দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে নোংরা টয়লেটে যাওয়া; সাবান আর মাসিক ব্যবস্থাপনা তো দূরের কথা, পানিও নেই। এর বিপরীতে ছাত্র-ছাত্রীর আলাদা স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট আর মেয়েদের জন্য মাসিকের সুন্দর ব্যবস্থাপনা হয়েছে রংপুর বিভাগের ৬৪ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে।
Published : 19 Jul 2017, 09:47 AM
এমনই একটি প্রতিষ্ঠান রংপুরের তারাগঞ্জের বরাতী উচ্চ বিদ্যালয়; যেখানে কেবল দুটি পৃথক নোংরা টয়লেটের জায়গায় নির্মিত হয়েছে পানি ও পর্যাপ্ত আলোর সুবিধার পাকা দালান। ছাত্রীদের জন্য নির্মিত টয়লেটে মাসিক ব্যবস্থাপনার সঙ্গে ভেতরে রাখা হয়েছে বসার ব্যবস্থাও।
এমন পরিবর্তনে খুশি স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা, যেখানে ৬২৭ শিক্ষার্থীর মধ্যে অর্ধেকের বেশিই ছাত্রী।
স্কুলের সহকারী গ্রন্থাগারিক মমতা রায় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আগের পরিস্থিতি বললে তো এটা স্বপ্ন। স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেটের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বসার জায়গার সুন্দর জায়গা আছে। নোংরা না করে পরিচ্ছন্নই রাখছে সবাই।”
‘ওয়াশ ইন স্কুল’ প্রকল্পের আওতায় রংপুর বিভাগের সব কটি উপজেলায় অন্তত একটি করে আধুনিক টয়লেট নির্মাণ করেছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক উন্নয়ন সংস্থা ওয়াটারএইড।
এই কাজে স্থানীয়ভাবে তাদের সহযোগিতা দেয় রংপুর বিভাগেরই চারটি উন্নয়ন সংস্থা ইএসডিও, সলিডারিটি, এমজেএসকেএস ও এসকেএস।
সম্প্রতি স্কুল প্রাঙ্গণে কথা হয় তারাগঞ্জের বরাতী উচ্চ বিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারিক মমতা রায়ের সঙ্গে; স্কুলের টয়লেটে ব্যবস্থাপনা থাকায় মাসিকের কারণে বিদ্যালয়ে ছাত্রীদের অনুপস্থিতির পরিমাণ শূন্যের ঘরে নেমে এসেছে বলে জানান তিনি।
মমতার কথার প্রতিধ্বনি পাওয়া যায় স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রী নুসরাতের কথায়ও; বিদ্যালয় প্রাঙ্গণের টয়লেট ভালো হওয়ায় খুশি তিনিও।
নুসরাত বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমাদের ভাবনার মধ্যেও ছিল না টয়লেট এত সুন্দর হতে পারে! আগে লাইন ধরে টয়লেটে যাওয়া লাগত, সেটাও আর নেই। অসুস্থ হলে স্কুল থেকে ছুটি নিয়ে যেতে হয় না।”
কয়েকটি কক্ষের টয়লেট পেয়ে নবম শ্রেণির ছাত্র আতিকুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “একটা মাত্র টয়লেট ছিল। ক্লাস শেষে বা টিফিনের সময় সেখানে ভিড় লেগে থাকত। ছাত্রীরাও লাইনে থাকায় আমাদের বেশি অসুবিধায় পড়তে হত। এখন আগের কষ্ট আর নাই।”
পরিসংখ্যান কী বলে...
