নেত্রকোণা-৪ আসনে ৩ নারী প্রার্থী আলোচনায়

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নেত্রকোণা-৪ আসনটির প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী তিন নারী এখন আলোচনার শীর্ষে।

লাভলু পাল চৌধুরী নেত্রকোণা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 Dec 2018, 07:19 AM
Updated : 7 Dec 2018, 09:18 AM

মদন, মোহনগঞ্জ ও খালিয়াজুরী উপজেলা নিয়ে গঠিত হাওরাঞ্চলের এ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগের রেবেকা মমিন। তিনি নবম ও দশম সংসদে নির্বাচিত হন। এবারও তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী।

রেবেকা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মন্ত্রিসভার খাদ্যমন্ত্রী আব্দুল মমিনের স্ত্রী।

অন্য দুই প্রার্থী হলেন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরের স্ত্রী তাহমিনা জামান শ্রাবণী আর সিপিবির কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য জলি তালুকদার।

তাদের এই ভোটের লড়াইকে নারীর ক্ষমতায়নে অগ্রগতি হিসেবে দেখছেন স্থানীয় নারী সংগঠনের  নেত্রীরা।

জেলা মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক তাহেজা বেগম বলেন, সামগ্রিকভাবে নারীর এগিয়ে চলায় তিন নারীর প্রার্থী হওয়া গুরুত্বপূর্ণ, যা দেশের নারী নেতৃত্ব উঠে আসায় ভূমিকা রাখবে।

“একে নারী  আন্দোলনের একটি অর্জন হিসেবে দেখছি। আগামীতে আরও নারী নির্বাচনে এগিয়ে আসবেন আশা করা যায়। রাজনৈতিক দলগুলোরও দায়িত্ব নারীদের সামনে নিয়ে আসা।”

তিন নারী প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হওয়া নারীদের জন্যে খুশির খবর বলে মনে করেন জেলা মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান শামছুন্নাহার বিউটি।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “দিন দিন এভাবেই সর্বত্র নারীরা উঠে আসবেন বলে আশা করি। এটা আগামীতে নারী জাগরণে সহায়ক হবে। এটি মাইলফলক হয়ে থাকবে।”

এ আসনটিতে দুই লাখ ৯৮ হাজার ২৩৭ ভোটার রয়েছেন।

জেলার রিটার্নিং কর্মকর্তা জেলা প্রশাসক মঈনউল ইসলাম জানান, তার মধ্যে নারী এক লাখ ৪৮ হাজার ৩১ আর পুরুষ এক লাখ ৫০ হাজার ২০৬ জন।

খালিয়াজুরী উপজেলা সদরের একটি স্কুলের শিক্ষক শফিকুল ইসলাম তালুকদার।

তিনি বলেন, মূলত তিন নারী প্রার্থীর মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা চলছে। এ এলাকার মানুষ এবার একজন নারীনেত্রী বেছে নেবেন।

মোহনগঞ্জ উপজেলার কুলপতাক গ্রামের বাসিন্দা শিক্ষক সুস্থির সরকার বলেন, সব মহলেই এই প্রার্থীরা  এখন আলোচনার শীর্ষে।

ভাল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে মনে করেন মদন উপজেলার দেওয়ান বাজার এলাকার নুরুল হক রুনো।

মোহনগঞ্জ উপজেলার সমাজ গ্রামের ভোটার রিক্তা বণিক। তিনি বলেন, “আমাদের এলাকায় মূল প্রতিদ্বন্দ্বী তিন নারী। আলোচনার কেন্দ্রে আছেন তিনজনই। তারা সব দিক দিয়েই যোগ্য।”

এই প্রার্থীরা আন্দোলন-সংগ্রামে আছেন বলে জানালেন মোহনগঞ্জের নওগাঁ গ্রামের ভোটার আইনজীবী রফিকুল ইসলাম।

তিনি বলেন, “সুখে-দুখে এলাকার মানুষ তাদের পাশে পায়। তারা রাজনীতিতে এগিয়ে আছেন।”

জেলার আটপাড়া কলেজের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মানিক রায় বলেন, “জাতীয় নির্বাচনে বিরল এই প্রতিদ্বন্দ্বিতা নারীদের সমাজে গুরুত্বপূর্ণ করে তুলবে। সমাজে একটি মেসেজ যাবে: নারীরা সব ক্ষেত্রেই যথাযথ ভূমিকা রাখতে সক্ষম। এতে নারীদের মর্যাদা বাড়বে। নারীরা নেতৃত্বে এগিয়ে আসতে উৎসাহ বোধ করবেন।”