পেটপূজার নতুন জায়গায়, মিলবে খাবার সস্তায়।
Published : 23 Aug 2015, 04:34 PM
রাজধানীর বারিধারা বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার তিনশ ফিট নামে পরিচিত নতুন সড়কের কথা অনেকেই জানেন। তবে এই এলাকায় অল্প কিছুদিনে গড়ে ওঠা খাবারপাড়ার খবর হয়তো এখনও অনেকে কানে পৌঁছেনি।
ছোট্ট এই খাবারপাড়া সম্পর্কে আগে থেকে না জানলে, বাইরে থেকে খুঁজে পাওয়ার কোনো উপায়ই রাখেননি এখানকার দোকানীরা।
দ্বিতীয় বসুন্ধরা কনভেনশন সেন্টারকে হাতের বামে রেখে সামনে এগিয়ে গেলে হাতের বামে চোখে পড়বে কাজী ফুড আইল্যান্ড নামের একটি স্থাপনা। প্রধান সড়ক থেকে নেমে কাঠের সাঁকো পার হয়ে এই স্থাপনায় প্রবেশ করলে মিলবে ইংরেজি ‘ইউ’ আকৃতির একটি মার্কেট। আর মাঝের খোলা জায়গায় দুইসারিতে সাজানো চেয়ার-টেবিল।
নতুন এই খাবারপাড়ায় বর্তমান পরিবার সংখ্যা সাত। এদের মধ্যে সবচেয়ে পুরানো পরিবার দুটি হল খানা’স এবং ক্যাফে সিক্সটিন।
খানা’সয়ের ম্যানেজার দিপু জানালেন, “এই খাবারপাড়ার পরিচিতি এসেছে স্ট্রিট বিবিকিউ নামের রেস্তোরাঁ থেকে। তবে সেটা এখন আর নেই।”
মাঝখানের চেয়ার টেবিলগুলো সব রেস্তোরাঁর ‘সাধারণ’ উঠান। সবমিলিয়ে শতাধিক মানুষের বসার ব্যবস্থা আছে এখানে। আপাতত ওয়াইফাই ব্যবস্থা নেই। ক্রেতাদের একটি বড় অংশ হল আশপাশের বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা। এছাড়াও এলাকাবাসী এবং তিনশ ফিট চওড়া সড়ক দেখতে আসা মানুষগুলোতো আছেই।
সবার আগে খোলা হয় দ্য ডেলি, দুপুর ১টায়। তবে অন্যান্যগুলো খোলা হয় বিকেল ৪টা থেকে। ভিড় শুরু হয় ৬টার পর। আর খাবারপাড়া নীরব হয় রাত ১০টায়।
খানা’স
এই খাবারপাড়ার সম্ভবত সবচেয়ে জনপ্রিয় রেস্তোরাঁ খানা’স। তবে মেন্যুতে আছে মাত্র পাঁচটি পদ।
ম্যানেজার দিপু বলেন, “চলতি বছরের ১৪ এপ্রিল থেকে শুরু করি আমরা। খানা’সয়ের উৎপত্তি আন্ডে খানা নামক কার্ট থেকে। রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ৭,৮টি কার্ট আছে আন্ডে খানার।”
ক্যাফে সিক্সটিন
“রান্নার প্রতি আগ্রহ এবং স্কুলজীবনের বন্ধুদের একত্র করার উদ্দেশ্যেই বন্ধুদের নিয়ে এই রেস্তোরাঁ চালু করেছি।”- এমনটাই জানালেন এই রেস্তোরাঁর মালিকদের মধ্যে একজন ফাইজুর রহমান রিয়েল।
মূলত পিৎজা এবং পাস্তা মিলবে এই রেস্তোরাঁয়। বোলোনিজ, সিসিলি, আমিগো, ফোর সিজনস, মার্গারিতা ইত্যাদি মিলিয়ে মোট ১৬ ধরনের পিৎজা আছে।
সবগুলো পিৎজাই ছোট, মাঝারি এবং ফ্যামিলি এই তিন আকারে ভাগ করা হয়েছে। আকারভেদে দাম পড়বে ২২০ টাকা থেকে ৬শ’ টাকা পর্যন্ত।
পাস্তা মিলবে তিনধরনের। দাম ১২০ থেকে ২শ’ টাকা। শর্মা ৭০ থেকে ১৩০ টাকা। চকলেট কফি ৪৫ টাকা, আইসক্রিম কফি ১শ’ টাকা এবং হট কফি ৪০ টাকা।
রিয়েল বলেন, “জনপ্রিয় আইটেমগুলোর মধ্যে আছে মেক্সিকান হট পিৎজা এবং পাস্তা।”
