নস্টালজিকে রয়েছে থাই, চাইনিজ, কিন্টনেন্টাল এবং সি ফুড। আর ডি’স্ম্যাকে রয়েছে মাল্টি কুইজিন।
Published : 11 Jun 2015, 06:19 PM
নস্টালজিক
ধানমণ্ডির সাত মসজিদ রোডে স্টার কাবাবকে হাতের ডানে রেখে একটি বিল্ডিং পেরোলেই চোখে পড়বে আম গাছে ঝুলে আছে কয়েকটি হলুদ রংয়ের বাক্স। কাছে গিয়ে খেয়াল করলে দেখা যাবে বাক্সগুলোতে আঁকা আছে রিক্সা, সাইকেল আর বেবি ট্যাক্সির ছবি। মনে প্রশ্ন জাগতেই পারে, কেনো? উত্তরটা, নস্টালজিক ক্যাফে। গাছের সামনের বিল্ডিংয়ের ১০ তলায় নব্বইয়ের দশকের চেতনায় সাজানো হয়েছে এই রেস্তোরাঁ।
প্রথমটির নিচে আছে চেয়ার-টেবিল নিয়ে বসার ব্যবস্থা, তবে ডান দিকের কোণার গাছটির একপাশে গোলকার সোফা বসানো হয়েছে। ডান দিকের কোণায় একটু আয়েশে বসার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। হলুদ রংয়ের শোফার কুশনগুলোতে আছে রিক্সা, সাইকেল আর বেবি ট্যাক্সির ছবি।
এছাড়াও প্রতিটি টেবিলের উপরে আছে বাঁশ কেটে বানানো ল্যাম্প শেইড। আর কাচের পার্টিশনগুলোতে আছে গ্লাস পেইন্টিং।
নস্টালজিকের মালিক মোহাম্মদ মহিউদ্দিন বলেন, “রেস্তোরাঁর আটজন অংশীদারের মধ্যে একজন আমি। এরমধ্যে চারজনই সাংবাদিকতার সঙ্গে জড়িত। এপ্রিলের ১২ তারিখে যাত্রা শুরু করেছি আমরা। মূলত আড্ডা মারার মতো একটা রেস্তোরাঁ তৈরি করতে গিয়েই সাজসজ্জায় নিজেদের কৈশরের দিনগুলোকে ফুটিয়ে তোলার কথা মাথায় আসে।”
বটতলায় গোল হয়ে বসে আড্ডা দেওয়া, পুরনো দিনের জনপ্রিয় চলচ্চিত্রের পোস্টার, হাতে আঁকা ছবি, সাইকেল, রিক্সা, বেবি ট্যাক্সি সবকিছুই পুরানো দিনের স্মৃতিচারণের অংশ। এছাড়াও পুরো রেস্তোরাঁ জুড়ে আছে আড়াইশ গাছ। অন্দরসজ্জার দায়িত্বে ছিল চারুকলার শিক্ষার্থীদের একটি দল— জানালেন তিনি।
খাবার সম্পর্কে মোহাম্মদ মহিউদ্দিন বলেন, “থাই, চাইনীজ, কন্টিনেন্টাল, সি ফুড, বিভিন্ন ধরনের পানীয় ইত্যাদি প্রায় সবধরনের খাবারই পাবেন এখানে। সামুদ্রিক খাবারগুলোর মধ্যে স্কুইড, রেড স্ন্যাপার ইত্যাদি আসে চট্টগ্রাম থেকে। আর কাঁকড়া আনা হয় ভোলার চর কুকড়িমুকড়ি থেকে।”
সামুদ্রিক খাবারগুলোর দাম পড়বে ৩৩৭ টাকা থেকে ৮৪৭ টাকা।
স্টেকের মাংস আনা হয় বেঙ্গল মিট থেকে।
আছে সিচ্যুয়ান, মাশরুম, টি-বোন, পেপার ও মেক্সিকান স্টেক। দাম পড়বে ৬শ’ থেকে সাড়ে ৭শ’ টাকা। এছাড়াও আছে সুপ, মুরগির মাংস, গরুর মাংস, সালাদের বিভিন্ন পদ। পানীয়ের মধ্যে থাকছে কয়েক ধরনের চা, কফি, শেইক, মকটেল, ফলের জুস ইত্যাদি।
