পুলিশকে নিয়ে বৈঠকে বসছে ইসি

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার এবং সবার জন্য সমান সুযোগ তৈরিসহ বিভিন্ন বিষয়ে নির্দেশনা দিতে পুলিশকে নিয়ে বৈঠকে বসছে ইসি।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Nov 2018, 05:35 PM
Updated : 21 Nov 2018, 05:37 PM

বৃহস্পতিবার এই বৈঠক হবে বলে বুধবার সাংবাদিকদের জানিয়েছেন ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ।

তিনি বলেন, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান জোরদার করা, সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, নারী ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে যাওয়া নির্বিঘ্ন করা, রিটার্নিং ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাদের নিরাপত্তা, নির্বাচনী সামগ্রীর হেফাজত করা, নির্বাহী ও জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটদের নিরাপত্তায় পুলিশ পাহারা দেয়া, নির্বাচনের আগে, ভোটের দিন ও ভোট পরবর্তী সময়ের সার্বিক পরিবেশ শান্তিপূর্ণ রাখার বিষয়গুলো নিয়ে নির্দেশনা থাকবে সভায়।

ইসি সচিব বলেন, “সভা থেকে নির্বাচনের আগে-পরে ও ভোটের দিনের পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠু রাখতে ১২ দফা নির্দেশনা দেওয়া হবে।”

নির্বাচনের আচরণ বিধিমালা প্রতিপালনে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা যাতে নির্বিঘ্নে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করতে পারেন, সেজন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক পুলিশ সদস্য নিয়োগ করা হবে বলে জানান তিনি।

হেলালুদ্দীন বলেন, “নির্বাচনকে কেন্দ্র করে অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহার বেড়ে যায়। বৈধ অস্ত্রের অপব্যবহারও বেড়ে যায়। এমনকি কিছু গোষ্ঠী বা আন্ডারগ্রাউন্ডের সন্ত্রাসীদের তৎপরতা বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। এগুলো রোধে পুলিশের করণীয় ঠিক করা হবে।”

সভায় প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ চার নির্বাচন কমিশনার উপস্থিত থাকবেন। পুলিশের আইজি, জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব, সকল মহানগর পুলিশ কমিশনার, উপমহাপুলিশ পরিদর্শক ও পুলিশ সুপাররা (এসপি) উপস্থিত থাকবেন সভায়।

এক প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, “সীমান্তবর্তী ও দুর্গম এলাকার শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় বিশেষ নজর থাকবে। জঙ্গি চক্র যাতে মাথা চাড়া দিয়ে না উঠতে পারে- এ বিষয়গুলোতেও আলাদা নির্দেশনা থাকবে।”

বিশেষ সভায় সেনা সদরের কোনো প্রতিনিধি থাকবে না বলে জানান ইসি সচিব।

তিনি বলেন, “সেনা প্রতিনিধিদের প্রতীক বরাদ্দের পর আইন-শৃঙ্খলা বৈঠকে ডাকা হবে। সভাটি আগামী ১০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে।”

ধর্মীয় সভা আয়োজনে বাধ্যবাধকতা আরোপের বিষয়ে সচিব বলেন, “ধর্মীয় সভা পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা হয়নি। আবেদন পাওয়া সাপেক্ষে রিটার্নিং অফিসার পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে সভার অনুমোদন দিতে পারে। তবে ধর্মীয় সভায় কোনো রাজনৈতিক বক্তব্য রাখা যাবে না। এ ধরনের সভায় ম্যাজিস্ট্রেট উপস্থিত থাকবে।”

ফেইসবুক পর্যবেক্ষণের বিষয়ে করণীয় ঠিক করতে ইসি আগামী ২৬ নভেম্বর নির্বাচন কমিশন সব মোবাইল ফোন অপারেটর ও বিটিআরসির প্রতিনিধিদের সঙ্গে বসবে বলে জানান তিনি।

“গুজব রোধ করে ভোটের দিনের পরিবেশ ঠিক রাখার বিষয়টি টেকনিক্যাল। ফলে এসব রোধে আমরা কী চাই আর তা কীভাবে করা সম্ভব- তা নিয়েই আমরা ওই দিন প্রাথমিক আলাপ করব।”

তবে ভোটের দিন ফেইসবুক বন্ধ রাখার  কোনো পরিকল্পনা আপাতত নেই বলে জানান ইসি সচিব।

তফসিল ঘোষণার পর বিএনপির নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারের অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে কি না- এ প্রশ্নে সচিব বলেন, “আমরা সবই কমিশনের নজরে আনছি। বিএনপি আজ যে চিঠি দিয়েছে, সেটা নিয়ে আগামীকাল বৃহস্পতিবার কমিশন সভায় আলোচনা হবে। এ বিষয়ে পরবর্তীতে জানানো হবে।”ৎ

বিএনপির তালিকা জমা

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন প্রত্যাশীসহ গ্রেপ্তার হওয়া নেতাকর্মীদের একটি তালিকা ইসিতে জমা দিয়েছে বিএনপি।

বুধবার সকালে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের মামলা ও তথ্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা মো. সালাহ উদ্দিন খানের নেতৃত্বে এক প্রতিনিধি দল এসে এই তালিকা জমা দেয়।

গ্রেপ্তারদের মধ্যে মনোনয়নপ্রত্যাশীরা হলেন বাগেরহাট-৪ আসনের মো. ইব্রাহিম হোসেন, গাইবান্ধা-২ আসনের মো. আনিসুজ্জামান খান বাবু, নেত্রকোনা-২ আসনের মো. আনোয়ারুল হক রয়েল, ঢাকা মহানগর-১০ আসনের শেখ রবিউল আলম রবি ও যশোর-৬ আসনের মো. আবু বক্কর আবু।

দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, জাতীয় নির্বাচনে মনোনয়ন প্রত্যাশী নেতাদেরও গ্রেপ্তার ও আটক রাখছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। এ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাশী পাঁচজনকে আটকের পর জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

মনোনয়নপ্রত্যাশী একজনকে এখনও খুঁজে পাওয়া যায়নি বলে উল্লেখ করা হয় চিঠিতে।  কিন্তু তার নাম উল্লেখ করা হয়নি।

চিঠিতে বলা হয়, “বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে করা মামলা ও গ্রেপ্তার হওয়া নেতাকর্মীদের তালিকা এর আগে দুইবার দলের পক্ষ থেকে ইসিকে দেওয়া হয়েছে। সুনির্দিষ্ট মামলার তালিকা দেওয়ার পরও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী বেপরোয়া।”