দেশে টানা তিন দিন আট হাজারের বেশি কোভিড-১৯ রোগী শনাক্তের পর এই সংখ্যা ৬ হাজারের ঘরে নামলেও দৈনিক মৃত্যু সপ্তম দিনের মতো একশ’র বেশি রয়েছে।
Published : 03 Jul 2021, 06:48 PM
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, শনিবার সকাল পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ৬ হাজার ২১৪ জনের মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে, মৃত্যু হয়েছে ১৩৪ জনের।
শুক্রবার ৮ হাজার ৪৮৩ জনের মধ্যে সংক্রমণ এবং ১৩২ জনের মৃত্যুর খবর এসেছিল।
গত তিন ধরে ৮ হাজারের বেশি রোগী শনাক্তের পর কঠোর লকডাউনের মধ্যে এই প্রথম তা দুই হাজারের মতো কমল।
নতুন রোগীদের নিয়ে দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা পৌঁছেছে ৯ লাখ ৩৬ হাজার ২৫৬ জনে।
সরকারি হিসেবে এক দিনে সেরে উঠেছেন ৩ হাজার ৭৭৭ জন। তাদের নিয়ে এই পর্যন্ত সুস্থ হলেন ৮ লাখ ২৯ হাজার ১৯৯ জন।
সেই হিসেবে দেশে এখন সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ৯২ হাজার। অর্থাৎ প্রায় ১ লাখ ব্যক্তি এই মুহূর্তে সংক্রমণ নিয়ে রয়েছেন।
আরও ১৩৪ জনের মৃত্যুতে দেশে করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ১৪ হাজার ৯১২ জনে।
গত কয়েক দিনের মতো খুলনা ও ঢাকা বিভাগে মৃত্যুর সংখ্যার ঊর্ধ্বগতি রয়েছে। এক দিনে খুলনায় ৩৯ এবং ঢাকায় ৩৮ জনের মৃত্যু ঘটেছে।
এক দিনে নমুনা পরীক্ষা প্রায় আট হাজারের মতো কমেছে। শুক্রবার যেখানে ৩০ হাজারের বেশি নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল, এক দিনে তা কমে দাঁড়িয়েছে ২২ হাজার ৬৮৭টি।
নমুনা বিবেচনায় রোগী শনাক্তের হার এখনও ২৭ দশমিক ৩৯ শতাংশ, আগের দিনের চেয়ে তা সামান্য কমলেও বিশেষজ্ঞদের ভাষায় এখনও উদ্বেগজনকই রয়েছে।
এই পর্যন্ত ৬৬ লাখ ৯৩ হাজার নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় সার্বিক শনাক্তের হার রয়েছে ১৩ শতাংশের উপরে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে, এক সপ্তাহের ব্যবধানে নমুনা পরীক্ষা যেখানে বেড়েছে ১৯ দশমিক ৪৬ শতাংশ; রোগী শনাক্তের হার বেড়েছে ৫০ শতাংশ। মৃত্যুও বেড়েছে ৪৬ শতাংশের মতো।
গত এক দিনে আগের মতোই বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছে ঢাকা বিভাগে ৩ হাজার ৩৩২ জন। নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ২৮ শতাংশ।
চট্টগ্রাম বিভাগে ৮৪৪, খুলনা বিভাগে ৫৩৯, রংপুর বিভাগে ৫৩২, রাজশাহী বিভাগে ৪২৬, সিলেট বিভাগে ২০৩, বরিশাল বিভাগে ১২২, ময়মনসিংহ বিভাগে ১৪৮ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে।
জেলার হিসেবেও সবচেয়ে বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছে ঢাকায় ২ হাজার ৮৫৪ জন। তারপরে রয়েছে দিনাজপুর (২৫৮), যশোর (২৫০), চট্টগ্রাম (২৬২), কুমিল্লা (১৭০), ফরিদপুর (১৪৮), সিলেট (১২২), পাবনা (১১৮), বগুড়া (১১২), কক্সবাজার (১০১), নোয়াখালী (১০২), রাজশাহী (১০০)।
বাংলাদেশে গত বছরের ৮ মার্চ প্রথম কোভিড রোগী শনাক্তের বছর গড়ানোর পর দ্বিতীয় সংক্রমণের ঢেউয়ে রোগীর সংখ্যা হু হু করে বাড়ছে।
ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের বিস্তারের মধ্যে গত ২৯ জুন ৯ লাখ পেরিয়ে যায় আক্রান্তের সংখ্যা। ৩০ জুন এক দিনে রেকর্ড ৮ হাজার ৮২২ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়।
প্রথম মৃত্যুর ১০ দিন পর গত ১৮ মার্চ প্রথম কোভিড-১৯ রোগীর মৃত্যু ঘটে বাংলাদেশে। এ বছরের ২৬ জুন তা ১৪ হাজার ছাড়িয়ে যায়। এর মধ্যে ১ জুলাই রেকর্ড ১৪৩ জনের মৃত্যুর খবর আসে।
গত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা ও খুলনার পর সর্বাধিক মৃত্যু ঘটেছে রাজশাহী বিভাগে ২৩ জন। তারপরে রয়েছে রংপুর (১৫), চট্টগ্রাম (১১), ময়মনসিংহ (৪), বরিশাল (৩), সিলেট (১)।
জেলার হিসেবেও সবচেয়ে বেশি মৃত্যু ঘটেছে ঢাকায় ১৭ জন। এরপরে রয়েছে যশোর (১১), রাজশাহী (৮), কুষ্টিয়া (৮), খুলনা (৭), বগুড়া (৬), ঠাকুরগাঁও (৫), দিনাজপুর (৪), নাটোর (৪), ঝিনাইদহ (৪), ফরিদপুর (৪)।
গত ২৪ ঘণ্টায় যে ১৩৪ জনের মৃত্যু ঘটেছে, তাদের প্রায় অর্ধেক ৬৫ জনের বয়স ৬০ বছরের বেশি। ৩০ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ২৪ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে। বাকিদের বয়স এর নিচে।
মৃতদের ৮৪ জন ছিলেন পুরুষ, ৫০ জন নারী। তাদের ১০৭ জন সরকারি হাসপাতালে, ২০ জন বেসরকারি হাসপাতালে এবং ৭ জন বাসায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।