রেস্তোরাঁর কর্ণধার রেদওয়ানুল হক বলেন, “জুলাই মাসের ১০ তারিখে চালু করেছি আমরা।”
রেস্তোরাঁর নাম সম্পর্কে তিনি বলেন, “আজকালকার মানুষ চিজ খেতে অনেক পছন্দ করেন। আর বেশিরভাগ খাবারেই এটি ব্যবহার করা হয়। আমাদের খাবারগুলো তৈরিতে এই চিজ বেইক করি, গ্রিল করি। একারণেই এই নাম দেওয়া।”
মেন্যুতে আছে লা চিকজ পিৎজা, দাম ৩৫০ টাকা। পাস্তায় আছে ওভেন বেইকড সালসাদা, দাম ১৪০ টাকা। হালকা খাবারের মধ্যে আছে কাটলেট উইথ ফ্রেঞ্চ ফ্রাই এবং স্প্রিং রোল।
স্মোকি বোনস
রেস্তোরাঁর কর্ণধার রাসেল আহমেদ বলেন, “অনেকদিন থেকেই রেস্তোরাঁ দেওয়ার ইচ্ছা ছিল। এই এলাকায় ঘুরতে এসে জায়গাটা পছন্দ হওয়া আর রেস্তোরাঁ খোলার আগ্রহ থেকেই দুই বন্ধু মিলে এবছর ৩১ জুলাই থেকে শুরু করি। প্রথমে শুধুবার-বি-কিউ করার ইচ্ছা ছিল। পরে মাছের বার-বি-কিউ করার ধারনাটা আসে।”
পাঁচ ধরনের মাছের বার-বি-কিউ আছে এখানে। তেলাপিয়া ১৫০ টাকা, কোরাল ও টুনা ১৯৫ টাকা, চিংড়ি ২২৫ টাকা আর রূপচাঁদা ২৪০ টাকা।
চিকেন বার-বি-কিউ পায়ের মাংস নিলে ১১০ টাকা আর বুকের মাংস ১২০ টাকা।
এছাড়াও আছে সাত ধরনের সেট মেন্যু, দাম ১১০ থেকে ২৬০ টাকার মধ্যে।
বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় ৩০ টাকার বিনিময়ে হোম ডেলিভারি ব্যবস্থা আছে।
দ্য ডেলি
৪০টিরও বেশি পদ আছে তাদের মেন্যুতে। শুধুমাত্র বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার মধ্যে হোম ডেলিভারি ব্যবস্থা আছে। তবে চার্জ গুনতে হবে ৫০ টাকা।
রেস্তোরাঁর কর্ণধার সৈয়দ ইয়ামানী বলেন, “এ বছরের ২৬ জুলাই যাত্রা শুরু করি আমরা। আইটেম বিভিন্ন ধরনের থাকলেও স্যান্ডউইচের উপরই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি। ব্যবহার করছি ইউরোপিয়ান রেসিপি।”
আরও বলেন “আমাদের স্যান্ডউইচ, মকটেইল এবং মিল্কশেইকের চাহিদা বেশি। এছাড়াও আছে নুডুলস, সালাদ, আইসক্রিম, ফ্রুট সালাদ, চা, কফি ইত্যাদি।”
দ্য ডেলিতে মিলবে তিন ধরনের সাব স্যান্ডউইচ, দাম ৮০ টাকা। হোয়াইট ব্রেড স্যান্ডউইচ আছে চার ধরনের, দাম ৬০ থেকে ১২০ টাকা। নুডুলস ৬০ থেকে ৭৫ টাকা। গ্রিক সালাদ পাওয়া যাবে ২শ’ টাকায়। ডেজার্টে আছে বানানা স্প্লিট, আইসক্রিম কিংবা ফ্রুট সালাদ, দাম ১শ’ টাকা। মকটেইল আর মিল্কশেইকের দাম ৭৫ টাকা।
মুরগির বার-বি-কিউ আর পেতা নান মিলবে এখানে। এক টুকরা বার-বি-কিউ এবং একটি নানের মূল্য ১১০টাকা। শুধু বার-বি-কিউয়ের দাম ১শ’ টাকা। আর পেতা নানরুটির মূল্য ২০ টাকা। চারটি বার-বি-কিউ উইঙ্গস মিলবে ৪০ টাকায়। এছাড়াও আছে গাজরের জুস।
আর. কে ফ্রাইড চিকেন
কাজী ফুড আইল্যান্ডে ঢুকেই হাতের বামে প্রথম এই দোকানে মিলবে ফ্রাইড চিকেন, ফ্রাইড রাইস, চিজ বার্গার, শিক, বার-বি-কিউ চিকেন, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই ইত্যাদি। মোট ২০ পদের খাবার আছে তাদের। দাম ৫০ থেকে ২শ’ টাকা মধ্যে।
ছবি: মাহমুদুল হাসান মেহরাজ।