দেশে স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে ভোট বর্জনকারী বিএনপির সহযোগিতা চেয়েছেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।
Published : 25 Jan 2014, 05:10 PM
চলমান রাজনীতি নিয়ে শনিবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের এক আলোচনায় সভায় তার এই আশা প্রকাশের পর বিএনপি নেতা আমী খসরু মাহমুদ চৌধুরী ‘সঠিক’ নির্বাচনের দাবি তুলেছেন।
নির্বাচনের পর বাংলাদেশ কোন পথে যাচ্ছে- তার বিশ্লেষণে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের আয়োজনে এই অনুষ্ঠানে এক হন দেশের শীর্ষ পর্যায়ের রাজনীতিক, বিশ্লেষক, নারীনেত্রীরা।
বিএনপিবিহীন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সরকার গঠনের প্রেক্ষাপটে এই সভায় অধিকাংশ আলোচকই স্থিতিশীলতা রক্ষায় রাজনৈতিক সমঝোতার ওপর জোর দেন। তা না হলে অস্থিতিশীলতার আশঙ্কাও প্রকাশ করেন তারা।
নতুন সরকারে মন্ত্রীর দায়িত্ব নেয়া তোফায়েল বলেন, “দেশ স্থিতিশীল থাকবে, বিনিয়োগ হবে। দেশ স্বাভাবিক হয়ে ব্যবসা-বাণিজ্য হবে, রপ্তানি বাড়বে। দেশ এগিয়ে যাবে।
“উন্নয়নের পথে দেশকে স্থিতিশীল রাখতে বিএনপি সহযোগিতা করবে, আশা করি।”
রাজনৈতিক বিভেদ ভুলে দেশের অগ্রগতির জন্য কাজ করার প্রতিশ্রুতিও দেন তিনি।
এর প্রতিক্রিয়ায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমীর খসরু বলেন, “জনপ্রতিনিধিত্বশীল নির্বাচন হলেই দেশে স্থিতিশীলতা আসবে। এ জন্য বিএনপির দরকার নেই।”
দশম সংসদ নির্বাচন রাজনৈতিকভাবে ‘সিদ্ধ’ হয়নি দাবি করে বিএনপি চেয়ারপারসনের এই উপদেষ্টা বলেন, এই অবস্থা চললে জনগণের ভোটাধিকার ফিরে আসবে না।
“এ নির্বাচন রাজনীতিকভাবে সিদ্ধ হয়নি। কোনোভাবেই তা জনপ্রতিনিধিত্বশীল নির্বাচন নয়। সবার অংশগ্রহণে ভোট নিশ্চিত করতে না পারলে জনগণের ভোটাধিকার থাকবে না।”
‘নিরপেক্ষ’ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি জানান দশম সংসদ নির্বাচনকে ‘অবৈধ’ দাবি করে আসা বিএনপির এই নেতা।
অনুষ্ঠানে বক্তব্যে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ টি এম শামসুল হুদা বলেন, দশম সংসদ নির্বাচনে এসে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ধারায় ছেদ ঘটেছে।
“ব্যালট পেপারে স্ট্যাফিং হয়েছে, সেই সঙ্গে নজিরবিহীন ঘটনা যেটা ঘটেছে সেটা হলো একজন সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তাকে হত্যা করা হয়েছে। ভালো নির্বাচনের পথে এটা ব্যত্যয়। এটা খারাপ নজির হয়ে থাকল।”
নতুন নির্বাচনের বিষয়ে বিএনপির সংলাপের আহ্বানের প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, একাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে আলোচনার সুযোগ রয়েছে।
“একটি নির্বাচন হয় ৫ বছরের জন্য। সরকার ৫ বছর থাকার চেষ্টা করে। আমরা কখনো বলিনি, সংলাপের প্রয়োজন নেই। অবশ্যই একাদশ সংসদ নির্বাচন হবে, এ জন্য আলোচনা হবেই।”
নির্বাচনে বিএনপির অংশ না নেয়ায় সমালোচনা করে তোফায়েল বলেন, “বিএনপি এবার অংশ নিল না, আগামীবার আওয়ামী লীগ যদি অংশ না নেয়, তখন কী হবে? এটা কি চলতে থাকবে?
“বিএনপি একটি প্রস্তাব মেনে নিয়ে আরেকটি প্রস্তাব দেয়নি। এতগুলো দায়িত্ব তো আওয়ামী লীগ নিতে পারে না। কাল যদি সংলাপ হয়, তখনো প্রথম আসবে- ‘সংসদ ভাঙতে হবে...’, ‘শেখ হাসিনাকে মানি না...’, আরো কত কী।”
আলোচনায় অংশ নিয়ে নারীনেত্রী আয়েশা খানম ও খুশি কবির রাজনৈতিক দলগুলোর চলমান কার্যক্রমে হতাশা প্রকাশ করেন।
সভায় সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধের জোর দাবি জানিয়ে সে বিষয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে অবস্থান স্পষ্ট করতে বলেন।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রধান সম্পাদক তৌফিক ইমরোজ খালিদীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আলোচনা করেন সাবেক কূটনীতিক নাসিম ফেরদৌস, সাংবাদিক আমানুল্লাহ কবীর ও মোজাম্মেল বাবুও।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম ওয়েবসাইটে এই অনুষ্ঠান সরাসরি দেখানো হয়। সরাসরি সম্প্রচার করা হয় একাত্তর টেলিভিশনেও।