সাতক্ষীরায় যৌথ অভিযানে ‘নিষ্ঠুরতা’ চলছে দাবি করে তা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন খালেদা জিয়া।
Published : 20 Jan 2014, 08:50 PM
ওই অভিযান নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশের পর দৈনিক ইনকিলাব বন্ধের নিন্দাও জানান বিএনপি চেয়ারপারসন।
সোমবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সমাবেশে খালেদা বলেন, “সাতক্ষীরার মতো ছোট জায়গায় যৌথবাহিনী যেভাবে মানুষের ওপর অত্যাচার নির্যাতন চালিয়েছে। মা-বোনদের হত্যা করা হয়েছে।
“সাতক্ষীরায় অভিযানে আদৌ যৌথবাহিনী ছিল কি না, তা সঠিক করে কেউ বলতে পারে না, মানুষের মনে অনেক সন্দেহ।”
গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে যুদ্ধাপরাধী আব্দুল কাদের মোল্লা ও দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে রায়ের পর থেকে বিএনপির জোটসঙ্গী জামায়াতে ইসলামের তাণ্ডব চলছে সাতক্ষীরায়, যাতে নিহত হন আওয়ামী লীগের প্রায় ২০ জন নেতা-কর্মী।
সাতক্ষীরায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এবং আসামি গ্রেপ্তারে গত ১৫ ডিসেম্বর রাত থেকে পুলিশ, র্যাব ও বিজিবির যৌথঅভিযান শুরু হয়।, যাতে সংঘর্ষে নিহত হন জামায়াতের কয়েকজন।
খালেদার জনসভার দিনই সাতক্ষীরায় এক জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সাতক্ষীরা সন্ত্রাসমুক্ত না হওয়া পর্যন্ত অভিযান চলবে।
সাতক্ষীরা অভিযান নিয়ে খালেদা বলেন, “সরকারের কাজ-কর্ম দেখে মনে হয় না দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব অটুট আছে।”
এই প্রসঙ্গ ধরে দৈনিক ইনকিলাব বন্ধের নিন্দাও জানান বিএনপি চেয়ারপারসন।
সাতক্ষীরায় যৌথ অভিযানে ভারতীয় বাহিনী জড়িত বলে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় যুদ্ধাপরাধী হিসেবে চিহ্নিত প্রয়াত আব্দুল মান্নানের প্রতিষ্ঠিত সংবাদপত্র ইনকিলাবে।
এরপর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে করা মামলায় ইনকিলাবের তিন সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পত্রিকাটির প্রকাশও বন্ধ হয়ে গেছে।
খালেদা বলেন, “ইনকিলাবে যে সংবাদটি প্রকাশ হয়েছে, তার আগে ইন্টানেটে বিভিন্ন ওয়েবসাইট, বিভিন্ন অনলাইনে, ফেইসবুকে প্রকাশিত হয়েছে।
“ওই বিষয়টি সত্য কিংবা মিথ্যা হয়ে থাকলে আগেই সরকারের ব্যাখ্যা দেয়া উচিৎ ছিল। সঠিক ব্যাখ্যা না দিয়ে পত্রিকাটি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।”
এভাবে আমার দেশ, চ্যানেল ওয়ান, দিগন্ত টিভি, ইসলামিক টিভিও বন্ধ করে দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
গত বছরের ৫ মে শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে অভিযানের বিষয়ে খালেদা বলেন, “হেফাজতের সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই। কিভাবে তাদের ওই দিনে সমাবেশে রাতের অন্ধকারে অভিযান চালানো হয়েছে, এতিম-আলেমদের হত্যা করা হয়েছে। তাদের কী অপরাধ ছিল?”
“যারা ওই দিন অভিযান চালিয়েছে, তারা কি বাংলাদেশের মানুষ ছিল কি না, এ নিয়ে সন্দেহ রয়েছে,” বলেন তিনি।
শাপলা চত্বরে অবস্থান নেয়া হেফাজতকর্মীদের তুলতে অভিযানে বহু নিহত হয় বলে বিএনপির অভিযোগ। তবে হতাহতের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, এতে কেউ হতাহত হয়নি।