীয় কারণে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের শুধু বিভক্ত করেনি, অনেকক্ষেত্রে ব্যক্তিগত সম্পর্কে চিড় ধরানোর রসদও যুগিয়েছে।
Published : 08 Feb 2017, 05:27 AM
আর যাই হোক, কারো কারো অভিজ্ঞতা আর জরিপ কিন্তু সেকথা বলছে।
গেইল মেকোরমেকের অভিজ্ঞতার কথাই ধরুন; ২২ বছরের বিবাহিত সম্পর্কে ইতি টেনেছেন এই নারী শুধু ট্রাম্পের কারণে! সদ্য সাবেক হওয়া স্বামীর বছরখানেক আগের মন্তব্য মনে করে এখনও তিক্ততা উপলব্ধি করতে পারেন তিনি।
ক্যালিফোর্নিয়া কারাগারের এই অবসরপ্রাপ্ত রক্ষী বলছিলেন, “বছরখানেক আগে বন্ধুদের সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজে বসে স্বামীকে বলতে শুনি- ‘ডেমোক্রেটরা ক্রমেই সমাজতন্ত্রী হয়ে উঠছে’। সেই সঙ্গে ট্রাম্পকে ভোট দেওয়ার পরিকল্পনার কথাও সে অকপটে ফাঁস করে দেয় সেসময়।”
অথচ গেইল মেকোরমেকের ভাষায় ট্রাম্প হলেন একজন ‘চুক্তি ভঙ্গকারী’।
“আমি মানতে পারছিলাম না সে (স্বামী) ট্রাম্পকে ভোট দিতে পারে,” বলেন ৭৩ বছর বয়সী এই নারী।
দীর্ঘ সময়ে কখনো রিপাবলিক দল ছাড়ার কথা না ভাবলেও তিনি কোনোভাবেই ট্রাম্পের পক্ষে সায় দেবেন তা ভাবতে পারছিলেন না।
“আমার মনে হচ্ছিল, আমি নিজেই নিজেকে বোকা বানাচ্ছি! এরকম ভাবনা আমাদের মাঝে দূরত্ব তৈরি করতে থাকে। অথচ এর আগে এমনটি কখনোই ঘটেনি। আমার মনে হতে থাকে যৌবনে আমি যা মানতে পারতাম না, এই বয়সে সেসবই মেনে নিতে হচ্ছে।”
তার পরের সব ঘটনাই এখন অতীত। ২২ বছরের সম্পর্কে ইতি টেনেছেন। নতুন বাসায় উঠেছেন। বেছে নিয়েছেন একাকীত্ব।
অভিজ্ঞতা ঠিক একইরকম না হলেও একাধিক মার্কিন নাগরিকের সঙ্গে কথা বলে পাওয়া গেছে বেশ কিছু আবেগি কথা; বাক্য ও শব্দ।
যেসবের সারমর্ম খানিকটা এরকম- ‘যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে এটি এমন এক নির্বাচন, যার লাভা গড়িয়েছে পরিবারের উঠোনে, সম্পর্কের দৃঢ়তাকে চুরমার করে দিয়েছে নিমিষে।’
এসব বিষয় নিয়ে সম্প্রতি জরিপ চালায় রয়টার্স। গত ২৭ ডিসেম্বর থেকে ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত চালানো ওই জরিপে ৬,৪২৬ জন অংশ নেয়।
নির্বাচন নিয়ে পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে বিতর্কে জড়ানোর হার নির্বাচনের পর অন্তত ছয় শতাংশ পয়েন্ট বেড়েছে বলে ওই জরিপ বলছে।
আর একই ইস্যুতে পরিবারের সদস্য অথবা বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছেন এমন অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা ১৬ শতাংশ।
জরিপে অংশ নেওয়া ১৩ শতাংশ বলেছেন, তারা পরিবারের কোনো না কোনো সদস্যের সঙ্গে সম্পর্ক ভেঙ্গেছেন অথবা বন্ধুত্ব ভেঙ্গেছেন।
“এটা আমার জন্য অনেকটা পীড়াদায়ক,” বলেন রব ব্রুনেল্লো।
ট্রাম্পকে সমর্থন দেওয়ায় ২৫ বছর বয়সী এই ট্রাক চালককে পরিবারের সদস্য ও বন্ধুদের কটূক্তি শুনতে হয়েছে বলেই তার ভাষ্য।
“মানুষ এখনও বিশ্বাস করতে পারছেন না ট্রাম্প হিলারিকে হারাতে পেরেছেন! এটা মানতেই তাদের কঠিন সময় পার করতে হচ্ছে।”
তবে এই জরিপের বিষয়ে হোয়াইট হাউজের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।