হাই কোর্টে মনোনয়নপত্রের বৈধতা পেলেন ১১ জন

হাই কোর্টে রিট আবেদন করে মনোনয়নপত্রের বৈধতা ফিরে পেয়েছেন দল মনোনীত ও স্বতন্ত্র ১১ প্রার্থী।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 Dec 2018, 04:42 PM
Updated : 9 Dec 2018, 04:42 PM

তবে তাদের মধ্যে বিএনপির চারজনের এবং জাতীয় পার্টির এক জনের নাম নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া দলীয় প্রার্থীর চূড়ান্ত তালিকায় রাখা হয়নি।

বিএনপির অধিকাংশ নেতার বিরুদ্ধে মামলা থাকায় ‘ভোটের কৌশলের’ অংশ হিসেবে এবার ৩০০ আসনের সবগুলোতেই বিএনপি বিকল্প প্রার্থী দিয়েছিল।

জোটের আসন ভাগাভাগির খেলায় আওয়ামী লীগও দেড় ডজন আসনে একাধিক প্রার্থীকে প্রাথমিক মনোনয়ন দিয়েছিল।  

রোববার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনই চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা জমা দেওয়ার বাধ্যবাধকতা ছিল নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য।

চূড়ান্ত তালিকায় যাদের নাম থাকবে কেবল তাদেরকেই ওই দলের প্রার্থী বিবেচনা করে প্রতীক বরাদ্দ করার কথা নির্বাচন কমিশনের।

নির্বাচন কমিশনে আপিল করেও যারা প্রার্থিতা ফিরে পাননি, তাদের অনেকেই রোববার হাই কোর্টে রিট আবেদন করেছেন। শুনানি শেষে তাদের মধ্যে ১১ জনের ক্ষেত্রে ইসির সিদ্ধান্ত স্থগিত করেছে আদালত। 

বিচারপতি তারিক উল হাকিম ও বিচারপতি মো. সোহরাওয়ারদীর হাই কোর্ট বেঞ্চ নওগাঁ-৪ আসনে স্বতস্ত্র প্রার্থী আফজাল হোসেনের মনোনয়নপত্র গ্রহণ করতে ইসিকে নির্দেশ দেওয়ায় আগামী ৩০ ডিসেম্বর তার ভোটে লড়ার পথ খুলেছে।

একই বেঞ্চ ইসির সিদ্ধান্ত স্থগিত করে টাঙ্গাইল-৮ আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী কাজী আশরাফ সিদ্দিকীর মনোনয়নপত্র গ্রহণ করার নির্দেশ দিয়েছ।

কিন্তু জাতীয় পার্টি ইসিতে যে চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা জমা দিয়েছে সেখানে আশরাফের নাম দেখা যায়নি।

বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাই কোর্ট বেঞ্চে শুনানি শেষে রোববার নিজেদের পক্ষে রায় পেয়েছেন নয়জন প্রার্থী।

তাদের মধ্যে নীলফামারী-৪ আসনের বিএনপির প্রার্থী আমজাদ হোসেন সরকার, দিনাজপুর-৩ আসনে বিএনপির প্রার্থী সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম এবং নওগাঁ-৫ আসনে বিএনপির প্রার্থী নাজমুল হকের নাম দলের চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকাতেও রয়েছে। ফলে ভোটে অংশ নিতে তাদের আর বাধা থাকছে না। 

নীলফামারী-৩ আসনে বিএনপির ফাহমিদ ফয়সাল চৌধুরী, পঞ্চগড়-১ আসনে বিএনপির তৌহিদুল ইসলাম, বগুড়া-৩ আসনে বিএনপির আব্দুল মুহিত তালুকদার এবং বগুড়া-৭ আসনে বিএনপির বিদ্রোহী বাদল সরকার হাই কোর্টের একই বেঞ্চ থেকে মেনোনয়নপত্রের বৈধতা ফিরে পেয়েছেন। দলের চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকায় তাদের নাম নেই।

এই বেঞ্চে শুনানির পর কুড়িগ্রাম-৪ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার এবং এ কে এম মাহফুজুর রহমানের ভোটের পথ খুলেছে।

এদিকে ময়মনসিংহ-১ আসনে বিএনপির প্রার্থী আলী আজগরের মনোনয়নপত্র নির্বাচন কমিশন বৈধ ঘোষণা করলেও ফারমার্স ব্যাংকের এক রিট আবেদনে ওই সিদ্ধান্ত স্থগিত করে রুল দিয়েছে বিচারপতি তারিক উল হাকিম ও বিচারপতি মো. সোহরাওয়ারদীর হাই কোর্ট বেঞ্চ।

ইসিতে জমা পড়া বিএনপির চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকায় আলী আজগরের নাম থাকলেও আদালতের সিদ্ধান্তে তার ভোটের পথ আটকে গেল।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ আসনে বিএনপির মুশফিকুর রহমান, মো. আক্তার হোসেন, ফেনী-৩ আসনে বিএনপির আবদুল লতিফ জনি ও সৈয়দ শহিদুল হক জামালের রিট আবেদন হাই কোর্ট ‘উত্থাপিত হয়নি’ মর্মে খারিজ করে দিয়েছে। ফলে তাদের আর নির্বাচন করার সুযোগ থাকছে না।

পটুয়াখালী-১ আসনে জাতীয় পার্টির রুহুল আমিন হাওলাদার, সিরাজগঞ্জ -২ আসনে বিএনপির ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, নাটোর-২ আসনে বিএনপির রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু এবং খাগড়াছড়ি  আসনে বিএনপির রিট আবেদনের ওপর শুনানি শেষে সোমবার আদেশের জন্য রেখেছে হাই কোর্ট। 

জাতীয় পার্টির চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকায় হাওলাদারের নাম নেই, পটুয়াখালী-১ আসনটি রাখা হয়েছে খালি। আর বিএনপির তালিকায় টুকুর আসনে তার স্ত্রী রুমানা মাহমুদ, দুলুর আসনে তার স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন এবং ওয়াদুদ ভূইয়ার আসনে তার ভাতিজা শহিদুল ইসলাম ভূইয়াকে চূড়ান্ত মনোনয়ন দিয়েছে দল।

তিন আসনে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মনোনয়নপত্র বাতিলের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টে দায়ের করা রিট আবেদনের শুনানি হবে সোমবার।

এর মধ্যে খালেদা ফেনী-১ আসনে বিকল্প প্রার্থী মুন্সি রফিকুল আলম, বগুড়া-৬ আসনে মির্জা ফখরুল ইসলাম এবং বগুড়া-৭ আসনে মোরশেদ মিল্টনকে রাখা হয়েছে বিএনপির চূড়ান্ত মনোনয়নের তালিকায়।

এছাড়া ময়মনসিংহ-৪ আসনে বিএনপির এ জেড এম জাহিদ হোসেন, বগুড়া-৪ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী হিরো আলমসহ মোট ছয়জনের শুনানির তারিখ রয়েছে সোমবার। 

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও এ জেড এম জাহিদের আবেদনের শুনানি হবে বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের হাই কোর্ট বেঞ্চে।