সিঙ্গাপুর থেকে জঙ্গি সংশ্লিষ্টতায় ২৬ বাংলাদেশির ফেরত পাঠানো নিয়ে উদ্বিগ্ন প্রবাসীদের আশ্বস্ত করে দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, যারা কোন অন্যায় কাজে জড়াবেন না তাদের ভয় পাওয়ার কিছু নেই।
Published : 25 Jan 2016, 05:51 PM
সিঙ্গাপুরে বসে বাংলাদেশে ‘জিহাদের ছক’
সিঙ্গাপুরফেরত ১৪ জন আনসারুল্লাহর ‘অনুসারী’: পুলিশ
জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে দুই মাস আগে গ্রেপ্তারের পর ফেরত পাঠানো ২৬ বাংলাদেশি নিজের দেশের সরকারের বিরুদ্ধে সশস্ত্র জিহাদের পরিকল্পনায় ছিলেন- সিঙ্গাপুর সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতি বরাত দিয়ে ২০ জানুয়ারি দেশটির গণমাধ্যমগুলোতে এই খবর প্রকাশিত হয়।
এর পরিপ্রেক্ষিতে সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী, উপপ্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রীসহ আরও অনেকেই তাদের আশংকার কথা জানিয়েছেন। আর এতে সিঙ্গাপুরে বসবাসরত বাংলাদেশিদের মধ্যে ভীতির সৃষ্টি হয়।
তবে ২৩ জানুয়ারি শনিবার সিঙ্গাপুরের খাদিজা মসজিদ পরিদর্শন করেন দেশটির স্বরাষ্ট্র ও আইনমন্ত্রী কাসিভিসওয়নাথান সানমুগাম। তিনি প্রবাসী বাংলাদেশিদের সঙ্গে দুপুরের খাবার খান। এসময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “আপনারা যারা বাংলাদেশি তাদের ভয়ের কিছু নেই।”
প্রবাসীদের কোন অন্যায় কাজে না জড়িয়ে, নির্ভয়ে কাজ করে যাওয়ার কথা বলেন সিঙ্গাপুরের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সানমুগাম।
তবে তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, "যদি কেউ জঙ্গিবাদের মাধ্যমে সিঙ্গাপুর, বাংলাদেশ অথবা পৃথিবীর অন্য কোন দেশের বিরুদ্ধে আক্রমণ করার জন্য সিঙ্গাপুরকে ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করতে চায় তাদের ক্ষেত্রে সিঙ্গাপুর সরকার কোনো ছাড় দেবে না। "
আর সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশের হাই কমিশনার মাহবুব উজ জামান এই বিষয়ে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ইতোমধ্যে সিঙ্গাপুর সরকারের পররাষ্ট্র, স্বরাষ্ট্র, ও জনশক্তি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। মন্ত্রণালয়গুলোর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে বাংলাদেশি শ্রমিকদের ভয় পাওয়ার কিছু নেই। সিঙ্গাপুরের অর্থনীতিতে বাংলাদেশি শ্রমিকরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। সুতরাং যারা ভালোভাবে কাজ করছেন তাদের ভয়ের কিছু নেই। তবে যারা অসৎ বা অবৈধভাবে কিছু করবে তাদের ব্যাপারে সিঙ্গাপুর সরকার সবসময়ই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেবে।”
হাই কমিশনার আরও বলেন, “সিঙ্গাপুরের নির্মাণ এবং জাহাজ নির্মাণ শিল্পে বাংলাদেশি শ্রমিকদের চাহিদা সবসময় ছিল এবং আগামীতেও থাকবে। এছাড়া স্থানীয় কোম্পানিগুলোর মালিকরা সবসময়ই বাংলাদেশি শ্রমিকদের চাহিদার কথাই বলেছেন।”
তিনি আরও বলেন, “ভবিষ্যতে কেউ যেন অপরাধমূলক কাজে উৎসাহিত না হয় সেজন্য বেশ কিছু সচেতনতামূলক কাজ হাই কমিশন হাতে নিয়েছে, যেমন বাসস্থানে গিয়ে শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা করা, তাদেরকে সিঙ্গাপুরে বিদ্যমান আইন-কানুন সম্পর্কে আরও সচেতন করা।”
এছাড়াও সিঙ্গাপুরে বসবাসরত বাংলাদেশি ব্যবসায়ী এবং সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোকে সঙ্গে নিয়ে জনসচেতনতায় কাজ করার কথা বলেন হাই কমিশনার।
সিঙ্গাপুরের তথ্যপ্রযুক্তি ও মুসলিমবিষয়ক মন্ত্রী ইয়াকুব ইব্রাহিম বলেন, “আমাদের সবাইকে অপরাধীদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে কিন্তু যে প্রবাসী কর্মীরা এখানে কাজ করছেন তাদের সঙ্গে কোনোরকম বৈষম্যমূলক আচরণ করা যাবে না। কারণ, প্রবাসী শ্রমিকদের পরিশ্রমের জন্যই আজ সিঙ্গাপুর বিশ্বের অধুনিক দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম।”
প্রবাস জীবনের অভিজ্ঞতা সরাসরি আমাদের জানান। নাম, ঠিকানা ও সংশ্লিষ্ট ছবিসহ লেখা পাঠিয়ে দিন এই ঠিকানায় [email protected]