মহিউদ্দিন বলেন, “দুপুর এবং রাতে ক্রেতাদের ভীড় বেশি থাকে। সব বয়সের ক্রেতারাই আসেন। সব মিলিয়ে ১২০ জনের বসার ব্যবস্থা আছে। ওয়াইফাই ব্যবস্থা আছে। ফেইসবুক চেক-ইনে আছে ১০ শতাংশ ডিসকাউন্ট। পরবর্তী ঘোষণা না দেয়া পর্যন্ত এই ডিসকাউন্ট অফার চলবে।”
ডি’স্ম্যাক
তিন সারিতে বসার ব্যবস্থা তিন ধরনের। রেস্তোরাঁর দুই পাশ কাচঘেরা হওয়ায় ভেতরে বসে বাইরের দৃশ্য চোখে পড়বে অনেকটাই। পুরো ছাদ জুড়ে কাঠ দিয়ে বিভিন্ন আকারের বাক্স বানিয়ে এর মধ্যে লাইট বসানো হয়েছে। সাধারণ উপকরণ আলোর কারসাজি দিয়েই বেশ দৃষ্টিনন্দন সাজ দেওয়া হয়েছে পুরো রেস্তোরাঁ জুড়ে। এছাড়া দেয়ালে প্লাস্টার না করে দেওয়া হয়েছে মোমের কোটিং।
রেস্তোরাঁর ৪জন মালিকের মধ্যে একজন আশিকুর রহমান ইভান বলেন, “নামের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে সাজসজ্জাতেও ডেনমার্কের ছোঁয়া দিতে চেষ্টা করেছি আমরা। বসার ব্যবস্থা আছে ৭০ জনের। ওয়াইফাই ব্যবস্থাও আছে।”
খাবার সম্পর্কে তিনি জানান, মানের প্রতিই বেশি মনোযোগ দেওয়া হয়েছে। খাবারের মান নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে আছেন টনি খান।
আছে বেয়ারনেইজ স্টেক, দাম ৫১৫ টাকা। শাটার মাশরুম স্টেক পাবেন ৫৩৫ টাকায়। কাজুন স্টেকের দাম ৫শ’ টাকা। বার-বি-কিউ চিকের স্টেক মিলবে ৪৮৫ টাকায়। পাকিস্তান থেকে উপকরণ সংগ্রহ করে হাতে বানানো হয় স্টেকের মশলাগুলো।
কাবাবের মধ্যে বেশি চলে বিফ বটি ও চিকেন মালাই বটি। দুই শিক বিফ বটির দাম ৩২৫ টাকা আর দুই শিক চিকেন মালাই বটি পাবেন ২৭৫ টাকায়। দুটো খাবারের সঙ্গেই থাকে রাইতা ও তেঁতুল চাটনি। এছাড়া প্রন শিক পাওয়া যাবে ৬শ’ টাকায়। দুই শিকে থাকে ১০টি প্রন।
খাবারের ডেকোরেশনের দিকে বিশেষ মনোযোগ দিয়েছে এই রেস্তোরাঁ। সব পদের সঙ্গেই পাওয়া যাবে গাজর কেটে তৈরি বিভিন্ন ধরনের ফুল, এমনকি আইফেল টাওয়ারও।
ইভান বলেন, “শুধুমাত্র খাবার ডেকোরশনের জন্যই আলাদা একজন কর্মচারি নিয়োগ করেছি আমরা।”
মেন্যুর খাবারগুলো ছাড়াও ভোজন রসিকদের জন্য ‘ওপেন কিচেন’ সুবিধা থাকছে ডি’স্ম্যাকে।
পানীয়র ভিন্নতাও চোখে পড়ার মতো। আছে চার ধরনের মিল্ক শেইক। আট ধরনের মকটেইল। তিন ধরনের সোডা। চার ধরনের চা। আর কফি তো থাকছেই।
কফি বিন আসে কফি গ্লোরি থেকে আর কফি বানানোর জন্য বারিস্তাও নিয়োগ করা হয়েছে।
পানীয়গুলোর নাম বেশ মজার। বাবলি ব্লু, ব্লু ওশান, অ্যাটোমিক ক্যাট ইত্যাদি।
ইভান বলেন, “আমাদের সিগনেচার ড্রিংকসের নাম ব্লাডি কিস। ২২৫ টাকার এই ড্রিংকসে খাকছে ব্লাড অরেঞ্জ সিরাপ, লেমন সিরাপ, স্প্রাইট এবং বরফ।”