বৃহস্পতিবার ইন্দোনেশিয়ার বালি দ্বীপে সংবাদ সম্মেলনে সংস্থা দুটির প্রধান এ উদ্বেগের কথা জানান।
আইএমএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টিন লগার্দ বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে ব্যবসায় নীতি নিয়ে উত্তেজনা ও আমদানি শুল্ক আরোপের কারণে বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হবে।
“নিজেদের স্বার্থ রক্ষার জন্য এই দুই পরাশক্তি একটি খারাপ উদাহরণ তৈরি করছে। আর সেটা হবে বিশ্ব অর্থনীতির জন্য বড় ধাক্কা। বিশ্ব অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি যদি অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং টেকসই না হয় তাহলে তার সুফল বিশ্ববাসী পাবে না।”
তিনি বলেন, বিশ্বে বেকারত্বের হার কমছে; প্রবৃদ্ধিও ভালো। চলমান বাণিজ্য যুদ্ধ বন্ধ হলে এই প্রবৃদ্ধি আরও ভালো হবে।
বিশ্ব ব্যাংক প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম বলেন, বর্তমানে বিশ্ব অর্থনীতি বেশ ভালো এবং নিরাপদ অবস্থানে রয়েছে। বৈশিক প্রবৃদ্ধির হার এখন ৩ দশমিক ৭ শতাংশ।
“তবে যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের চলমান এই বাণিজ্য যুদ্ধের মতো কিছু বাধার কারণে বিশ্ব অর্থনীতিতে ঝুঁকি দেখা দিয়েছে।”
বিশ্ব ব্যাংক প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিমের সংবাদ সম্মেলনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় বৃহস্পতিবারের কার্যক্রম। এরপর সংবাদ সম্মেলনে আসেন আইএমএফ প্রধান লগার্দ।
সংবাদ সম্মেলনে কিম বলেন, বিশ্ব অর্থনীতি ভালোই প্রবৃদ্ধি অর্জন করছে। কিন্তু প্রবৃদ্ধির সুফল যাতে পৃথিবীর সব মানুষ পায় সেটা নিশ্চিত করতে হবে।
“এবং এই বিষয়টিতেই বিশ্বনেতাদের সবচেয়ে বেশি জোর দিতে হবে।”
বুধবার থেকে সম্মেলন শুরু হয়ে গেলেও আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হবে ১২ অক্টোবর শুক্রবার। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশ্ব ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট, আইএমএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অর্থমন্ত্রীরা বক্তব্য রাখবেন।
বিশ্বের ১৮৯টি দেশের অর্থমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর এবং সরকারি-বেসরকারি খাতের প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে শুরু হওয়া এ সম্মেলন শেষ হবে ১৪ অক্টোবর।
এবারের সম্মেলনে মোট পনের হাজার প্রতিনিধি অংশ নিচ্ছেন। এর মধ্যে গণমাধ্যমের প্রতিনিধি এক হাজারের বেশি।
সম্মেলনে অংশ নিতে আসা বিদেশিদের পদচারণায় মুখরিত এখন বালি দ্বীপ। কড়া নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয়েছে ইন্দানেশিয়ার ‘সাগড় কন্যা’ নামে পরিচিত এই পর্যটন দ্বীপকে।
বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের নেতৃত্বে ২৭ সদস্যের প্রতিনিদিল এখন বালিতে অবস্থান করছেন।
সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী ইন্দোনেশিয়ার অর্থমন্ত্রী মুলইয়ানি ইন্দ্রাবতির সঙ্গে বৈঠক করেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, ওয়াশিংটনে বিশ্ব ব্যাংকের বিকল্প নির্বাহী মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া, অর্থ সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব কাজী শফিকুল আযম এই প্রতিনিধি দলে রয়েছেন।
বিশ্ব ব্যাংক-আইএমএফের সবচেয়ে বড় এই সম্মেলনে এ দুই উন্নয়ন সংস্থার সদস্য দেশের অর্থমন্ত্রী এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ছাড়াও বেসরকারি খাতের নির্বাহী এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা অংশ নেবেন।
প্রতিবছর অক্টোবর মাসের প্রথম ভাগে বিশ্ব ব্যাংক-আইএমএফের এই সভা হয়। পর পর দুটি বৈঠক যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে সংস্থা দুটির সদর দপ্তরে হওয়ার পর তৃতীয় সভাটি হয় যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে সদস্যভুক্ত অন্য কোনো দেশে।