বাংলাদেশ ন্যাশনাল হাইজিন বেইজলাইন সার্ভে ২০১৪ অনুযায়ী
>> দেশের স্কুলগুলোর তিন ভাগের দুইভাগ টয়লেটের ভেতরে বা কাছাকাছি সাবান বা পানির ব্যবস্থা নেই।
>> ১৮৭ জনের জন্য একটি মাত্র টয়লেট, যেগুলোর ৪৫শতাংশ নানা কারণে তালাবদ্ধ থাকে।
>> মাত্র ২২ শতাংশ স্কুলে মেয়েদের জন্য আলাদা টয়লেট আছে, যার কোনটিরই মাসিক ব্যবস্থাপনার ব্যবস্থা নেই।
>> মাসিক চলাকালীন ৪০ শতাংশ স্কুলছাত্রী গড়ে মাসে ৩ দিন স্কুলে অনুপস্থিত থাকে।
>> মাত্র ৬ শতাংশ স্কুলে মাসিক সম্পর্কে পড়ানো হয়।
>> ৩১ শতাংশ স্কুলছাত্রী মনে করে, মাসিকের কারণে স্কুলে তাদের স্বাভাবিক লেখাপড়ার ব্যাঘাত ঘটে।
>> ৮৬ শতাংশ স্কুলছাত্রী মাসিকের সময় পুরনো কাপড় ব্যবহার করে।
>> মাত্র ১২ শতাংশ স্কুলছাত্রী মাসিকের সময় ব্যবহৃত কাপড় পরিষ্কার পানি ও সাবান দিয়ে ধোয় এবং শুকিয়ে নেয়।
>> প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না থাকায় ৮৬ শতাংশ স্কুলছাত্রী মাসিকের সময় স্কুলে তাদের ব্যবহৃত কাপড় বা স্যানিটারি প্যাড বদলাতে পারে না।
এর ফলে আড়াইশ’ শিক্ষক-শিক্ষার্থীর ভোগান্তির অবসান হয়েছে বলে জানান প্রতিষ্ঠানের সুপার আবু সালেহ শেখ মো. জিকরুল ইসলাম; টয়লেটকে পরিষ্কার রাখার কাজ সবাই মিলে করছে বলে জানান তিনি।
জিকরুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “দুই চেম্বারের টয়লেট ছিল আগে আমাদের। এখন সেখানে বড় আকারের টয়লেট হয়েছে। রিফ্রেশ রুম, সবার জায়গা, বেসিন, র্যাক সবই আছে এর ভেতরে। আলাদা যে মাসিক ব্যবস্থাপনা ছিল, সেটা তো আগে কল্পনাও করতাম না আমরা।”
মাসিক ব্যবস্থাপনার জন্য ন্যাপকিন, প্যাডসহ বিভিন্ন জিনিস থাকায় ছাত্রীরা অনেক ভোগান্তি থেকে মুক্ত হয়েছে বলে জানান মাদ্রাসার শিক্ষক রুমানা আক্তার।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আগে প্রতিনিধি দুই-তিনজন করে ছাত্রীকে ক্লাস চলাবস্থায় ছুটি দেওয়া লাগত। যারা ছুটি নিয়ে গিয়ে ৪-৫ দিন মাদ্রাসায় আসতে পারত না। এখন সে অবস্থা পাল্টেছে।”
অভিভূত ডেপুটি স্পিকার
সম্প্রতি রংপুর তারাগঞ্জের ও/এ দ্বিমুখী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে নতুন নির্মিত টয়লেট পরিদর্শনে গিয়ে নিজে অভিভূত হওয়ার কথা জানান ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া।
পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “আমি সত্যি অভিভূত হয়েছি। আমার এলাকাতে এই রকম স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা হয়েছে।”
স্বাস্থ্যসম্মতের টয়লেটের সঙ্গে বিশুদ্ধ খাবার পানির ব্যবস্থায় সন্তোষ জানালেও প্রতিবন্ধীদের সুবিধায় হাইকমোডের ব্যবস্থা রাখার পরামর্শ দেন ডেপুটি স্পিকার।
“তারা এখন স্কুলে একজন থাকুক, কিংবা ভবিষ্যতে আসুক, ব্যবস্থাটা করে রাখতে হবে।”
আধুনিক টয়লেট পাওয়া ৬৪টির বাইরে বাকিদের অবস্থা খারাপ বলে জানিয়েছেন নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ওয়াটারএইডের কর্মকর্তারা; সরকারি গবেষণায়ও উঠে এসেছে এমন তথ্য।
তেমনই একটি রংপুরে তারাগঞ্জের নতুন চিকলী বাজারের ফাজিলপুর দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়; ছাত্র ও ছাত্রীদের জন্য পৃথক টয়লেট থাকলেও সেটার অবস্থা অনেকটা নাজুক।
নোংরা পরিবেশের এই টয়লেটের একটির ভেতরে আগে নলকূপ থাকলেও দীর্ঘদিন নষ্ট পড়ে আছে; দুই টয়লেটের কোনোটিতে পানির ব্যবস্থা না থাকায় বাইরের নলকূপ থেকে পানি ব্যবহার করতে হয় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক আমিনুল ইসলাম সরকার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এই টয়লেট দুটি কোনোটি স্বাস্থ্যসম্মত না, পরিবর্তন দরকার। আমরা সুইপার দিয়ে পরিষ্কার করার চেষ্টা করি। কিন্তু এত অধিক সংখ্যক শিক্ষার্থীর কারণে সেটা পরিষ্কার রাখা কতটুকু সম্ভব?”
