ধানের শীষেও কপাল খুলল না মান্নার

বিএনপির ঘাঁটি হিসাবে পরিচিত বগুড়ায় আগে তিনবার পরাজিত মাহমুদুর রহমান মান্না এবার মার্কা বদলে ধানের শীষের প্রার্থী হয়েও জয়ের দেখা পেলেন না।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 Dec 2018, 11:18 PM
Updated : 31 Dec 2018, 07:55 AM

ডাকসুর সাবেক ভিপি মান্না জাতীয় রাজনীতিতে আলোচিত হলেও তার আর জাতীয় সংসদে যাওয়া হল না।

সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধাক সরকার আমলে সংস্কারপন্থি হিসেবে পরিচিতি পাওয়ার পর আওয়ামী লীগের পদ হারানো মান্না নতুন রাজনৈতিক সংগঠন নাগরিক ঐক্য গড়ে আলোচনায় ছিলেন কয়েক বছর ধরে।

সাবেক দল আওয়ামী লীগের সমালোচনামুখর মান্না এবার কামাল হোসেনের নেতৃত্বে সরকারবিরোধী মঞ্চ জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন।

ঐক্যফ্রন্টের শরিক হিসেবে বগুড়া-২ আসনে বিএনপির ধানের শীষের প্রার্থী হয়েছিলেন মান্না। তবে মহাজোটের প্রার্থী লাঙ্গল প্রতীকের শরিফুল ইসলাম জিন্নাহর কাছে প্রায় এক লাখ ১০ হাজার ভোটের ব্যবধানে হেরেছেন তিনি।

রোববার একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টির বর্তমান সাংসদ জিন্নাহ পেয়েছেন ১ লাখ ৭৮ হাজার ১৪২ ভোট। আর মান্নার ধানের শীষে পড়েছে ৫৯ হাজার ৭১৩ ভোট।

নির্বাচনে ‘পুলিশের পাহারায় কেন্দ্র দখল’ ও ধানের শীষের এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ এনে পুনঃতফসিলের দাবি জানিয়েছেন মান্না।

ভোট চলার মধ্যে দুপুরে বগুড়া শহরে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “মহাজোট প্রার্থী জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি শরিফুল ইসলাম জিন্নাহর কর্মী সমর্থক ও পুলিশ কেন্দ্র দখল করে ধানের শীষের এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়। এরপর সবাই মিলে লাঙ্গল মার্কায় ইচ্ছেমতো সিল মেরেছে।”

জিন্নাহর কর্মী-সমর্থকরা ভোটের আগের রাত থেকেই ধানের শীষের কর্মী-সমর্থকদের ভয়ভীতি দেখিয়েছে বলে অভিযোগ করেন নাগরিক ঐক্যের এই আহ্বায়ক।

তিনি বলেন, “ভয়ভীতি উপেক্ষা করে মানুষ ভোটকেন্দ্রে আসলেও পুলিশ কোন কারণ ছাড়া গুলিবর্ষণ করে ভোটারসহ সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। ফলে ভয়ে সাধারণ ভোটাররা কেন্দ্র ছেড়ে চলে যান। এই ফাঁকে মহাজোট প্রার্থীর লাঙ্গল মার্কায় সিল মারা হয়।”

ক্ষমতাসীনদের দাপটের কাছে এই অসহায়ত্বের কথা জানালেও নভেম্বরে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর মান্না ঢাকায় সংবাদ সম্মেলন করে বলেছিলেন, নির্বাচনের প্রচার শুরু হওয়ার পর তার কর্মীদের আর কোনোভাবেই ঠেকিয়ে রাখা যাবে না। 

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের জন্মস্থান বগুড়ার একটি আসনে (বগুড়া-৬) বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ধানের শীষ প্রতীকে জয়ী হলেও মান্না তার আগের ফলই পেয়েছেন।

বগুড়ার এই আসনেই এর আগে তিনটি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন মাহমুদুর রহমান মান্না। ১৯৯১ সালে জনতা মুক্তি পার্টি থেকে কাস্তে প্রতীকে লড়ে মাত্র দুই হাজার ১৮০ ভোট পেয়েছিলেন তিনি।

এরপর আওয়ামী লীগ থেকে নৌকা প্রতীকে ১৯৯৬ ও ২০০১ সালের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও ধানের শীষের প্রার্থীদের কাছে হেরে যান মান্না।