দেশে ‘শান্তি’ রক্ষার প্রয়োজনে প্রতিরক্ষার দায়িত্বে থাকা সেনাবাহিনীর ভূমিকা প্রত্যাশা করছেন বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া।
Published : 24 Mar 2013, 10:45 AM
তিনি বলেছেন, “আমাদের সেনাবাহিনী বিদেশে শান্তি রক্ষায় কাজ করে। দেশে কোনো বিশৃঙ্খলা হলে তারা বসে থাকবে না। তারা সময়মতো দায়িত্ব পালন করবে।”
যুদ্ধাপরাধী দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ফাঁসির রায়কে কেন্দ্র করে বিএনপির জোটসঙ্গী জামায়াতে ইসলামীর তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত বগুড়ায় এক জনসভায় একথা বলেন তিনি।
গত ৩ মার্চ ওই তাণ্ডবের সময় বগুড়ার শাহজাহানপুর থানায় হামলা হলে পুলিশ গুলি চালালে নিহত হন চারজন। জামায়াতের সহিংসতা ঠেকাতে পুলিশের গুলিতে নিহতের ঘটনাকে ‘গণহত্যা’ বলছে বিএনপি।
ওই দিন থানায় হামলা হলে পার্শ্ববর্তী ক্যান্টনমেন্ট থেকে একদল সেনা সদস্য থানা রক্ষায় যায়, কয়েক ঘণ্টা সেখানে অবস্থান করেন তারা।
তিনি বলেন, “আমাদের সেনাবাহিনী জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে বিদেশে শান্তি স্থাপনে কাজ করতে যায়। তাদের দেশে যদি শান্তি না থাকে; তাহলে বিদেশিরা বলবে, আমাদের সেনাবাহিনী নিজের দেশে শান্তি রক্ষা করতে পারছে না।”
“এসব আজ ভাবনার সময় এসেছে,” বলেন বিএনপি চেয়ারপারসন।
যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষায় জামায়াতের তাণ্ডবের পাশাপাশি বিএনপি নেতৃত্বাধীন বিরোধী দলের আন্দোলনের পেছনে দেশকে অস্থিতিশীল করার উদ্দেশ্য রয়েছে বলে আওয়ামী লীগ নেতারা বলে আসছেন।
তার মধ্যেই বিরোধীদলীয় নেতার এই বক্তব্য এল। বগুড়ার পর জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে এক সমাবেশে তিনি সরকার পতন আন্দোলনের ডাক দিয়ে বলেন, “এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি করব, সরকার বাধ্য হবে ক্ষমতা ছাড়তে।”
যে দিনটিতে খালেদা জিয়া সেনাবাহিনীকে নিয়ে কথা বলেছেন, ১৯৮২ সালের এই দিনে (২৪ মার্চ) বিএনপি সরকারকে হটিয়ে তৎকালীন সেনাপ্রধান এইচ এম এরশাদ ক্ষমতা দখল করেছিল, জারি করেছিল সামরিক আইন।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর বড় একটি সময় দেশ পরিচালিত হয়েছে সামরিক শাসনের অধীনে, জিয়া ও এরশাদের ওই সামরিক আইন জারিকে পরে অবৈধ ঘোষণা করে উচ্চ আদালত।
সর্বশেষ ২০০৭ ও ২০০৮ এই দুই বছর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নামে দেশ শাসিত হলেও তা কার্যত ছিল সেনা নিয়ন্ত্রিত।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে আন্দোলনরত বিএনপি চেয়ারপারসন রোববার বগুড়া ও জয়পুরহাট সফর করছেন।
শনিবার ঢাকা থেকে গিয়ে বগুড়ায় রাত যাপন করেন তিনি। সকালে জয়পুরহাটে উদ্দেশে যাত্রা করে বগুড়া সদরের মাটিডালী বিমান মোড়ে প্রথম জনসভায় বক্তব্য দেন তিনি।
মাটিঢালি মোড়ের ওই জনসভায় সেনাবাহিনীর প্রসঙ্গে কথা বলেন তিনি। পরে জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে শোক সমাবেশ করেন তিনি।