স্কুলের মোট ৬৬২ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ৩৬২ জন ছাত্রীকে এত অল্প জায়গার কারণে বেশি প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হতে হয় বলে জানান তিনি।
“তাদের কমনরুম দিতে হয়, তাদের স্বাস্থ্যকর টয়লেট দিতে হয়। কোনোটির ব্যবস্থা আমরা করতে পারি নাই।”
স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট না থাকায় ভোগান্তির মুখে পড়ার কথা জানালেন স্কুলটির দশম শ্রেণির ছাত্রী সান্ত্বনা আক্তার; গ্রামীণ এলাকার এই স্কুলে সরকার নজর নেই বলেও ক্ষোভ ঝরে তার কণ্ঠে।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট পাই না। যা আছে তাতে লাইন ধরে যেতে হয়। লাইন ধরে গিয়ে দেখতে হয়, ভেতরে পানি নাই। দেখা যায়, বাইরে থেকে কোনোমতে পানি নিয়ে গিয়ে ভালোমতো পরিষ্কার না করে সেই হাতে টিফিন খাই আমরা।”
মাসিকের সময় এই সমস্যার সম্মুখীন বেশি হতে হয় বলে জানান একই শ্রেণির ছাত্রী শিরীন আক্তার; নিরূপায় হয়ে ক্লাস অনুপস্থিত হওয়ার কথা বলেন তিনি।
>> ৫১ শতাংশ স্কুলছাত্রী মাসিকের সময় স্যানিটারি প্যাড ব্যবহার করে।
>> ৩৪ শতাংশ স্কুলছাত্রী স্কুল চলাকালীন সময়ে স্কুলেই প্যাড বা কাপড় বদলায়।
>> ৮৪ শতাংশ স্কুলছাত্রী তাদের স্কুল ল্যাট্রিনের মধ্যে প্রশস্ত জায়গা, পর্যাপ্ত আলো এবং ব্যবহৃত প্যাড বা কাপড় ফেলার মতো ব্যবস্থা আছে বলে উল্লেখ করেছে।
>> ৭৯ শতাংশ স্কুলছাত্রী মনে করে স্কুলে মাসিক বিষয়ে আরও আলোচনা বা শিক্ষার ব্যবস্থা থাকা উচিত।
>> ৩২ শতাংশ স্কুলছাত্রী বলেছে, স্কুলে নারী শিক্ষকেরা পাঠ্যসূচির অন্তর্ভুক্ত মাসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক অধ্যায়গুলো নিয়মিত পড়ান।
অস্বাস্থ্যকর টয়লেটের সঙ্গে নিরাপদ পানি না থাকার দুঃখ আছে স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র মাজেদুল ইসলামের মনে; টয়লেটে বদনা সংকটের কথাও জানায় সে।
নেকির হাট সৈয়দপুর দাখিল মাদ্রাসার ২৪৭ শিক্ষার্থীর জন্য আর তাদের শিক্ষকদের জন্য আছে মাত্র একটি টয়লেটের ব্যবস্থা; দুটির একটি দীর্ঘদিন ধরে নষ্ট থাকায় এখন তালাবদ্ধ।
নোংরা টয়লেট ছাত্রীদের বেশি যন্ত্রণা দেয় বলে জানায় মাদ্রাসার সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী রোমানা আক্তার; অনেক সময় লাইনে দাঁড়ানো অবস্থায় শিক্ষক এলে পড়তে হয় বাড়তি বিড়ম্বনায়।
রোমানা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলে, “আলাদা ব্যবস্থাতো নাই। বাধ্য হয়ে সবাই লাইন ধরে একই জায়গায় যায়। ভেতরে ব্যবস্থা না থাকায় বাইরের নলকূপ থেকে নিতে হয় পানি। খাওয়ার পানিও সেখানে।”
