সাভারের আশুলিয়ায় আরও একটি পোশাক কারখানার পক্ষ থেকে পাঁচ শতাধিক শ্রমিককে আসামি করে মামলা হয়েছে।
Published : 22 Dec 2016, 02:05 PM
এদিকে বুধবার রাতে দুই শ্রমিক নেতাসহ আরও ১২ জনকে আটক করা হয়েছে। অব্যাহত শ্রমিক বিক্ষোভের মধ্যে এ নিয়ে মোট ১৯ জনকে আটক করল আশুলিয়ার পুলিশ।
আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) একেএম শামীম হাসান জানান, বুধবার হা-মীম গ্রুপ কর্তৃপক্ষ পাঁচ শতাধিক শ্রমিকের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেন।
তবে তাদের বিরুদ্ধে কী অভিযোগ আনা হয়েছে সে বিষয়ে কিছু জানাতে পারেননি তিনি।
বৃহস্পতিবারও বন্ধ থাকা অর্ধশতাধিক কারখানার প্রধান ফটকসহ পুরো শিল্পাঞ্চলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কয়েক হাজার সদস্যদের টহলে থাকতে দেখা গেছে।
বুধবার উইন্ডি অ্যাপারেলস লিমিটেড ও ফাউনটেইন গামের্ন্টস কর্তৃপক্ষ ২৪৯ জন শ্রমিকের বিরুদ্ধে ‘উসকানি ও শৃঙ্খলাভঙ্গের’ অভিযোগে দুটি মামলা দায়ের করে। এছাড়া বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগে ১২১ জন শ্রমিককে সাময়িক বরখাস্ত করে উইন্ডি কর্তৃপক্ষ।
মামলা হওয়ার পর পুলিশ অভিযান চালিয়ে জামগড়া এলাকা থেকে মাসুদ ও বাকের নামের দুই শ্রমিক ও পরে পাঁচ শ্রমিক নেতাকে আটক করে। এরপর গভীর রাতে আরও দুই শ্রমিক নেতা ও ১০ শ্রমিককে আটক করা হয় বলে আশুলিয়া থানার ওসি মহসিনুল কাদির জানান।
গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক খায়রুল মামুন মিন্টু জানান, গভীর রাতে জামগড়া এলাকা থেকে তাদের সংগঠনের ছয়জনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। তবে তাদের পরিচয় তিনি নিশ্চিত করতে পারেননি।
শ্রমিক নেতাদের আটকের খবরে সাধারণ শ্রমিকরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “অনেকেই গ্রেপ্তারের ভয়ে গ্রামের বাড়িতে চলে গেছে।”
বেতন বৃদ্ধিসহ অন্যান্য দাবিতে সোমবার ২৫টি আশুলিয়ার কারখানার শ্রমিকরা কাজ বন্ধ রেখে বিক্ষোভ শুরু করেন। এরই মধ্যে বাণিজ্য মন্ত্রী, নৌমন্ত্রী ও শ্রম প্রতিমন্ত্রী বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে বৈঠক করে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করলেও আন্দোলন অব্যাহত থাকে; মঙ্গলবার কাজ বন্ধ থাকে ৫৫ কারখানায়।
বিভিন্ন সংগঠনের শ্রমিকনেতাদের পক্ষ থেকে বলা হয়, তারা আন্দোলনে সমর্থন না দিলেও শ্রমিকরা নিজেরাই সংগঠিত হয়ে কাজ বন্ধ করে দিয়েছে।
আর এ বিষয়টি ধরেই শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু মঙ্গলবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, কোনো একটা পক্ষ উদ্দেশ্যমূলকভাবে গুরুত্বপূর্ণ এই খাতের ক্ষতি করতে অসন্তোষ সৃষ্টি করছে।
শ্রমিকদের এই আন্দোলনকে ‘অবৈধ’ আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, শ্রমিকরা কাজে না ফিরলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিজিএমইএর ওই সিদ্ধান্ত বুধবার থেকেই কার্যকর করা হয়। বুধবার সকালে কারখানায় এসে নোটিস দেখে ফিরে যান বন্ধ কারখানাগুলোর অনেক কর্মী।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ১৫ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয় আশুলিয়ায়। সেই সঙ্গে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের বাইপাইল থেকে জিরাব পর্যন্ত পুলিশ, শিল্প পুলিশ ও আর্মড পুলিশের টহল চলতে থাকে।
বৃহস্পতিবারও তা অব্যাহত রয়েছে জানিয়ে শিল্প পুলিশ-১ এর পরিচালক মোস্তাফিজার রহমান বলেন, “যে কোনো বিশৃঙ্খলা এড়াতে কারখানাগুলোর প্রধান ফটকে এবং শীল্পাঞ্চলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কয়কে হাজার সদস্য মোতায়েন করা রয়েছে।”