একজন দলের সাংগঠনিক সম্পাদক, অন্যজন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক; দুজনই মেয়র প্রার্থী হতে চাওয়ায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে বিভাজনের রেখা দেখা দিয়েছে।
Published : 21 Mar 2015, 06:46 PM
নির্বাচন কমিশন গত বুধবার তফসিল ঘোষণা করলেও তার আগে থেকেই মেয়র প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছা জানিয়ে প্রচার চালিয়ে আসছিলেন পুরান ঢাকার বাসিন্দা সাঈদ খোকন ও হাজি মো. সেলিম।
দলীয় সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমর্থন নিয়ে প্রচার শুরু করেছেন বলে জানিয়েছেন ঢাকার প্রথম নির্বাচিত মেয়র মোহাম্মদ হানিফের ছেলে সাঈদ খোকন।
অন্যদিকে দলের মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে অংশ নিয়ে নৌকা প্রতীকে প্রার্থীকে হারিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়া হাজি সেলিমের কথা, এলাকাবাসী তাকে চায় বলেই তিনি নির্বাচনী লড়াইয়ে।
পুরান ঢাকায় আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে দুজনের সমর্থক যেমন পাওয়া গেছে; তেমনি দেখা গেছে, কেউ আছেন হাজি সেলিমের প্রচারে, কেউবা সাঈদ খোকনের সঙ্গে।
৫৭টি ওয়ার্ডের ১৮ লাখ ৭০ হাজার ৩৬৩ জন ভোটারের ভোটে নির্বাচিত হবেন ঢাকা দক্ষিণের মেয়র, যার একটি বড় অংশ পুরান ঢাকার বাসিন্দা।
পুরান ঢাকার ইসলামপুর, চকবাজার, কামরাঙ্গীরচর, লালবাগ ও শাঁখারী বাজারে ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে দেখা যায়, এসব এলাকায় হাজি সেলিমের সমর্থক বেশি।
অন্যদিকে সূত্রাপুর, গেন্ডারিয়া, কলতাবাজার, বংশাল ও ওয়ারী এলাকার সমর্থন আবার ঝুঁকে আছে সাঈদ খোকনের দিকে।
কামরাঙ্গীরচরের মাতবর বাজারের বাসিন্দা ব্যবসায়ী ইকরাম হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এই এলাকার ৮০ শতাংশ ভোট হাজি সেলিম পাবেন। কারণ হাজি সেলিমের যতগুলো প্রতিষ্ঠান আছে, সেগুলোর কর্মচারী ও সুবিধাভোগীরা এই এলাকায় থাকেন।”
হাজি সেলিমকে সমর্থনের কারণ জানতে চাইলে লালবাগের মিটফোর্ড হাসপাতালের কর্মচারী মো. দুলাল মিয়া বলেন, “বিপদে আপদে বা কোনো সমস্যায় আমরা হাজি সেলিমকে পাশে পাই। এই জন্যই তাকে ভোট দেব।”
মিটফোর্ড হাসপাতাল থেকে অল্প দূরে সূত্রাপুর এলাকায় দেখা গেল ভিন্ন চিত্র।
“আমরা কোনো দখলবাজ ব্যক্তিকে মেয়র হিসেবে চাই না,” হাজি সেলিমকে ইঙ্গিত করে বলেন তিনি।
বংশালের ব্যবসায়ী সারোয়ার আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মেয়র হানিফ ভালো মানুষ ছিলেন। তার ছেলে এবার নির্বাচনে দাঁড়াচ্ছেন, আমরা তাকেই সমর্থন দেব।”
লালবাগ থানা আওয়ামী লীগের নেতা মো. শাহনেওয়াজের সমর্থন মহানগর কমিটির যুগ্ম সম্পাদক হাজি সেলিমের দিকেই।
“এই মানুষটা পুরান ঢাকার উন্নয়নের জন্য কাজ করেছেন। অন্য নেতারা যেখানে শুকনা কথায় চিড়া ভিজাইতে চায়, সেখানে তিনি নিজে মাঠে নেমে কাজ করেন।”
অন্যদিকে সূত্রাপুর থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ফয়সাল আহমেদ নাসিরের সমর্থন আবার মহানগর সাংগঠনিক সম্পাদক সাঈদ খোকনের দিকে।
“দল যা সিদ্ধান্ত নিয়েছে, আমরা তার পক্ষে আছি। আমরা দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে যাব না,” বলেন তিনি।
তবে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, দল সমর্থিত প্রার্থী কে, সেটা এখনও তাদের জানানো হয়নি। দলীয় সিদ্ধান্ত আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা হলে তার পক্ষেই থাকবেন তারা।
তফসিল অনুযায়ী, আগামী ২৯ মার্চের মধ্যে মনোয়নপত্র জমা দিতে হবে। তারপর যাচাই-বাছাই শেষে প্রার্থিতার ঘোষণা দেবেন রিটার্নিং কর্মকর্তা।