এভাবে ছাত্র-ছাত্রী লাইনে দাঁড়ানোর বিড়ম্বনায় ফেলে দশম শ্রেণির ছাত্র মোহাম্মদ রুবেল হোসেনকেও; টয়লেটে যেতে এভাবে ছাত্র-ছাত্রীদের লাইনে দাঁড়ানো কষ্ট দেয় তাকে।
শিক্ষার্থীদের, বিশেষ করে ছাত্রীদের ঋতুকালীন যন্ত্রণা ও ক্লাস অনুপস্থিতি কাছ থেকে দেখেন প্রতিষ্ঠানের একমাত্র নারী শিক্ষক খালেদা বেগম। ওই সময়টাতে ছাত্রীদের ভালো ব্যবস্থাপনা দিতে না পারায় মনোকষ্টের কথা উঠে আসে তার বক্তব্যে।
খালেদা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মেয়েদের জন্য কোনো আলাদা ব্যবস্থা নাই। মাসিকের সময় দেখা যায়, তারা ছুটি নিয়ে চলে যাচ্ছে। এতে তাদের পড়ালেখায় বড় ধরনের ব্যাঘাত ঘটে।”
রংপুর বিভাগের জেলাগুলোতে নির্মিত স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট নির্মাণের খরচ ওয়াটারএইড বহন করলেও সেটার ব্যবস্থাপনার খরচ স্কুল কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে নির্বাহের কথা জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা।
ওয়াটারএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর খায়রুল ইসলাম বলেন, “আমরা প্রথমে নির্মাণের সময় ১০ থেকে ২০ শতাংশ স্কুল ম্যানেজমেন্ট থেকে নিয়েছি। সে টাকাটা নিয়ে আমরা নির্মাণে খরচ করে ফেলিনি। ওইখানে আমরা তহবিল রেখে আসছি। যাতে ওই তহবিলটা ব্যবহার করে ক্লিনিং ও ব্যবস্থাপনার খরচ স্কুলই বহন করতে পারে।”
তারাগঞ্জের লক্ষ্মীপুর মাঝেরহাট বালিকা দাখিল মাদ্রাসার সুপার জিকরুল ইসলাম জানান, তার প্রতিষ্ঠানের টয়লেট নির্মাণ ব্যয় ৪ লাখ ৭৩ হাজার টাকা দিয়েছে ওয়াটারএইড। আর মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ ৯৬ হাজার টাকার রক্ষণাবেক্ষণ তহবিল গঠন করেছে।
“মাদ্রাসার একটি জমি থেকে ৪০ হাজার টাকা এসেছে। আর বাকি ৫৬ হাজার টাকা আমরা শিক্ষক ও কর্মচারীরা দিয়েছি।”
এভাবে ব্যবস্থাপনা ব্যয় স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে নেওয়া সারাদেশের জন্য মডেল হিসাবে দেখানোর চেষ্টা ওয়াটারএইডের ছিল বলে মন্তব্য করেন তিনি।
“এছাড়া বছরের কোনো একদিন শিক্ষার্থীরা একটি করে সাবান আনলে সাবানের ব্যবস্থাও সহজে হয়ে যাবে।”
খায়রুল ইসলাম বলেন, “এখন সরকারের প্রাথমিক শিক্ষার মানউন্নয়নের জন্য একটা বড় যে প্রোগ্রাম, আমরা এখন চেষ্টা করছি, যাতে সেটার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করানো যায়। আমরা যতটুকু জানি সরকারের মাধ্যমিক শিক্ষার উন্নয়ন প্রকল্পে এটা করার কথা ভাবছে। সেটা করলে, পাঁচ বছরের মধ্যে দেশের সব স্কুলের স্যানিটেশন এবং মেয়ের মাসিক ব্যবস্থাপনাসহ এ ধরনের স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট তৈরি সম্ভব হবে।”